প্রায় ২ মাস ২৩ দিন পর ভেসে উঠল রাঙ্গামাটির দৃষ্টিনন্দন পর্যটন ঝুলন্ত সেতু, পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

18

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ার ফলে ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ খ্যাত দৃষ্টিনন্দন পর্যটন ঝুলন্ত সেতু দীর্ঘ ২ মাস ২৩ দিন পর ভেসে উঠেছে। এতে পর্যটন কর্তৃপক্ষ সেতুতে আগের দেওয়া পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটকদের দেখায় যায়নি। স্থানীয় কিছু পর্যটক সেতুটিতে ঘুরতে দেখা গেছে।
কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় গত ২৪ জুলাই কাপ্তাই হ্রদে সেতুর পাটাতনে প্রায় ১ফুট পরিমাণ পানির নিচে তলিয়ে যায় রাঙ্গামাটি পর্যটনের দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতু। এতে চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাঙ্গামাটি পর্যটন কর্পোরেশন।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ২ মাস ২৩ দিন পর কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে থাকার পর আবারও ভেসে উঠে। আর সেতুটির উপরে পযটকদের ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে খুলে দেয়া হয়েছে এই ঝুলন্ত সেতু।
দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি হ্রদ, পাহাড় ও ঝর্ণার মিলন মেলার জেলা রাঙ্গামাটি। অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি বছর এই জেলায় দেশি-বিদেশি কয়েক লাখ পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন। রাঙ্গামাটিতে আগত পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটন করপোরেশনের দৃষ্টিনন্দন ঝুলন্ত সেতু। পাহাড়ের দুই দ্বীপ ও প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে আশির দশকে তৈরি করা হয় ঝুলন্ত সেতুটি। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রাঙ্গামাটিতে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ায় ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতু। সেতু ডুবে যাওয়ায় আসা দর্শনার্থীরা মন খারাপ করে চলে যেতে হয়।
পর্যটন বোট ঘাটের ইজারাদার রমজান আলী জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছরই সেতুটি হ্রদের পানিতে ডুবে যায়। এতে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যাওয়া ঝুলন্ত সেতু পারাপারের টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে করে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে। আর পর্যটক না আসায় প্রায় ২ মাসের অধিক সময় ধরে পর্যটকবাহী বোটগুলোর চালকরা ঘাটে বসে দিন পার করতে হয়েছে। এসময় বোট চালকরা অতি কষ্টে দিন পার করতে হয়েছে। তবে সেতুটি ডুবে থাকার কারনে ব্যবসায় যে ক্ষতি হয়েছে তা এবার শীত মৌসুমে পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে তিনি জানান।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক অলোক বিকাশ চাকমা জানান, এ বছরও হ্রদে পানি বাড়ায় চলতি বছরের ২৪ জুলাই সেতুটি ডুবে যায়। হ্রদের পানি কমায় ২ মাস ২৩ দিন ডুবে থাকার পর আবারও ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতুটি। আর সেতুটি আবারও ভেসে উঠায় সেতুটিতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, রং করাসহ প্রাথমিক মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে সেতুতে পর্যটক প্রবেশে দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে এবং পানি কমে যাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুটি আবারও ভেসে ওঠায় নতুন করে ব্যবসার পসার করা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়। কিন্তু ঝুলন্ত ব্রিজটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান করা হয়নি। তাই এই ঝুলন্ত ব্রিজটি প্রতি বছর যাতে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে না যায় এর জন্য নতুন করে সংস্কারের দাবি জানিয়েছে পর্যটকরা। আর প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে শীত মৌসুমে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে রাঙ্গামাটি তেমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।