আজ মহানবমী, সন্ধ্যা থেকেই মণ্ডপে-মণ্ডপে ছড়িয়ে পড়বে বিষাদের সুর

42

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
শারদীয় দূর্গোৎসবের চতুর্থ দিনে মহানবমী আজ। শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকেই মণ্ডপে-মণ্ডপে ছড়িয়ে পড়বে বিষাদের সুর। ভক্তদের জন্য দেবীকে প্রাণ ভরে দেখে নেওয়ার আজই শেষ দিন। এর পর আরেকটি বছরের অপেক্ষায় থাকবে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ।
পঞ্জিকানুযায়ী, রোববার (১৩ অক্টোবর) বিজয়া দশমির মধ্যদিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় এই মহোৎসব। আজ মহানবমী পূজা। অনেকের বিশ্বাস, মহানবমীর দিন হচ্ছে দেবী দুর্গাকে প্রাণ ভরে দেখে নেওয়ার ক্ষণ। এদিন অগ্নিকে প্রতীক করে সব দেবদেবীকে আহুতি দেওয়া হয়।
এদিন সন্ধ্যায় দেবীদুর্গার ‘মহাআরতি’ করা হয়। মহানবমীতে বলিদান ও নবমী হোমের রীতি রয়েছে। মূলত ‘সন্ধিপূজা’ শেষ হলে শুরু হয় মহানবমী। ১০৮টি পদ্মফুলে দেবীদুর্গার পূজা শেষে করা হবে অঞ্জলি নিবেদন ও প্রসাদ বিতরণ। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রাণের উৎসবে ভক্তদের মাঝে বইবে বিষাদের সুর। এদিনেই সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়ে থাকে পূজামণ্ডপগুলোতে।
রাঙ্গামাটি জেলায় এবছর ১০ উপজেলায় ৪৪টি পূজা মন্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সন্ধ্যায় সন্ধ্যারতির পর পর শুরু হয় দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড়। সনাতন সম্প্রদায় আর দর্শনার্থীরা মোমবাতি জ¦ালানোর মধ্যদিয়ে মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন। যাতে জগতের সকল মানুষ প্রানী কুল তাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সুস্থ জীবন লাভ করতে পারে।
এদিকে, পূজায় যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এর জন্য রাঙ্গামাটির প্রতিটি পূজা মন্ডপে পুলিশ ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকটি টিম টহর দিতে দেখা গেছে। আর প্রতিটি পূজা মন্ডবে তাদের নিজস্ব ভোলানটিয়ার কাজ করছে।
শ্রী শ্রী চন্ডী থেকে জানা যায়, এদিন দুর্গা রুদ্ররূপ (মা কালী) ধারণ করে মহিষাসুর এবং তার তিন যোদ্ধা চন্ড, মুন্ড এবং রক্তবিজকে হত্যা করেন। নবমী তিথি শুরুই হয় ‘সন্ধিপূজা’ দিয়ে। সন্ধিপূজা হয় অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর সূচনার প্রথম ২৪ মিনিট জুড়ে।
এসময় দেবী চামুন্ডার পূজা হয়। ১০৮টি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ১০৮টি পদ্মফুল নিবেদন করা হয় দেবীর চরণে। আর ঠিক এ কারণে পূজার মন্ত্রেও সেই বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হওয়া শারদীয় এ দুর্গোৎসবের শেষ হবে রোববার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে।
বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুসারে, এবার মহানবমী ও দশমী পূজা একই দিন পড়েছে। মহানবমী পূজা শেষে দশমী তিথি আরম্ভ হয়ে যাওয়ায় আজই দশমী পূজা সম্পন্ন হবে। সকাল ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে দুর্গাদেবীর মহানবমী কল্পারম্ভ ও বিহিতপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল ৮টা ২৬ মিনিটের মধ্যে দেবীদুর্গার দশমী বিহিত পূজা ও পূজান্তে দর্পণ বিসর্জন করা হবে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) অঞ্জলি, প্রার্থনা, বন্দনায় পালিত হয়েছে মহাঅষ্টমী ও সন্ধি পূজা। এদিনের মূল আকর্ষণ ছিল কুমারী পূজা। হিন্দু শাস্ত্র মতে, মানববন্দনা, নারীর সম্মান ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং ঈশ্বরের আরাধনাই কুমারী পূজার শিক্ষা।