॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় রাঙ্গামাটির পর্যটন সংশ্লিষ্ট ১০টি সংগঠন গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও চার দফা দাবিসহ রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খানের মাধ্যমে অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট দশটি সংগঠন হলো-রাঙ্গামাটি রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, হাউজ বোর্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, আবাসিক হোটেল মালিক সমিতি, পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতি লিমিটেড টোয়ার, পর্যটন ঘাট টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, রিজার্ভ বাজার ঘাট টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, সমতা ঘাট টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি ও রাঙ্গামাটি লঞ্চ মালিক সমিতি।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, আগামী ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করছি। আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে পর্যটকরা যখন দেশব্যাপী ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখনই এই ধরনের ঘোষণা ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে পার্বত্য জেলা সমূহে ভ্রমণ বিষয়ে অত্যন্ত নেতিবাচক বার্তা বহন করবে। ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের গড়ে ওঠা পর্যটন খাতকে আবারো খাদের কিনারায় নিয়ে যাবে। এই কারণে আমরা পেশা ও বিনিয়োগ বিষয়ে গভীর অনিশ্চয়তায় ভুগছি।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বতী সরকার অত্যন্ত সতর্কতাভাবে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে বিধায়, তিন পার্বত্য জেলায় সাধারণ পর্যটকদের ভ্রমণ নিরবিচ্ছিন্ন রাখা ও স্থানীয় পর্যটন উদ্যোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষার কথা বিবেচনায় আনা অত্যন্ত প্রয়োজন।
স্মারকলিপিতে ১০ সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ ৪ দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হচ্ছে- অনতিবিলম্বে ৩ পার্বত্য জেলা পর্যটকদের ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হোক। পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এ খাতের উদ্যোক্তাদের সাথে পরামর্শ গ্রহণ করা, পর্যটন খাতে আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য প্রণোদনা ব্যবস্থা গ্রহণ করা, পর্যটন খাতের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য অব্যাহতভাবে নিজের অর্থ সমাপ্ত নীতি ও আর্থিক সমর্থন সমুন্নত রাখা।
এদিকে, রাঙ্গামাটি রিসোর্ট ও নার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুমেধ চাকমা জানিয়েছেন, ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাঙ্গামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসন থেকে যে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এতে করে আমরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
তিনি বলেন, বিগত ছাত্র আন্দোলন ও সাম্প্রতিক সময়ে রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় আমাদের আর্থিকভাবে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে পর্যটকরা রাঙ্গামাটিতে ভ্রমণে আমাদের বেশ কিছু রিসোর্টে ১১ ও ১২ অক্টোবর অগ্রিম বুকিং ছিল। কিন্তু প্রশাসন থেকে ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করায় অনেক পর্যটককে অগ্রিম বুকিং এর টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। সুমেধ চাকমা আরো বলেন, এসব ঘটনায় আমার বার্গি রিসোর্টে প্রায় ২০ লাখ টাকার মত আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। তাই পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পর্যটক ভ্রমনের ব্যাপারে প্রশাসন থেকে বিবেচনায় আনা অত্যন্ত প্রয়োজন।