জরাজীর্ণ কাঠের ভাঙ্গা সিঁড়িতে চলছে রাঙ্গামাটি লঞ্চঘাটের চলাচল, ঝুঁকিতে যাত্রীরা

61

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটি জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে ৯টি উপজেলার একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে-নৌ-পথ। দেশের অভ্যন্তরীণ নৌ-পথে যাত্রী সাধারণের নিরাপদ নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে নৌ-পথ উন্নয়ন ও সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ। নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় ১৩টি লঞ্চ ঘাট ও ১৩টি পল্টুন রয়েছে। উক্ত লঞ্চ ঘাট ও পন্টুন ব্যবহারের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার ব্যবসায়িক প্রাণ কেন্দ্র রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা হতে ৯টি উপজেলায় প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল নৌপথে পরিবহন হয়ে থাকে।
জানা যায়, রাঙ্গামাটি সদর থেকে ৯টি উপজেলা যাত্রী সাধারণ লঞ্চে করে যাতায়াতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ও খাদ্য সামগ্রী পরিবহন করে থাকেন। যাত্রী সাধারণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল বিভিন্ন লঞ্চে করে পরিবহনের ক্ষেত্রে উক্ত ঘাট হতে পন্টুনে উঠা নামার জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ হতে প্রতি বছর কাঠের সিঁড়ি সরবরাহ করার বিধান থাকলেও বিগত ৩ বছর যাবৎ উক্ত লঞ্চ ঘাট সমুহে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কাঠের সিঁড়ি সরবরাহ করা হয়নি। এতে করে পল্টুনে উঠতে যাত্রী সাধারণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল বিভিন্ন লঞ্চে করে পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘাটগুলোতে ব্যবহার হচ্ছে পুরাতন ও নষ্ট কাঠের সিঁড়ি। এতে যাত্রী সাধারণের জীবন ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ কাঠের সিঁড়ি দিয়ে চলচল করতে হচ্ছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, রাঙ্গামাটি সদর রিজার্ভ বাজার হতে বিভিন্ন উপজেলা যাত্রী সাধারণ লঞ্চে ও ট্রলার যোগে যাতায়াতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল ও খাদ্য সামগ্রী পরিবহন করতে হয়। যাত্রী সাধারণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল বিভিন্ন লঞ্চে করে পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘাটগুলোতে ব্যবহার হচ্ছে জরাজীর্ণ পুরাতন ও নষ্ট কাঠের সিঁড়ি।
আর পন্টুনে উঠা নামার জন্য সরবরাহকৃত বর্তমানে কাঠের জরাজীর্ণ সিঁড়ি ও জোড়াতালি দিয়ে পন্টনে উঠা-নামা করছেন চলাচলকারী যাত্রী সাধারণ ও খাদ্য সামগ্রী মালামাল বহনকারী ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন জরাজীর্ণ এইসব সিঁড়ি দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাঙ্গামাটি হতে বিভিন্ন উপজেলায় চলাচলকারী লঞ্চে আসা-যাওয়া করছেন হাজারো মানুষ।
বরকল, লংগদু, রাঙ্গামাটি রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি, বিলাইছড়ি ও সুভলং ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নিয়ন্ত্রণাধীন পন্টুনে অধিকাংশ কাঠের সিঁড়ি জরাজীর্ণ ও জোড়াতালীতে ব্যবহৃত হচ্ছে। অধিকাংশ লঞ্চ ঘাটে কাঠের সিঁড়ি ভেঙ্গে গিয়ে ঝুঁকিতে পারাপার হচ্ছেন সাধারন শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ যাত্রী সাধারণেরা।
বরকলের উদ্দেশ্য আসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, এখন বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টির কারণে কাঠের সিঁড়িগুলো পিচিছল হয়ে যায়। আর কাঠের সিঁড়িগুলো অনেক পুরোনো। তাই এইসব সিঁড়িগুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারনে সাধারন যাত্রীরা ঝুঁকিতে পন্টুনে ও লঞ্চসহ বোটে উঠতে হচ্ছে। বিগত ৩ বছর আগে সরবরাহকৃত এই কাঠের সিঁড়ি জরাজীর্ণ ও জোড়াতালি দিয়ে ব্যবহারের ফলে যে কোন মুহুর্তে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছেন সাধারণ যাত্রীরা।
তাই অতি সত্বর ঘাটগুলিতে পন্টুনে উঠা কাঠের সিঁড়িগুলো সরিয়ে নতুন কাঠের সিঁড়ি স্থাপনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছে সাধারন যাত্রী, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।