॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত ও হ্রদের মাছে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দেশের সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলরাশি রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে চার মাস সাতদিন মাছ আহরণ বন্ধ থাকার পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হয়েছে মাছ আহরণ।
শনিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নামে জেলেরা। ৭২৫ বর্গ কিলোমিটারের হ্রদের বুক জুড়ে বসেছে জাল, জেলে ও নৌকার মেলা। এতে মধ্যরাত থেকে চিরচেনা রূপে ফিরছে কাপ্তাই হ্রদ। এতে কর্ম তৎপরতা শুরু হওয়ায় প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরেছে ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও জেলেদের মাঝে।
ভোর হতেই জেলেদের আহরণকৃত মাছ বোটে করে নিয়ে আসা হচ্ছে রাঙ্গামাটি জেলার সর্ববৃহৎ অবতরণ কেন্দ্র ফিসারি ঘাটে। এতে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকের হাঁকডাকে মূখর হয়ে উঠেছে পল্টুন। তবে এবার বৈরী আবহাওয়া ও কাপ্তাই হ্রদে পানি বেশি থাকা এবং আঞ্চলিক দলের চাঁদার কারণে হ্রদের একটি অংশে জেলেরা মাছ আহরণে না নামায় প্রথমদিনে প্রত্যাশিত মাছ আহরণ হয়নি।
মাছ ব্যবসায়ী ও জেলেরা জানান, ভোর ৬টায় রাঙ্গামাটির ৪টি ল্যান্ডিং ঘাটে মাছ আসতে শুরু করে। কিন্তু রাঙ্গামাটি জেলার আঞ্চলিক দলকে চাঁদা না দেয়ার কারণে অনেক এলাকায় মাছ শিকারে করতে পারেনি জেলেরা। এছাড়াও বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাছ আহরণে অনেক জায়গায় যেতে পারেনি। আগামী কিছু দিনের মধ্যে আবহাওয়া ভালো হলে মাছ আরো বেশী ধরা পড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত তারা।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটি বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, জেলেদের মাঝে আশঙ্কা থাকায় প্রথম দিনে মাছের অবতরণ কম। তবে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় বছরব্যাপী মাছ পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কার্প জাতীয় মাছের বংশবিস্তারের লক্ষ্যে প্রতিবছর তিন মাসের জন্য পহেলা মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ থাকে। তবে এবছর কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানির অভাবে মাছের বংশবিস্তার সুষ্ঠুভাবে না হওয়ায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ দুইদফা বাড়ানো হয়। এতে চার মাস সাতদিন পর হ্রদে মাছ আহরণে নামে জেলেরা।
রাঙ্গামাটির বিশাল এই কাপ্তাই হ্রদের মাছের উৎপদান বৃদ্ধি ও কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সারাবছর বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিং করা জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।