রাঙ্গামাটিতে এবারের বন্যায় কৃষিখাতে ক্ষতির পরিমাণ অর্ধকোটি টাকা

266

॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, বিলাইছড়ি, নানিয়াচর ও জুরাইছড়িতে এবারের বন্যায় ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি সার্ধিত হয়েছে। জেলার দুই হাজার ১০০ হেক্টর জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে এইসব এলাকার ক্ষতি হয়েছে রাস্তা-ঘাটের। পানি নামতে শুরু করায় সড়কে সর্বত্র ক্ষতের চিত্র দৃশ্যমান।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এবারের বন্যায় জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু এবং নানিয়ারচর উপজেলায় ফসলি জমির বেশি ক্ষতি হয়েছে। যা ক্ষতির পরিমাণ প্রায় অর্ধকোটি টাকা বলে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়। তবে বরকল, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়িতে বন্যা হলেও ফসলি জমির পরিমান কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, এবারের বন্যায় ১১ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে আউশ, আমন, গ্রীষ্মকালীন সবজি, আদা, হলুদসহ বেশকিছু ফসল। আর শাকসবজি পচে অন্তত ৪৪ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। তবে পানি পুরোপুরি নেমে গেলে এসব জমিতে বোরো ধান, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন ও টমেটোসহ শাকসবজি চাষাবাদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে চাষিদের সহায়তা করা হবে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, পানি কমতে শুরু করলেও জেলায় এখনো পানিবন্দি প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। ১০টি উপজেলায় ৯২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়া হলেও ৪৭ মেট্রিক টন বিতরণ করা সম্ভব হয়েছে। বাকিগুলো পানি কমলে বিতরণ করা হবে।
এদিকে রাঙ্গামাটি পৌর এলাকাসহ ৬ উপজেলায় বন্যাকবলিত অধিকাংশ এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে ধীরগতিতে পানি কমায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না খুব একটা। বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি কিছুটা নামলেও এখনো কিছু কিছু বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
রাঙ্গামাটির নানিয়ারচরের আমতলি, কমতলি ও মাছ কম্পানি এলাকার অনেক পরিবার এখনো পানিবিন্দ হয়ে আছে। এছাড়া ২নং টিলা কেতাব আলীর বাড়ি, ৫নং টিলার ফাতেমার বাড়িটি পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে। আর রাঙ্গামাটি পৌর শহরের রসুলপুর, শান্তিনগর আসামস্তি, ব্রাক্ষণটিলা, রাঙাপানি, হাসপাতাল এলাকা, পাবলিক হেলথ, রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি, পুরানবস্তিসহ কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা বন্যায় পানিতে প্লাবিত হয়ে আছে। হ্রদের নিম্নাঞ্চল তীরবর্তী আকস্মিক বন্যায় শহরতলী ও পৌর এলাকার জনদূর্ভোগ পড়েছে হাজারো মানুষ। বাসাবাড়িতে বন্যায় পানি প্রবেশ করায় রান্নাবান্নার কাজ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
এদিকে কাপ্তাই বাঁধ দিয়ে এখনো পানি ছাড়া অব্যাহত রাখা হয়েছে। কাপ্তাই কর্ণফুলী বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জানানো হয়, ১৬টি জলকপাট ‌‌দুই ফুট করে খোলা রয়েছে। হ্রদে বর্তমানে পানি রয়েছে ১০৮ ফুট মীনস সী লেভেল। হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় বর্তমানে কেন্দ্রটি থেকে ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।