বজ্রপাত থেকে রক্ষায় তিন পার্বত্য জেলায় জরুরি ভিত্তিতে অধিক হারে তাল গাছ ও বৃক্ষরোপণ প্রয়োজন

101

॥ এ কে এম মকসুদ আহমেদ ॥
বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে তিন পার্বত্য জেলায় জরুরী ভিত্তিতে অধিক হারে তালগাছ লাগানো গেলে বজ্রপাত থেকে কিছুটা রেহাই পাওয়া যাবে। উঁচু বৃক্ষ বজ্রপাত কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে তালগাছ বজ্রপাত থেকে রক্ষায় বেশি ভূমিকা রাখে। তালগাছে কার্বনের পরিমাণ বেশি থাকে। বিশেষ করে তালগাছের বাকলে কার্বনের উপস্থিতি বেশি। যা বজ্রপাতের প্রভাবকে কমিয়ে দিতে সক্ষম।
২০১৭ সালে ব্যাপক বজ্রপাতের অনেক লোক মারা গিয়েছিল এবং আহত হয়েছিল। পাহাড় ধসে অনেক ঘরবাড়ি বিলিন হয়ে গিয়েছিলো। পরবর্তীতে বজ্রপাতের পরিমাণ কমে গেলেও আবার অধিকারে বজ্রপাত শুরু হয়েছে এবং মানুষ মারা যাচ্ছে। আর আমাদের দেশে প্রতি বছর বজ্রপাতে অনেক মানুষের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই খবরগুলো যেন বেশি দেখতে পাওয়া যায়।
২০১৭ সালের ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সময় অত অধিক হারে বজ্রপাত হয়েছিল যে অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই সময়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মানজারুল হক সাহেব বজ্রপাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য দুই লাখেরও অধিক তাল বিচি চারার জন্য লাগিয়েছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে যে একটি চারাও উৎপাদিত হয়নি। ফলে তালের চারা লাগানো যায়নি কোন স্থানে। পরবর্তীতে উনি বদলি হয়ে যাওয়ার পর কেউ আর উদ্যোগ নেয়নি। বন বিভাগ ও এগিয়ে আসেনি। এতে করে বর্তমানে আমাদের চারপাশে তাল গাছের দেখা যাচ্ছে না। এক সময় রাস্তার দুই ধারে সারি সারি তালগাছের দেখা মিললেও, সেই দৃশ্য এখন খুব একটা চোখে পড়ে না।
তাই পরিবেশ ও প্রাকৃতিককে রক্ষার জন্য অধিক হারে তাল গাছ লাগানো ও বৃক্ষরোপণ করা জরুরি। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে রাস্তা দুই পাশে বৃক্ষরোপণ করা গেলে রাস্তা ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। সড়কে চলাচলরত সাধারণ মানুষরা গাছের ছায়া পাবে। অন্যদিকে রক্ষা পাবে পরিবেশ। তাই তালগাছ বা উঁচু পরিধির বৃক্ষ রোপণে সরকারের বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
অন্যদিকে, প্রতিবছর রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে যে বৃক্ষ মেলা হয়ে থাকে সেখানে বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা বিক্রি করা হয়। তবে এ বছর তেমন বেশি বিক্রি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। কেননা ঐ সময় প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তাই মানুষ গাছ ক্রয়ের জন্য বৃক্ষ মেলায় তেমন আসেনি। অন্যদিকে প্রচার-প্রচারণা ও সঠিকভাবে হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে।
তবে শহরের রিজার্ভ বাজার সিনিয়র মাদ্রাসা এলাকার নার্সারি থেকে বিপুল পরিমাণ আম লিচুসহ বিভিন্ন জাতের ফল, ঔষধী চারা ও ফুলের চারা বিক্রি হতে দেখা গেছে। এই মহৎ উদ্যোগ ধরে রাখা গেলে সকলেই উপকৃত হবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে।