॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
উন্নত মানের আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রূপান্তর হতে যাচ্ছে রাঙ্গামাটির চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতাল। আর উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালে সহসাই যোগ দিচ্ছেন ভারতের ব্যাঙ্গালোরে থেকে আসা একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আগামী দুই/এক মাসের মধ্যে এই বিষয়ে চুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগষ্ট) সকাল ১১টায় স্থানীয় একটি রেস্তোরায় কাপ্তাইয়ে সিসিএইচপি কাজের বার্ষিক অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে এ তথ্য জানান চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং।
তিনি বলেন, চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতাল সম্পূর্ণ জনগণের। আগামীতে জটিল রোগে আক্রান্ত ও অসহায় দুস্থ রোগীরা এখন হাতের নাগালেই পাবেন অভিজ্ঞ বিদেশী চিকিৎসক দ্বারা উন্নতমানের আধুনিক চিকিৎসা সেবা।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে কর্মশালার উদ্বোধন করেন। তিনি চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমকে আরো উন্নতির দিকে এগিয়ে নেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের কম্প্রিহেনসিভ কমিউনিটি হেলথ প্রোগ্রাম সিসিএইচপির বার্ষিক অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ বিষয়ে অবহিত করতে গণমাধ্যম ও সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ কর্মশালার আয়োজন করে। সিসিএইচপির প্রোগ্রাম ম্যানেজার বিজয় মার্মা চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতালের সার্বিক দিক সহ কম্প্রিহেনসিভ কমিউনিটি হেলথ প্রোগ্রাম সিসিএইচপির বার্ষিক অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ বিষয়ে আগামীর পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
কর্মশালায় চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কাপ্তাই, রাজস্থলী ও রাঙ্গুনীয়ায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মী ও মানকাধিকার ও সেচ্ছাসেবামূলক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন।
কর্মশালায় জানানো হয়, বর্তমানে হাসপাতালের উন্নয়নে বিদেশী দুটি সেবা সংস্থার সাথে চুক্তি রয়েছে। প্রতিবছর গরীব অসহায় রোগীদের জন্য দরিদ্র তহবিল থেকে সর্বাত্বক বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। এছাড়া হাসপাতালের নিজস্ব তহবিল থেকে কুষ্ঠ চিকিৎসা ও সেবা কেন্দ্রে অনুদান দেওয়া হয়।
কাপ্তাইয়ে ৫টি ও রাঙ্গুনিয়ায় ১টিসহ ৬টি ইউনিয়নে ৬২ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে কম্প্রিহেনসিভ কমিউনিটি হেলথ প্রোগ্রাম সিসিএইচপির কার্যক্রম চলমান আছে।
কমিউনিটি হেলথ প্রোগ্রামিং কার্যক্রম চালানো হয় এই হাসপাতালের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে বেসিক হেলথ ওয়ার্কাদের সাহায্যে মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করা, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে আগ্রহী করে তোলা, সিসি, ইউএইচসি বা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী রেফারেল নিশ্চিত করা, শিশুদের ইপিআই টিকা দানের ব্যাপারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা ও নিশ্চিত করা, গর্ভবতী মায়েদের এএনসি ও প্রসব পরবর্তী পিএনসি চেকআপ নিশ্চিত করা, ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধি, ম্যালেরিয়া স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা, পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিসমূহ সরবরাহ, লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা, স্যানিটেশন ও নিরাপদ পানি ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি করা। আগামীতে কাপ্তাইয়ের পাশাপাশি রাজস্থলী, বিলাইছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে কম্প্রিহেনসিভ কমিউনিটি হেলথ প্রোগ্রাম সম্প্রসারিত করা হবে। এতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সচেতনতাবৃদ্ধি, প্রতিবন্ধী সহায়তা, ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রনসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানানো হয়।