রাজস্থলীতে হঠাৎ করে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, হিমসিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা

18

॥ মোঃ আজগর আলী খান, রাজস্থলী ॥
রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলীতে হঠাৎ করে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। এই উপজেলায় গত কয়েকদিনে ৩১ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে রাজস্থলী উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে দিন যত যাচ্ছে গরমের সঙ্গে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তবে আশংকা করার কিছুই নেই। প্রায় প্রতি বছরই জুন-জুলাই মাসে পার্বত্য অঞ্চলে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর সংখ্যাও কম নয়।
রাজস্থলী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের মেঝে থেকে শুরু করে হাঁটার পথ, বারান্দা সবখানেই অস্থায়ী বিছানা পেতে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে মশা-মাছি এবং নোংরা পরিবেশের কারণে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রোগী এবং তাদের স্বজনরা।
রাজস্থলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা এলাকার এক রোগী শিশু মা বলেন, ‘গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে বাচ্চার পাতলা পায়খানা এবং বমি শুরু হয়। সদর হাসপাতালে আনার পর স্যালাইন দেওয়া হয়। সেই থেকে স্যালাইন চলছে। এখন শরীর কিছুটা ভালো। তবে হাসপাতালে কোনো বেড পাইনি, তাই বারান্দায় ফোম বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। তিনি আরো বলেন, স্যালাইন-ওষুধ হাসপাতালই থেকেই দেওয়া হচ্ছে। তবে এখানে মশা-মাছির উপদ্রব বেশি। চারদিকে দুর্গন্ধ আর প্রচণ্ড গরম, ভোগান্তির যেন শেষ নেই।’
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, গত ২ দিনে উপজেলায় ৩১ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৫/১৬ জন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। আর যারা আসছেন তাদের দ্রুত স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ডায়রিয়া রোগীদের জন্য যথেষ্ট স্যালাইন ও ঔষধ রয়েছে।
রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা, শিবলী সফিউল্লাহ বলেন, ‘গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিগত বছরগুলোতেও এভাবে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। এসব বিষয় মাথায় রেখে আমাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি রয়েছে। তবে সবাইকে খাবার ও পানির ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পরিস্থিতি এখনও আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। খাবার স্যালাইনসহ অন্যান্য ওষুধেরও পর্যাপ্ত মজুত আছে। ডায়রিয়া রোগী আসলেই রোগীকে তাৎক্ষণিক ঔষধপত্র দিয়ে প্রাথমিক ভাবে সুস্থ করে তুলছি।