রুমা ও থানচিতে সন্ত্রাস দমনে নামানো হয়েছে ৪টি অস্ত্র সজ্জিত সাঁজোয়া যান

21

॥ রুমা ও থানচি প্রতিনিধি ॥
বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতিসহ কেএনএফের একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় এবার নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। কেএনএফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে এরই মধ্যে দুই উপজেলায় বিশেষ সাঁজোয়া যান এপিসি আনা হয়েছে। যা দিয়ে এই দুই উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টহল দেবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এই সাঁজোয়া যান হচ্ছে যুদ্ধে ব্যবহৃত এক প্রকার অস্ত্র সজ্জিত যানবাহন, যা মূলত পদাতিক বাহিনীর যুদ্ধের ময়দানে আসা-যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়।
এ ব্যাপারে বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, রবিবার (৭ এপ্রিল) গভীর রাতে থানচিতে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে কেএনএফ’র ৩ সদস্যকে আটক করে। তাদের মধ্যে একজন ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। ব্যাংক ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে, সঙ্গে চালককেও আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, উপজেলাগুলোতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে চারটি সাঁজোয়া যান (এপিসি) আনা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় আরও বাড়ানো হবে। চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় এসব সাঁজোয়া যানগুলো রুমা-থানচি উপজেলায় ব্যবহার করা হবে।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত শনিবার বান্দরবানের রুমা উপজেলা পরিদর্শন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
পরিদর্শন শেষে তিনি জানান, সাম্প্রতিক ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে সেনা প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন। হামলার সঙ্গে জড়িতরা যদি দেশের বাইরেও থাকে তাদের ইন্টারপোলের সাহায্যে দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনায় রবিবার বান্দরবান আসেন সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ। এ সময় তিনি বেশ কিছু নির্দেশনা দেন।
এসময় তিনি বলেন, শান্তি আলোচনার ছত্রছায়ায় কেএনএফ দিনের পর দিন সন্ত্রাসীরা অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ তারা যে উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা করেছে সেটিকে সমন্বিতভাবে যৌথবাহিনী পরিচালনা মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রতিহত করা হবে বলে জানান সেনা প্রধান এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী পাহাড়ে অভিযানের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। দৃশ্যমান কিছু কার্যক্রম আপনারা দেখতে পাবেন।
এদিকে যৌথ অভিযানে আটক হয়েছেন রুমা, থানচি উপজেলায় হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত কেএনএফের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক চেওসিম বম (৫৫) ও কেএনএফ নেতা রোয়ান লিন বম (৫৫)।
র‌্যাব জানায়, রুয়াছড়ি উপজেলায় জুরভাং পাড়া, খামতাং পাড়া, পাইনক্ষিয়াং পাড়া এবং রৌনিন পাড়া এলাকাগুলো সশস্ত্র কেএনএফ সদস্যদের নেতৃত্ব দেন রোয়ান লিন বম। অন্যদিকে বম জঙ্গি নেতা নাথান বমের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে চেওসিম বমের। বান্দরবানের শারণ পাড়ার মৃত রোয়াল খুব বমের ছেলে চেওসিম।