থানচিতে আদর্শ মা হওয়ার ক্লান্তিহীন অগ্রযাত্রা মা “ত্র মারমা”

112

॥ থানচি প্রতিনিধি ॥
অল্প সময়ের ব্যবধানের ২ বার অগ্নিকান্ড স্বীকার হয়ে সকল সহায় সম্বল হাড়িয়ে নি:শ্ব হওয়ার পথে পরিবার পরিজন নিয়ে দু:শ্চিন্তা শেষ নেই। এমন পরিস্থিতির দরজা এসে দাড়ালেও কিন্তু হার মানতে রাজি নন। স্থানীয় স্বজন নিকট ও ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ক্লান্তিহীন পথ অধম প্রচেস্টায় উঠে দাঁড়ানো চেস্টায় একদিন সন্তানদের মানুষ করে সুশিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন বান্দরবানে থানচি উপজেলা সদরে এক মাত্র বাজারে সেলাই মেশিংনের চাক্কা ঘুড়িয়ে লক্ষ্য পৌছতে পরিবারের হাল ধরলেন “মা এ মারমা (৩৪)”।
স্বামী মংসিহ্লা মারমা স্বল্প শিক্ষিত চাঁন্দের গাড়ি চালিয়ে ছোট সংসারে ফুটফুটে দুইটি সন্তান একজন থানচি সরকারী মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনিতে অন্যজন মাতৃকোলে। বিবাহ বন্ধনের হওয়ার পর থেকে স্বামীর সাথে আলোচনা করে স্বপ্ন দেখেন একদিন আদর্শ মা হিসেবে সমাজের স্থান করে নেবো এবং প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত মেধা শ্রম কাজে লাগিয়ে বাস্তবায়ন করতে স্বামীর সহযোগীতা দুই জনের মনে মনে অঙ্গিকার করেন।
সম্প্রতি একান্ত স্বাক্ষাতকারের মা ত্র মারমা প্রতিবেদককে বলেন, হতদরিদ্র মা-বাবা পরিবারের নারী সন্তান হওয়া প্রাথমিক পর্যন্ত লেখা পড়া করার খুবই ইচ্ছে ছিল কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। দু:খের বেদনা নিয়ে ১৭ বছর পুর্ন হওয়ার পর কক্সবাজারে পরিচিত একটি টেইলার দোকানের ৬ মাসের সেলাই মেশিং প্রশিক্ষন শেষ করে বিয়ে পিড়িতে বসতে হয়েছে। বর্তমানে এক ছেলে এক মেয়েকে সুশিক্ষিত করে সমাজের আদর্শ মা হওয়া অক্লান্ত শ্রমের মধ্যদিয়ে স্বপ্ন গুনছেন মাত্র মারমা ৩৪। বান্দরবানে লামা উপজেলা রুপসী পাড়া ইউনিয়নের রুপসী পাড়ার বাসিন্দা জুমিয়া মংশৈহ্লা মারমা ও মাসানু মারমা তার বাবা মা। ২০১০ সালে একই জেলা থানচি উপজেলা বলিপাড়া ইউনিয়নের ক্রংক্ষ্যং পাড়া নিবাসী খ্যাবো মারমা ২য় সন্তান মংসিংহ্লা মারমা সাথে বিবাহ হয়। সে সময় মংসিহ্লা মারমা চট্টগ্রামের একটি পোষাক শিল্পের সামান্য বেতনের চাকুরী করেন। স্বপ্ন পুরনের লক্ষ্যে স্বামী চাকুরী বেতনের স্বল্প কিছু সঞ্চয় করে ২০১৮ সালে থানচি উপজেলা সদরে থানচি বাজারে একটি টিনসেট দোকান ভাড়া নেন। সেখানে গড়ে উঠেন সেলাই মেশিংনের কাজ শুরু করেন তাছাড়া কিছু কসমেটিক্স থামিন জাতীয় কাপর চোপর ও ক্রয় বিক্রয় করেন।
২০২০ সালে মহামারী করোনা ভাইরাস লকডাউন, একই বছরে ২৭ এপ্রিল বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ৫ লক্ষাধিক মালামাল ও নগদ অর্থ পুরে ছাই হয়ে যায়। সে সময় কিছু সঞ্চয় জমানো দিয়ে ফের ব্যবসা শুরু করেন। ২০২৩ সালে ২৭ শে মার্চ ফের থানচি বাজারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ৮ লক্ষাধিক মালামালসগ নগদ অর্থ পুরে ছাই হয়েছে। স্বামী আত্বীয় স্বজন ও ব্যাংক ঋণ নিয়ে একই বাজারে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের বাজার ফান্ডের আওতায় একটি প্লট ৫ বছর মেয়াদি ভাড়া নিয়ে ফের শুরু করেন সেলাই মেশিং এর কাজ।
মাএ মারমা বলেন, গত মে ২০২৩ সালে শুরু করে অদ্যবধি ৭ মাস অতিবাহিত হয়েছে। বর্তমানে দোকানে সব মিলিয়ে প্রতিদিন তিন হাজার টাকা আয় হয়েছে। চলতি মাসের দুর্গা পূজা ও প্রবারনা পুর্নিমায় নতুন কাপর চোপর সেলাই কাজের ব্যস্ত সময় কাটান। তিনি বলেন, সরকারী ভাবে কিছু ঋণ বা পৃস্তপোষকতা পেলে তার স্বপ্ন পুরনের বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উঠবো।