ব্যালট পেপার ছাপাতে কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে ২০ কোটি টাকার ৩ রঙের কাগজ নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

113

॥ কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাই ॥
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সমগ্র বাংলাদেশে ব্যাপক তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বর্তমানে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন তাঁরা পুনরায় প্রার্থীতা পাবার জন্য যার যার অবস্থান থেকে সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা ও লবিং করে যাচ্ছেন। আবার অনেক নতুন মুখ আগামী জাতীয় সংসদে নির্বাচনে প্রার্থী হতে বড় রাজনৈতিক দলের প্রধানদের দৃষ্টি আকর্ষনের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকে নিজ নিজ সংসদীয় আসনে গিয়ে এলাকাবাসী এবং ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
এই নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনও ব্যাপক কার্যক্রম শুরু করেছে। অচিরেই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে। আর তফসিল ঘোষণার পরই শুরু হবে নির্বাচনী ডামাডোল। নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য বড় রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে অনেককেই লবিং করতেও দেখা গেছে। তবে নির্বাচনের অন্যতম সরঞ্জাম হলো ব্যালট পেপর। এবারের জাতীয় নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য নির্বাচন কমিশন কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায় অবস্থিত কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে ১ হাজার ৬শ মেট্টিক টন কাগজ সংগ্রহ করছে বলে জানা গেছে। কেপিএম ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে চাহিদানুযায়ী কাগজ নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করতে শুরু করেছে। বিরআটিসি ট্রাক ভর্তি করে প্রতিদিন কেপিএম থেকে কাগজ নিয়ে ঢাকা যাচ্ছে।
কেপিএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম আনিসুজ্জামান বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে সাদা, লাল ও সবুজ তিন রঙের মোট ১৬শ মেট্টিক টন কাগজের চাহিদা দিয়েছে। উলে¬খিত কাগজের মূল্য ২০ কোটি টাকা। নির্বাচন কমিশনকে সময়মত কাগজ সরবরাহ করার জন্য কেপিএম কর্তৃপক্ষ দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। কাগজ উৎপাদনের জন্য কাঁচামাল হিসেবে বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় মন্ডও আনা হয়েছে। বর্তমানে কেপিএমে যে কাগজ উৎপন্ন হচ্ছে তার গুনগত মান অত্যন্ত ভালো ও টেকসই বলেও তিনি জানান।
কেপিএমের উৎপাদন বিভাগীয় প্রধান মোঃ মইদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৭৫ বছরের পুরাতন কারখানা হওয়া সত্বেও উন্নত মানের কাগজ উৎপন্ন করতে পারায় নির্বাচন কমিশন কর্ণফুলী পেপার মিল থেকেই কাগজ সংগ্রহ করছে। তবে একসাথে কেপিএম সব কাগজ সরবরাহ পারছেনা এবং সরবরাহ করা এই বিপুল পরিমান কাগজ নির্বাচন কমিশনও আপাতত কাজে লাগাতে পারবেনা। তফসিল ঘোষণা হবার পর সিডিউল অনুযায়ী যারা প্রার্থী হবেন এবং প্রার্থীরা কে কোন প্রতিক বরাদ্ধ পাবেন তার উপর নির্ভর করে ব্যালট পেপার ছাপানো হবে। কাজেই তফসিল ঘোষণার পর থেকেই পুরোদমে নির্বাচন কমিশনকে কাগজ সরবরাহ করা শুরু হবে বলে তিনি জানান।
কেপিএমের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, নানাবিধ প্রতিকুলতা থাকা সত্বেও সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারি এবং কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনকে চাহিদানুযায়ী কাগজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরবরাহ করতে অক্লান্ত পরীশ্রম করে যাচ্ছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কাগজ সরবরাহ করার সম্ভব হবে বলেও তিনি জানান।
কেপিএম সিবিএ সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক এবং সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, কারখানার সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারি ও কর্মকর্তা অত্যন্ত আনন্দিত যে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য নির্বাচন কমিশন কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে ১৬শ মেট্টিক টন কাগজের চাহিদা দিয়েছে। সিবিএ নের্তৃবৃন্দ বলেন, শুধু এবার নয় প্রতি বছরই নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনসহ উপজেলা নির্বাচন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচনসহ দেশের প্রতিটি নির্বাচনেই ব্যালট পেপার ছাপানোর জন্য নির্বাচন কমিশন কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করে আসছে।