নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে শহীদ মনিরের নামে হল করার দাবিতে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. প্রীতি প্রসূন বড়ুয়াকে স্মারকলিপি দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙ্গামাটি জেলা শাখা।
রবিবার (২৮ মে) সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙ্গামাটি জেলার সভাপতি মোঃ হাবীব আজম এর নেতৃত্বে স্মারকলিপিটি অধ্যক্ষ বরাররে দেওয়া হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি’র রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির স্মারকলিপিটি রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ গ্রহণ করেন।
এসময় অন্যান্য নেতৃবৃন্দদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পিসিসিপি রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক মোঃ শহিদুল ইসলাম, নানিয়ারচর উপজেলা পিসিসিপি’র সভাপতি মেহেরাজ হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মোশারফ রহমান প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ উল্লেখ করেন, ২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
সেই দিনটি রাঙ্গামাটিবাসীর জন্য যেমন আনন্দদায়ক ছিল, তেমনি দিনটি ছিল সমানভাবে বিভিষিকাময়। সেই দিনে মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন চলছিল অন্যদিকে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপা থেকে জেলা পরিষদ পর্যন্ত স্থানটি ছিল পাহাড়ী উগ্রবাদি সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও তাদের ছাত্র সংগঠন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ পিসিপি’র সন্ত্রাসীদের হিস্রতা আর উন্মত্ততার বিভিষিকাময় কেন্দ্র। কারণ সেদিন উগ্র পাহাড়ী একটি গোষ্ঠী চায়নি রাঙ্গামাটিতে মেডিকেল কলেজ হোক, তারা মেডিকেল কলেজ এর স্থাপন ও উদ্বোধনের বিরোধিতা করে রাঙ্গাামাটি শহরের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র হামলা শুরু করে।
সেদিন পিসিপি’র হিংস্র হামলায় তরুন যুবক মনিরের একটি তাজা প্রাণ ঝরে যায়, আহত হয় জামাল হোসেনসহ অসংখ্য সাধারণ বাঙালিরা। হিংসা হানাহানির রেশ ধরে পরিস্থিতি সামাল দিতে রাঙ্গামাটি জেলার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শহরে কারফিউ জারি করা হয়। তিনদিন রাঙ্গামাটি শহর ছিল নিরব নিস্তব্ধ এবং মৃত্যুপুরির মতো। মানুষ মেডিকেল কলেজ পাওয়ার সাথে সাথে কারফিউ দেখারও অভিজ্ঞতা অর্জন করে। এই ইতিহাস একদিন মানুষ ভুলে যাবে। ইতোমধ্যে অনেকই ভুলেও গেছেন। কিন্তু রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এবং থাকবে। সেদিন থেকেই দাবি উঠেছিলো রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাস অথবা হলরুম যেকোন একটি মরহুম মনিরের নামে করা হোক। কিন্তু সেই দাবি উপেক্ষিত করা হয়েছে।
আমাদের দাবি হলো এভাবে উপেক্ষিত যাতে আর করা না হয় এবং আমাদের চার দফা দাবি সমূহ মেনে নেওয়া হয়। অন্যথায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ পিসিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখা বিভিন্ন ধারাবাহিক কর্মসূচি আরো পালন করবে।
নিম্মে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি’র) রাঙ্গামাটি জেলা শাখার চার দফা দাবি সমূহ হলো-১। রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস দ্রুত করা। ২। রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাস করা হলে সেখানে শহীদ মনিরের নামে একটি ছাত্র হল করতে হবে। ৩। শহীদ মনিরের পরিবার থেকে যে কোন একজনকে মেডিকেল কলেজে সরকারি চাকরি দিতে হবে। ৪। রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার পিছনে বাঙালিদের অবদান তাই চাকরি ও ভর্তি ক্ষেত্রে রাঙ্গামাটির বাঙালিদের যাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।