শান্ত পাহাড়ে ভয়ংকর রূপে কেএনএফ

152

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামাঃ-শান্ত পাহাড়ে ধীরে ধীরে ভয়ংকর রূপে দেখা দিচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। নিজেড়ের অবস্থান শক্ত করে ভারী অস্ত্রের গর্জন শোনাতে শুরু করেছে কেএনএফের সশস্ত্র শাখা ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীরা। ত্রিদেশীয় (বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমার) দুর্গম সীমান্ত ব্যবহারের সুযোগ এবং ভারী অস্ত্র-সরঞ্জাম হাতে পেয়ে তারা নিজেদের এখন বেপরোয়া হিসেবেও জানান দিচ্ছে। কূটনৈতিক চ্যানেলেও তারা সক্রিয় হয়ে উঠার চেষ্টা করছে। পার্বত্য অঞ্চলের শান্তির লক্ষ্যে এবং ভূখন্ডের অখন্ডতার প্রশ্নে জিরো টলারেন্স নীতিতে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো সময়ের দাবীতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের দিক থেকেও চাপ সৃষ্টি করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
ইতিমধ্যে বান্দরবান জেলার থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে এ তিন উপজেলার সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে এ তিন উপজেলার লক্ষাধিক অধিবাসীকে। কেএনএফের ভয়ে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি দিয়েছে।
সর্বশেষ গত ৬ এপ্রিল ২০২৩ইং (বৃহস্পতিবার) বান্দরবান জেলাধীন রোয়াংছড়ি উপজেলার ১নং রোয়াংছড়ি সদর ইউপির খামতাং পাড়ায় প্রতিপক্ষ একটি সংগঠনের সাথে কেএনএফ এর গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ দল ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে ঘটনায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় নিহত ৮টি লাশের সন্ধান পান। নিহতরা সবাই কেএনএফ এর সদস্য বলে জানা গেছে। এই ঘটনার প্রতিপক্ষ জেএসএস সংস্কার না ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক সূত্র তা নিশ্চিত করে বলা যায়নি। তবে উদ্ধারকৃত লাশগুলো কেএনএফ সশস্ত্র দলের বলে জানা যায়। কেএনএফ সূত্র এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করলেও লাশগুলো তাদের নয় বলে জানিয়েছে। উদ্ধারকৃত লাশগুলোর মধ্যে সাতজনের নাম জানা গিয়েছে। তারা হলো- ভানু দু বম, সাং খুম, সান ফির থান বম, বয় রেম বম, জাহিম বম, লাল লিয়ান ঙাক বম ও লাল ঠা জার বম।
এদিকে গত ১২ মার্চ ২০২৩ইং দুপুরে বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে টহলরত সেনাবাহিনীর এক সদস্যকে (মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন) হত্যা এবং দুজনকে আহত করেছে কুকি সন্ত্রাসীরা। সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে বর্তমানে নতুন জঙ্গী সংগঠনকে মদদ দিয়ে দেশের অভ্যন্তরেও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে কেএনএফ। আধিপত্য দেখাতে পাহাড়ে সরকারি উন্নয়ন কাজেও বাধা সৃষ্টি করছে এবং একের পর এক খুন-জখম ও অপহরণের ঘটনা ঘটিয়ে ভয়ংকর পরিবেশ সৃষ্টি করে যাচ্ছে তারা। পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে কাজ করা গোয়েন্দা, বিশ্লেষক ও স্থানীয় পর্যায়ে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমান সময়ের দুর্ধষ জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সদস্যদের টাকার বিনিময়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও পাহাড়ি আস্তানায় ঠাঁই দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরির নীলনকশা আঁকে কেএনএফ তথা কুকি সন্ত্রাসীরা। এরপর গত বছরের অক্টোবর থেকে হিন্দাল শারক্বীয়া ও কুকি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। এ পর্যন্ত কেএনএফের ১৭ জন এবং হিন্দাল শারক্বীয়ার অন্তত ৬৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর অভিযানের কারণে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা এবং পাল্টা প্রতিশোধের অংশ হিসেবে পাহাড়ের গহিনে কেএনএ এবং হিন্দাল শারক্বীয়ার জঙ্গিরা একজোট হয়ে কাজ করছে বলেও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।
এ প্রসঙ্গে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রশীদ বলেন, কেএনএফ যেভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠছে তাতে নিঃসন্দেহে এদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। কেননা, কুকিদের এ ধরনের হামলা পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিবেশ পরিস্থিতিকেও আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে। যেহেতু বান্দরবান কেন্দ্রিক কেএনএফের তৎপরতা বেশি এবং সেখানে কিছু সুবিধাও পাচ্ছে তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো থেকে। পার্শ্ববর্তী দেশের সীমান্ত থেকেও সহযোগী সংগঠনগুলো কুকিদের সহযোগিতা দিচ্ছে। তারা মূলত ভৌগোলিক সীমান্তের সুযোগটি ব্যবহার করছে। র‌্যাব কেএনএফের আস্তানা থেকে বেশ কিছু জঙ্গিকে ও কেএনএফ সদস্যকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করেছে। সাধারণত কোনো একটি সফল অপারেশন হলে তার একটা প্রত্যাঘাত আসে, এটা সব দেশেই হয়। সেদিক থেকে কেএনএফ চোরাগুপ্তা হামলা চালাতে পারে। মূলত, ভূখন্ডের অখন্ডতায় কেএনএফসহ পাহাড়ের সব বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ‘টার্গেটেড অপারেশন’ চালাতে হবে। বাংলাদেশের মাটি থেকে এদের উচ্ছেদ করতে হবে।
বান্দরবানে স্থানীয় পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ সেখানকার মানুষ। তারমাঝে নতুন করে কেএনএফ দেশের পার্বত্য অঞ্চলকে আরও বেশি অশান্ত ও ভয়ংকর করে তুলেছে। এ সন্ত্রাসী সংগঠনের অত্যাচার-নির্যাতনে এলাকা ছেড়েছে বহু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার। এমনকি পাহাড়ের যেখানেই উন্নয়নকাজ হচ্ছে সেখানেই বাধা সৃষ্টি করছে কুকি সন্ত্রাসীরা। নতুন করে পার্বত্য অঞ্চলে ওইসব গোষ্ঠীর সঙ্গে এক শ্রেণির বিদেশি কূটনীতিকেরও তৎপরতা বা সম্পর্ক লক্ষ্য করছেন স্থানীয়রা।
সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আসে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও কেএনডি এর সভাপতি নাথানা লনচেও প্রকাশ নাথান বম। তার বয়স ৪৫। বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার ২ নম্বর রুমা সদর ইউনিয়নের ইডেনপাড়ার বাসিন্দা মৃত জাওতন লনচেও এর ছেলে নাথান বম। বাবা পেশায় জুমচাষী। মা মৃত রৌকিল বম গৃহিনী। ৫ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি ছোট। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) সন্তু গ্রুপের পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) যোগ দেওয়ার কারণে নাথান বমের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন সন্তু লারমা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ থেকে বিএ অনার্স, এমএ পাশ করেন। এছাড়া তিনি লন্ডন থেকে আর্কিটেকচার বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) ১৩ মার্চ ২০২৩ইং (সোমবার) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, পাহাড়ি এলাকার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য সরকার কর্তৃক নির্মিতব্য বান্দরবানের থানচি সড়ক সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারের এই উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে প্রতিহত করার জন্য কেএনএ সন্ত্রাসী দলটি সড়ক নির্মাণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বেসামরিক ঠিকাদার, মালামাল সরবরাহকারী এবং শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রথমে চাঁদা দাবি করে ও পরবর্তী সময়ে কাজ বন্ধ করার হুমকি দেয়। কিন্তু সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই কাজ চলমান থাকায় কেএনএ সন্ত্রাসী দল গত ১১ মার্চ ১২ শ্রমিককে অপহরণ করে।
এদের মধ্যে একজন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয় এবং ৪ শ্রমিককে এখনো কেএনএফ জিম্মি করে রেখেছে। অবশিষ্ট ৭ জন শ্রমিককে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিলেও তাদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করার জন্য হুমকি দেয়। তারই ধারাবাহিকতায় কেএনএফ ১২ মার্চ ২০২৩ইং সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ ছাড়াও গত ৮ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের ৩ উপজেলায় ‘কেএনএফ’ গাড়ি চলাচল বন্ধের জন্য পরিবহন মালিক সমিতিকে হুমকি দিয়ে নোটিশ জারি করে। কেএনএ সদস্যদের নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তাজনিত কারণে গত রোববার (১২ মার্চ) ওই এলাকায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন।
কেএনএফ ইস্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সদস্য ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল নিয়ে ভূ-রাজনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। বিশেষ করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ঘিরে বহিঃশক্তির নানা রকম তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও বাইরের মদদ পাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। সেখান থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সব সময় অস্থিরতা তৈরির অপচেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি কিছুদিন আগে দুজন বিদেশি কূটনীতিক দুর্গম পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন। সামনের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি আরও বাড়তে পারে। ফলে শক্ত হাতে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দমন করতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়েও এসব গোষ্ঠীর কর্মকান্ড মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্গম বা দুর্বল নিরাপত্তার (ভার্নারেবল) এলাকাগুলোতে নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। এর বাইরেও বড় একটি কাজ হচ্ছে- কূটনৈতিক চ্যানেলগুলোতেও এসব জঙ্গি-বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর পারস্পরিক সম্পর্ক ও কর্মকন্ডের বিষয়গুলো তুলে ধরা জরুরি। কেননা, যারা এসব অপকর্ম করছে তারা ঠিকই আন্তর্জাতিক অঙ্গনকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে বা করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুকি সন্ত্রাসীদের কম্ব্যাট (সামরিক) পোশাকে অস্ত্র মহড়া, প্রশিক্ষণ ও গুলি চালানোর ভিডিও নিজেরাই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। অনলাইনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুকিদের কিছু আইডি বা পেইজে অনবরত তৎপরতার জানান দিচ্ছে। এমনকি একটি ভিডিওতে কেএনএফের প্রধান নাথান বমসহ তাদের শীর্ষ নেতাদের গায়েও সামরিক আদলে পোশাক দেখা গেছে। কেএনএফ ছাড়াও তাদের আস্তানায় একই আদলে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণ মহড়ার ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। যা জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া এলিটফোর্স র‌্যাব প্রকাশ করেছে।
এ প্রসঙ্গে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে গত ১৪ মার্চ ২০২৩ইং (মঙ্গলবার) বলেন, গত বছরের ২০ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে হিন্দাল শারক্বীয়ার জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ সোমবারও বান্দরবান থেকে ৯ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে জঙ্গি সংগঠনকে মদদ দেওয়া এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকান্ডের জন্য কেএনএফের মোট ১৭ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কথিত হিজরতের কথা বলে ঘরছাড়া ৫৫ তরুণের বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে এই হিন্দাল শারক্বীয়ার সব নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পারে র‌্যাব। ইতিমধ্যেই পলাতক ওই ৫৫ জনের ৩৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং দুজনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তবে পাহাড়ি এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে হিন্দাল শারক্বীয়ার মোট ৬৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এর বাইরেও দুজনকে উদ্ধার করে পরিবারে হস্তান্তর করা হয়।
প্রসঙ্গত, কেএনএফ মূলত পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান কেন্দ্রিক আঞ্চলিক সংগঠন। পার্বত্য ৩ জেলার প্রায় অর্ধেক আয়তনের অঞ্চল তথা বান্দরবান জেলার লামা, রুমা, আলীকদম, থানচি, রোয়াংছড়ি উপজেলা এবং রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি, জুরাইছড়ি, বরকলসহ আশপাশের এলাকা নিয়ে একটি মনগড়া মানচিত্র তৈরি করেছে। যে মানচিত্রের ৩ দিকে বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত। এই মানচিত্রকে প্রস্তাবিত হিসেবে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সীমানা, জেলা ও উপজেলা সীমানা নির্ধারণ করেছে তারা। পাহাড়ের বম, পাঙ্খুয়া, খুমি, ম্রো এবং খিয়াং নামক ক্ষুদ্র ৬টি জাতি-গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠন হয়েছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ। সংগঠনের লোগোতে প্রতিষ্ঠাকাল ২০০৮ সাল বলে উল্লেখ থাকলেও মূলত ২০১৮ সালের পর থেকে সশস্ত্র কাঠামোয় মাথা চাড়া দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। কেএনএফের প্রধান নাথান বম ২০১৮ সালে বান্দরবান থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এ সংগঠনের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী অঞ্চল সমূহে (অন্ততঃ ১১টি উপজেলা) নিয়ে একটি পৃথক রাষ্ট্র/ জৌ- ল্যান্ড গঠন করা।