ঘর পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্য প্রার্থনা করছেন রাঙ্গামাটির হতদরিদ্র পরিবারের মানুষেরা

116

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা হচ্ছে রাঙ্গামাটি। দেশের অন্যান্য সমতল জেলার চেয়ে এই পার্বত্য জেলায় দুর্গমতা অনেক বেশী। পার্বত্য এলাকার হত দরিদ্র মানুষের জন্য ঘর তৈরী করা একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। তার পরও পাহাড়ের চতুর্থ পর্যায়ে পাহাড়ের ৪৩৯ জন হতদরিদ্র পরিবার পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর।
রাঙ্গামাটির প্রত্যন্ত দূর্গম পাহাড়ের মালা চাকমা। যার নুন আনতে পানতা ফুরায় জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করতো তারা। বৃস্টি আসলে স্বামী স্ত্রী মিলে অন্যের বাড়ীতে যাতের বসবাস করতে হতো তাদের। আজ প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক সহযোগিতায় পাকা ঘর পেয়ে খুশি মালা। নিজের আঙ্গিনায় বসে কোমড় তাঁত বুনছে মালা। নিজের পাকা ঘরে আজ বৃস্টি আসলে তাদের চিন্তা করতে হয় না। রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আর্থিক সহযোগিতায় সংসারের অভাবও কেটে গেছে মালার।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমি আগে ভাঙ্গা ঘরে থাকতাম। এখন আমার আর ভাঙ্গা ঘর নেই। আমার অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে আজ আমি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে থাকি। প্রধানমন্ত্রীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আমার ঘর হয়েছে আজ আমি নিজের ঘরে বসে কাপড় বুনে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতে পারছি। প্রধানমন্ত্রী আরো সুনাম বয়ে আনবে। দেশ বিদেশে বঙ্গবন্ধুর কন্যার নাম ছড়িয়ে যাবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন আমি পেয়েছে অন্যরাও যাতে পায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে মন আছে তাকে আমি সম্মান জানাই।
সাপছড়ি ২নং ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা মো. রহিম বলেন, আমার একটা ছেলে প্রতিবিন্ধী। তাকে নিয়ে আমাদের অনেক কষ্টে দিন কাটছিলো। ছেলের সুবাধে একটি ঘর পেয়েছি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার আমাদের কর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা করেছেন। এখন পরিবার নিয়ে খুবই ভালো আছি।
রাঙ্গামাটি বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে শুভাষীশ চাকমা ও অর্পণা চাকমা বলেন, আমরা মাছ শিকার ও কিছু কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। একটি ঘরের স্বপ্ন সব সময় দেখতাম কিন্তু আর্থিক অবস্থার কারনে কখনো পুরন করা সম্ভব ছিলো না। বৃদ্ধ বয়সে এসে সেই স্বপ্না বাস্তবায়ন করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী।
রাঙ্গামাটি বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অমর চাকমা বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকাই দুর্গম। এখানে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে ঘর নির্মাণ কঠিন ছিলো। তাও আমরা শতভাগ চেষ্টা করেছি সঠিকভাবে কাজ করার। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এখন পর্যন্ত ২০টি, এর আগে আরও ৪০টি নতুন ঘর পেয়েছে আমার ইউনিয়নের মানুষ। আরও কিছু ঘর পাওয়া গেলে কিছু মানুষ গৃহহীন মানুষ আশ্রয় পাবে।
রাঙ্গামাটি সাপছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়রাম্যান প্রবীন চাকমা ভাগ্য বলেন, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পরও এমন সুন্দর ঘর আমার নাই। প্রধানমন্ত্রী এই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অত্র এলাকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন। এসব মানুষ আজীবন প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করবেন।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা বিনতে আমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এই দুর্গম এলাকায় কাজ করা কঠিন। নির্মাণ সামগ্রী পৌঁছানো ছিলো চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কাজের শতভাগ গুনগতমান ঠিক রেখে ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
পার্বত্য দুর্গম এলাকার হত দরিদ্র মানুষ অত্যন্ত খুশী পাহাড়ের মানুষের সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী এই উপহার পাহাড়ের অন্যান্য হতদরিদ্ররাও পাবে এমনটাই আশা প্রকাশ করেন।