কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই পার্বত্য অঞ্চলে শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী-পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি

73

মোঃ আজগর আলী খান, হারাধন কর্মকার, রাজস্থলীঃ-অনেক সরকার এলো গেলো, এর আগে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তির পরিবেশ কোনো সরকারই করে যায়নি। ৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পেরেছিলেন অশান্ত পার্বত্য অঞ্চলকে শান্ত করতে। কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই পার্বত্য অঞ্চলে শান্ত পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি।
শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে রাঙ্গামাটি জেলার দূর্গম রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়াতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বাঙ্গালহালিয়া সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবন ৯৫ লক্ষ টাকা, আই,সি টি ভবন ৮০ লক্ষ টাকা, ছাত্রাবাস ৯০ লক্ষ টাকা, সীমানা প্রাচীর ৫৫ লক্ষ টাকা ও শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শেষ উদ্বোধন এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ৭০ লক্ষ টাকার বাস্তবায়িত বাঙ্গালহালিয়া হেডম্যান পাড়া বৌদ্ধ ও বাঙ্গালহালিয়া ডাকবাংলা পাড়া বৌদ্ধ বিহারের দুই তালা ভবন উদ্বোধন ও উৎসর্গ অনুষ্ঠান, ৪০ লক্ষ টাকার ডাক বাংলা পাড়া অনাথ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক উঃ খেমাচারা মহাথের, নির্মাণ ৩০ লক্ষ টাকার আগাপাড়া অনাথ আশ্রমের ভবন নির্মাণ ও বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা প্রাচীর কাজের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, রাঙ্গামাটি উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জরুল আলম, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমা, জেলা পরিষদের সদস্য নিউচিং মারমা, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ইউএনও শান্তনু কুমার দাস, উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুসার চাকমা, সহকারী প্রকৌশলী ত্রায়া সরকার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা, বাঙ্গালহালিয়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিক মিয়া, বাঙ্গালহালিয়াা ইউপি চেয়ারম্যান আদোমং মারমা, গাইন্দ্যা ইউপি চেয়ারম্যান পুচিংমং মারমা, ঘিলাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা, জেলা উপজেলার স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি এবং রাজনৈতিক-সামাজিক নেত্রীবৃন্দ প্রমুখ।
এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের প্রেরণার উৎস মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নাই। আজ পার্বত্য জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে স্কুল কলেজ নির্মাণ করা হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে, শিক্ষা ক্ষেত্রে, যোগাযোগ ক্ষেত্রে প্রত্যেক জায়গায় উন্নয়ন হয়েছে। পাকা রাস্তা, ড্রেন, ব্রীজ, কালভার্ট, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, বিহার, গির্জা এমনকিছু বাদ নেই যেখানে উন্নয়ন হয়নি। একটি বাড়ি একটি খামার, মাতৃত্বকালীন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা সকল নাগরিক সুযোগ সুবিধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেয়া হচ্ছে। আধুনিক শিক্ষা প্রযুক্তির ব্যবহার পার্বত্য ছেলে মেয়েরা অনায়াশেই করতে পারছে। ছেলেমেয়েরা ডিজিটাল প্রযুক্তির ছোঁয়া পাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের পূর্ব পুরুষরা কোনোদিনই এতো উন্নয়ন দেখে নাই। দুঃখ কষ্ট মানুষের মনে থাকতে পারে। যারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল না, তারাই ৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করতে চায়। সংঘাত, অশান্তি কখনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। অহিংস বাণী নিয়ে আমাদের এগুতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। পদ্মা সেতু, কর্ণফুলি টানেল, রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট শেখ হাসিনা সরকারই করেছে। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে কাজ করছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে। নিজেদের প্রতিভা বিকশিত করতে পারছে। তিনি বলেন, পার্বত্য এলাকার মানুষ কখনো কারো বোঝা নয়। দেশের কল্যাণে, পার্বত্যবাসীর কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী আছেন এবং সবসময় থাকবেন। তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের উন্নয়ন কাজে সকলকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
পার্বত্য মন্ত্রী আরো বলেন, সকল ধর্মের কল্যাণে আন্তরিক ও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাই পার্বত্য বাসীর চিন্তার কিছুই নেই। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণসহ সকল প্রকার উন্নয়নমূলক কাজ করে সব ধর্মের ঐতিহ্য রক্ষায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এতে করে পার্বত্য এলাকায় সব ক্ষেত্রেই উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে এবং আগামীতেও চলমান থাকবে।
এছাড়া দুপুরে ডাকবাংলা পাড়া নব নির্মিত বৌদ্ধ বিহার শুভ উদ্বোধন ও উৎসর্গ অনুষ্ঠানে আশীর্বাদক ছিলেন, উপ সংরাজ ভদন্ত ঞানুতারা মহাথের, ভদন্ত ঞানাওয়াইসা মহাথের, ভদন্ত পামোখা মহাথের, ভদন্ত নাগাওয়াইসা মহাথের, ভদন্ত পঞঞাদীপা মহাথের, ভদন্ত খেমাচারা মহাথের।
পরে ডাক বাংলা পাড়া বৌদ্ধ বিহার নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়ায় উৎসর্গ অনুষ্ঠানে সংঘ প্রধান ও বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত ঞানাওয়াইসা মহাথের পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপিকে স্বর্ণের নৌকা উপহার প্রদান করেন।