রাজস্থলীতে সোনালী আমন ধান হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখে

39

মোঃ আজগর আলী খাঁন, রাজস্থলীঃ-রাঙ্গামাটির রাজস্থলীতে শুরু হয়েছে আগাম জাতের রোপা আমন ধান কাটার উৎসব। আমন ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সোনালি ধান হাসি ফুটিয়েছে তাদের মুখে। বিস্তৃীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন কেবল ধান আর ধান। হেমন্তের সকালে সে ধানের ডগায় শোভা পাচ্ছে মুক্তার মতো ঝলমলে শিশির বিন্দু। কোথাও কোথাও এরই মধ্যে সবুজ ধান পেকে সোনালি বর্ণ ধারণ করেছে। কদিন পর সে পাকা ধান ঘরে উঠবে। আবার পাহাড়ের চুড়ায় ঝুম চাষের আগাম ধান পাকায় কৃষক-কৃষাণীরা মেতে উঠেছেন ধান কাঠার উৎসবে। অথচ নানান প্রতিকূল আবহাওয়ায় এবার শঙ্কা ছিল কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ার। তবে কৃষক ও কৃষি অফিস বলছে, বরাবরের মতো এবারও ভালো ফলনই হয়েছে। এ রাজস্থলী উপজেলার তিন টি ইউনিয়নে।
রাজস্থলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ৯৪৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৪৮ হেক্টর। যা গত বছর ছিল ৯১৩ হেক্টর। এর মধ্যে ব্রি ধান-৪৯, পাজাম, দিনাজপুরী পাজাম, ব্রি ধান-৫১, ব্রি ধান-৮৭ সহ অন্যান্য আগাম জাতের ধান আবাদ হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। কম সময়ে ফলন এবং কম খরচে এই জাতের ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অনেক কৃষক।
তবে মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার পর গত বছরের তুলনায় এবারও ৩৫ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। এরই মধ্যে আবার সিত্রাং এর আঘাতে ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে কিছুটা। সব কাটিয়ে তবু প্রত্যাশার চেয়ে ভাল ফলনের আশাই করছে কৃষক ও কৃষি অফিস।
রাজস্থলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলনে, আমন মৌসুমে কম সময়ে অধিক ফলন হয়, এমন জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। চলতি আমন মৌসুমে ১৮০ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ফলনো ভালো হয়েছে। সিত্রাংয়ের তান্ডবে জড়ো কিছু এলাকায় ধানের গাছ নুইয়ে পড়েছিল। তবে এবারও আমরা গতবারের চেয়ে বেশি ফলন পাবো। এবার চাউল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৬৩১ মেট্রিক টন এবং ধানের লক্ষ্যমাত্রা ৩৯৪৬ মেট্রিক টন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান, প্রতি ইঞ্চি জমি চাষ এ প্রতিপাদ্যকে সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ এর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর শস্যের নিবিড়তা বৃদ্ধিসহ আগাম ধান কেটে সবজি তেল জাতীয়, ডাল জাতীয় ফসল আবাদ করবে। জমিতে ধান চাষের পর আলু, সরিষাসহ রবিশস্য উৎপাদন করতে পারবে। এটি কৃষকদের বোনাস ফসল। কৃষকের উৎপাদন এবং আয় দুটোই বাড়বে।