লামার মেরাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নয়টি শ্রেণিকক্ষের জন্য শিক্ষক ৪ জন!

50

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামাঃ-শুধুমাত্র শিক্ষক সংকটে একটি বিদ্যালয়ের লেখাপড়া ধ্বংসের পথে। যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নের “মোরখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়”। স্কুলটিতে সব থাকলেও শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। মাত্র ৪ জন শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ৯টি শ্রেণিকক্ষের ৫৩২ জন শিক্ষার্থীর পড়ালেখা। বিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত সমস্যা তেমন না থাকলেও শিক্ষক স্বল্পতার কারণে গুণগত ও মানসম্মত শিক্ষাদান করা সম্ভব হয়ে উঠছে না বলে জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশীষ কুমার দত্ত।
জানা যায়, লামা সদর ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্রে মনোরম পরিবেশে ১৯৬৫ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়টি গুণগত ও মানসম্মত পাঠদানের কারণে বিগত সময়ে উপজেলার প্রথম সারির একটি বিদ্যালয় হিসাবে পরিচিত ছিল। যার দরুণ ২০১৩ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার মেয়াদ ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৮ বছর করার প্রস্তাবের অংশ হিসাবে এই বিদ্যালয়টিকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত উত্তীর্ণ করা হয়। স্কুলটি শ্রেণি বাড়ানো হলেও অবকাঠামো, শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণ বর্ধিত করা হয়নি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশীষ কুমার দত্ত জানান, ‘পরিচালনা পর্ষদ, শিক্ষক মন্ডলী ও অভিভাবকদের আন্তরিকতার কারণে অত্র বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান ভাল। ৯টি শ্রেণিকক্ষে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস করে। এবছর পিএসসি পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ হয়েছে। বিদ্যালয়ে ৭ জন শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত রয়েছেন। এরমধ্যে ৩ জনেই মাতৃত্বকালীন ছুঁটিতে রয়েছেন। বর্তমানে মাত্র ৪ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। ৪ জন শিক্ষকের পক্ষে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীকে পাঠদান করানো কষ্টসাধ্য। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, কোন কাজ হয়নি।’
অভিভাবকরা বলেন, উপজেলার অনেক প্রাথমিক স্কুলে ৬টি শ্রেণিকক্ষের জন্য ১০/১২ জন শিক্ষক দায়িত্বে রয়েছেন। অথচ মেরাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪ জন শিক্ষক দিয়ে এখন পাঠদান করানো হচ্ছে। শিক্ষকের অভাবে ভালো স্কুলটি খারাপ হয়ে যাচ্ছে। স্কুলের নব-নির্বাচিত সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, নতুন শিক্ষক বাড়ানোর বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপন কুমার চৌধুরী জানান, ‘পুরো উপজেলার অনেক স্কুলে আমাদের শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে। শিগগিরই ওই স্কুলের শিক্ষক ঘাটতি পূরণ করা হবে।’