কাল খাগড়াছড়ি’র ৪২টি সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রীঃ বদলে যাবে যোগাযোগ ব্যাবস্থা ও অর্থনীতির চিত্র

61

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ-খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় কাল সোমবার (৭নভেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি ৪২টি সেতু উদ্বোধন করবেন বলে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর সেতু উদ্বোধনের বিষয় নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন সড়কে পিসি গার্ডার সেতু, আরসিসি সেতু ও আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৮৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪২টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুটি হচ্ছে দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং-পানছড়ি সড়কের লোগাং সেতু। ১৪৩ দশমিক ৫মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১১কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। ১০০মিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতুটি মানিকছড়ি-লক্ষীছড়ি সড়কে ধুুরুং খালের ওপর নির্মাণ করা হয়। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯কোটি ২৭লাখ টাকা।
এছাড়া ৭কোটি ৩২লাখ টাকায় দিঘীনালা-বাবুছড়া-লোগাং-পানছড়ি সড়কে ৭৯.০৫ মিটারের পুজগাং বাজার সেতু, ৬কোটি টাকা ব্যয়ে মাটিরাঙ্গা-তানাক্কাপাড়া সড়কের ৫০মিটার দৈর্ঘ্যের গোমতী সেতু, ৪কোটি ৬২লাখ টাকায় মানিকছড়ি-লক্ষীছড়ি সড়কে ৪৪.২মিটার দৈর্ঘ্যের জুর্গাছড়ি সেতু, ৫কোটি ২৮লাখ টাকায় খাগড়াছড়ি-ঢাকা মহাসড়কের রামগড়ের সোনাইপুল সেতু, ৪কোটি ৫৫লাখ টাকা করে ৬৯কোটি ১৫লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৩টি সেতু, দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং-পানছড়ি সড়কে ৪৪মিটার দৈর্ঘ্যের পাবলাখালী সেতু, একই সড়কে ৪৪মিটার দৈর্ঘ্যের বাঘাইছড়ি সেতু, ৪০মিটার দৈর্ঘ্যের বাবুরোপাড়া সেতু, খাগড়াছড়ি-পানছড়ি সড়কে ৩৭মিটার দৈর্ঘ্যের পেরাছড়া ব্রিজ, একই সড়কে ৩৭মিটার দৈর্ঘ্যের গাছবান ব্রিজ, ৩৭মিটার দৈর্ঘ্যের কুকিছড়া ব্রিজ, ৩৭মিটার দৈর্ঘ্যের কুরাদিয়াছড়া ব্রিজ, একই দৈর্ঘ্যের লতিবানছড়া ব্রিজ, একই দৈর্ঘ্যের হাটহাজারি-মাটিরাঙ্গা সড়কের খাগড়াপুর ব্রিজ, রাঙ্গামাটি-মহালছড়ি সড়কে ঠাকুরছড়া ব্রিজ, মানিকছড়ি-লক্ষীছড়ির হাতিছড়া সেতু, জালিয়াপাড়া-মহালছড়ি সড়কের সিন্দুকছড়ি সেতু ও পঙ্খিমুড়া সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও রয়েছে, ৪কোটি ৪১লাখ টাকায় দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং সড়কের দেওয়ানছড়া সেতু, ৫কোটি ১৫লাখ টাকায় বাঘাইহাট-মারিশ্যা সড়কের পতেঙ্গাছড়া সেতু, একই সড়কে ৪কোটি ৫৫লাখ টাকায় নাকাপা সেতু, ৪কোটি ২৬লাখ টাকায় দীঘিনালা-বাবুছড়া সড়কের জারুলছড়ি সেতু, ৩কোটি ৮২লাখ টাকা করে ১১কোটি ৪৬লাখ টাকায় নির্মিত ৩টি সেতু, মহালছড়ির চোংড়াছড়ি সেতু, একই সড়কে মুসলিমপাড়া ব্রিজ ও হেঁয়াকো-রামগড়-জালিয়াপাড়া সড়কে ৩১মিটার দৈর্ঘ্যের পাতাছড়া সেতু।
৩কোটি ৪৫লাখ টাকা করে ৬কোটি ৯০লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে জালিয়াপাড়া-সিন্দুকছড়ি সড়কে ২৮মিটার দৈর্ঘ্যের ধুমনীঘাট সেতু ও যৌথখামার সেতু। ৩ কোটি ৬৮লাখ টাকায় দীঘিনালা-বাবুছড়া-লোগাং সড়কে ২৮মিটার দৈর্ঘ্যের বড়পেরা সেতু, ৩কোটি ৮লাখ টাকায় খাগড়াছড়ি পানছড়ি সড়কে ২৫মিটার দৈর্ঘ্যের ছোটনালা ব্রিজ, ৩কোটি ৬৬লাখ টাকায় লক্ষীছড়ি সড়কে ২৫মিটার দৈর্ঘ্যের মগাইছড়ি সেতু, ৪কোটি ২৩লাখ টাকায় পানছড়ি সড়কে ২৫মিটার দৈর্ঘ্যের লোগাং বাজার সেতু, ৩ কোটি ৫৭লাখ টাকায় দীঘিনালার বুজ্যেনাল সেতু, ৪কোটি ৯লাখ টাকায় মগমারাছড়া সেতু, ২কোটি ৭৫লাখ টাকায় খাগড়াছি-পানছড়ি সড়কের ২২মিটার দৈর্ঘ্যের পাকুজ্জাছড়ি ব্রিজ, ২কোটি ৭৩লাখ টাকায় মানিকছড়ি সড়কে ২২মিটার দৈর্ঘ্যের দুল্লাতলী সেতু, ২কোটি ৩৫লাখ টাকা করে ৪কোটি ৭০লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয় পানছড়ি সড়কের ১৯মিটার দৈর্ঘ্যের ভাইবোনছড়া ব্রিজ ও কলাবাগান ব্রিজ।
৩কোটি ৯৮লাখ টাকায় নির্মিত মাটিরাঙ্গার তবলছড়ি ও তাইন্দং ২টি সেতু, ৩কোটি ৭৬লাখ টাকায় খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কে ১৬মিটার দৈর্ঘ্যের কৃষি গবেষণা সেতু ও ৩কোটি ৪১লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত দীঘিনালা সড়কের হাতিমারাছড়া সেতু।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা বলেন, খাগড়াছড়িতে ৪২টি সেতুর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে তবে বেইলি ব্রীজের পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মান সরকারের যুগান্তরকারী পদক্ষেপ। এ সেতু নির্মানের ফলে জেলাবাসির যোগাযোগ ব্যাবস্থা নিরাপদ ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড তরান্বিত হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন আমরা ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে যানবাহন চালিয়েছি। এতে সড়ক দুর্ঘটনায় বহু হতাহতের ঘটনাও আছে। অস্থায়ী সেতুর পাটাতনে ভেঙে গাড়ি আটকে যান চলাচর বিঘিœত হতো। এখন সে সবের পরিবর্তন হয়েছে। যে কয়েকটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, সেগুলোও স্থায়ী সেতুতে রূপান্তরিত হলো। এটি খাগড়াছড়ির সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে।
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সড়ক পথে যথাসময়ে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারবেন কৃষকরা। ফলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাবেন।