গর্জনিয়ায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দিলো পাষন্ড স্বামী

56

শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়িঃ-রামু উপজেলার গর্জনিয়ার মাঝিরকাটা গ্রামে লাখ টাকা যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে মারধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় গুরুত্বরে আঘাত করলো পাষন্ড স্বামী।
জানাযায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে রামু উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝির কাটা গ্রামের ৬ নং ওয়ার্ডের রশিদ আহমেদ প্রকাশ রশিদ মাঝির ছেলে আবছার কামাল (৩৫) লাখ টাকা যৌতুক চেয়ে বসে স্ত্রী তাসমিম আক্তারের কাছে।
সে টাকা দেওয়ার অপারগতা স্বীকার করলে তখন তাকে প্রথম বেদম প্রহার করে পরে রাগের ক্ষোভ সামলাতে না পেরে লোহার রট আর ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায়, মূখে ক্ষতবিক্ষত ভাবে গুরুত্বর জখম করে। তখন স্ত্রী তাসমিম আক্তারের কোলে ছিল ৪০ দিনের সন্তান।
এ ঘটনার বিষয়টি গত ২৮ সেপ্টাম্বার বিকেলে সত্যতা নিশ্চিত করে তাসমিম আক্তারের মা আবেদা খাতুন বলেন, দীর্ঘ ৪ বছরের সংসার জীবনে প্রায় দিনই যৌতুকের জন্য মেয়ে তাসমিম আক্তারকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন সহ্য করে আসছিল। যৌতুকের জন্য আমার মেয়ে কে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত করেছে। তাছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মুখে কয়েকটি গুরুত্বর আঘাত করে। এতে মুখমন্ডলটি জখমে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এবং তার মাথা আর মূখে সাতটি সেলাই করা হয়েছে।
এখন সে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। আমরা নেহায়েত গরীব, বড় ধরনের যৌতুক দেওয়া আমাদের সম্ভব নয়। যদি ছোট কাট সমস্যায় পড়ে তখন সধ্যমত যতটুকু পারি সাহায্য করে আসছি।
আমার মেয়েকে কারনে-অকারনে মারধর করে আসচ্ছে। এসব ভয়ংকর মারধর থামানোর বিহিত ব্যবস্থার প্রয়োজনসহ আমরা তার কঠোর শাস্তি দাবি করছি। মেয়ে সুস্থ হলে পারিবারিক পরার্মশ অনুযায়ী মামলার পদক্ষেপ নেবো।
প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, সোমবার রাতে স্ত্রী তাসমিম আক্তারের কে তার স্বামী বেপরোয়া মারধর করলে তখন তাসমিম আক্তার সুচিৎকার করে। তখন আমরা চিৎকারের আওয়াজ পেয়ে দৌঁড়ে যায় ঘটনা স্থলে। তখন দেখি তাসমিম মাটিতে লুঠে পড়ে থাকে মাথা থেকে রক্ত করন আর মূখমন্ডলটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় দেখতে পায়। তখন খবর পেয়ে তাসমিমের মা আবেদা খাতুন লুঠিয়ে মাটিতে পড়ে থাকা মেয়েকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় গর্জনিয়া বাজারের পল্লী চিকিৎসক রুবেল ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে গেলে কর্তব্য চিকিৎসক রক্ত করনের অবস্থা দেখে এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত নাইক্ষ্যংছড়ি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করার পরার্মশ দেন। তখন দ্রুতগতিতে নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে বর্তমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন বলে শুনেছি।
স্থানীয়রা জানান, গর্জনিয়া ইউনিয়নের থিমছড়ি ৪নং ওয়ার্ড আবদুল জব্বারের মেয়ে তাসমিম আক্তার (২২) এর সাথে একি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের রশিদ আহমেদ প্রকাশ রশিদ মাঝির ছেলে আবছার কামাল (৩৫) এর বিয়ে হয় প্রায় ৪ বছর আগে।
মাঝে মধ্যে তাদের দুই জনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হয়ে আসছিল। গত ২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতের দিকে যৌতুক দাবী করে তাসমিম কে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে এক পর্যায়ে যৌতুক দেয়ার কথা স্বীকার করাতে না পেরে পাউন্ড স্বামী আবছার লৌহার রট আর ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভারী আঘাত করাতে স্ত্রী তাসমিম প্রথমে মাটিতে লুঠে পড়ে। তখন দেখতে পাই মাথা থেকে প্রচন্ড রক্ত করন আর আঘাতে ক্ষত বিক্ষত মূখ মন্ডল। তখন ক্ষুত স্বামী স্ত্রীর মাথার প্রচন্ড রক্তক্ষরণ দেখে পালিয়ে যায়।
তখন তাসমিমের মাসহ এলাকার লোকজন ধরাধরি করে প্রথমে নিকটস্থ গর্জনিয়া বাজারে পল্লী চিকিৎসক রুবেল ডাক্তারের চেম্বারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে নাইক্ষ্যংছড়ি সরকারী হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে এখন চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
তবে এঘটনার কারন জানতে চাইলে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক পাষন্ড আবছার কামালের নিকটতম এক আত্মীয় জানান, আবছার কামাল রীতিমত নেশগ্রস্ত থাকেন। মাঝে মধ্যে টাকার জন্য স্ত্রী সাথে ঝগড়াঝাঁটি হয়। মাঝে মধ্যে যৌতুকের কথাও উঠে। ছোটকাট সমস্যায় শ্বাশুড় বাড়ী থেকে সাহায্য পায়। এবার বড় ধরনের যৌতুক না পাওয়ায় এতো বড় ঘটনা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি জানান।
নাইক্ষ্যংছড়ি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আহত তাসমিম আক্তার এর মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রচন্ড রক্তাক্ত ও মূখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। তার মাথায় সাতটি সেলাই এবং মুখে ২টি সেলাই করা হয়েছে।