পাহাড়ে অস্ত্রধারীদের প্রভাবে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে-দীপংকর তালুকদার এমপি

54

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-পাহাড়ে অস্ত্রধারীদের প্রভাবে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি। তিনি বলেন, পাহাড়ে পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্টরা পর্যটনখাতকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে অস্ত্রধারীরা প্রতিটি জায়গায় বাধা প্রদান করে। তারা চায় না পাহাড়ে রাস্তা ঘাট উন্নয়ন হোক। এমতাবস্থায় রাঙ্গামাটি জেলায় পর্যটন শিল্প খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এনেক্স ভবনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম, পর্যটন বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ও রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য নিউচিং মারমা, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, মোঃ আব্দুর রহিম, বিপুল ত্রিপুরা, ঝর্ণা খীসা, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাব সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল প্রমূখ।
আলোচনা সভায় রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি আরো বলেন, পাহাড়ে রাস্তা করা যাবে না ব্রীজ করা যাবে না, রাস্তা বা ব্রীজ করা হলে সন্ত্রাসীদের যে চাঁদা তুলার ঘাটি আছে তা নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারণে পাহাড়ে অবৈধ অস্ত্রধারীরা রাস্তা ঘাট উন্নয়ন হোক সেটা চায় না। তিনি বলেন, পাহাড়ে যখনেই টুরিজম স্পট তৈরি করতে যায় তখনেই বাঁধা আসে। এমতাবস্থায় যদি আমাদের সাধারণ মানুষের চেতনা বোধটাই যদি না হয়, সাধারণ মানুষ যদি এটা প্রতিহত না করে তাহলে টুরিজমের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়বে।
সভাপতির বক্তব্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি পর্যটন শিল্প দেশের আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নে সরকার ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। আর এর অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যুগ যুগ ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে। প্রকৃতি নির্ভর এই শিল্প পর্যটন উন্নয়নের মাধ্যমে পরিপূর্ণ সংরক্ষণ নিশ্চিত করে আমাদের পার্বত্য এলাকার এই সম্পদকে সুরক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
এসময় রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প উন্নয়নের এক অমিত সম্ভাবনার দেশ। আর রাঙ্গামাটি জেলায় পর্যটন শিল্প বিকশিত করতে এখানে রয়েছে এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাপ্তাই হ্রদ এবং অসংখ্য পাহাড় ও ঝর্ণা। অতীতে যেভাবে পর্যটন শিল্পকে অবহেলা করা হয়েছে, সেভাবে এই শিল্পকে অবহেলা করলে রাঙ্গামাটিতে পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে না। এজন্য সকলের সম্বলিত প্রচেষ্ঠা দরকার। আর সারা দেশের চাইতে এ জেলার বৈচিত্র্য এবং সংস্কৃতি ভিন্ন। যা পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় না। এ জেলার সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য দেখার জন্য প্রতিবছর হাজারো মানুষ এই পার্বত্য এলাকায় ভিড় জমায়। কিন্তু আগত এসব পর্যটকদের এ জেলার সংস্কৃতি এবং বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। পর্যটকদের জন্য নিরাপত্তা, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, থাকা-খাওয়ার সুবিধাদি এবং পর্যটন স্পটগুলো যদি আরো উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি করতে সরকারে পাশাপাশি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসে তাহলে এ জেলায় পর্যটকের অভাব হবে না।
এর আগে ‘পর্যটনের নতুন ভাবনা’ এই প্রতিবাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে রাঙ্গামাটি শহরে বর্ণাঢ্য র‌্যালী বের করা হয়। র‌্যালীটি শহরের হ্যাপির মোড় এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ করে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়।