রাঙ্গামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের আশানুরূপ সমাগম নেই

162

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-পবিত্র ঈদ উল আযহার লম্বা ছুটি বর্ষা মৌসুমে যান্ত্রিক জীবনে একটু ক্লান্তি দূর করতে বিনোদনের খুঁজে পাহাড় হ্রদ ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক লীলাভূমি রাঙ্গামাটিতে ছুটে আসা মানুষের সমাগম নেই পাহাড়ের পর্যটনে। প্রতি বছর ঈদের আগাম বুকিংয়ের চাপে যেখানে পর্যটকদের ঠাঁই দিতেই নাভিশ্বাস উঠত ছোট্ট এই পাহাড়ী শহরের হোটেল মোটেল রিসোর্টগুলোতে। সেখানে এবার ঈদের দিনেও নেই পুরো বুকিং,বরং অর্ধেক বুকিং আছে এমন প্রতিষ্ঠানও যেনো হাতে গোণা। তবে যারা আসছেন তারা রাঙ্গামাটি সরকারী-বেসরকারী পর্যটন স্পটগুলেতে নতুন কোন কিছু না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন আগত পর্যটকরা।
পবিত্র ঈদ উল আযহার ৪ দিনের ছুটিতে রাঙ্গামাটিতে হাজারো পর্যটকের আগমনে রাঙ্গামাটি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সাজানো হয়েছিলো অপরূপ সাজে। আর বর্ষা মৌসুমে রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক পরিবেশন যেন তার রুপ ছড়াচ্ছে। তাই পর্যটকদের আনন্দ দিতে রাঙ্গামাটির পর্যটন কেন্দ্রগুলো সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছিলো।
রাঙ্গামাটিতে পর্যটনের আকর্যনীয় স্পটের মধ্যে রয়েছে, পর্যটনের ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্না, পলওয়েল, রাজবন বিহার, জেলা প্রশাসনের বাংলো, আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কের কাপ্তাই হ্রদের গড়ে উঠা বেসরকারী পর্যটন বেরান্নে, বড়গাঙ, রান্ন্যাতুগুন এবং আদিবাসী শান্ত সবুজ গ্রাম ও তাদের জীবন যাত্রা। এছাড়াও কাপ্তাই হ্রদের পানি ও পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য রাঙ্গামাটির পর্যটকদের মন ভরিয়ে দেয়। তবে রাঙ্গামাটি সরকারী-বেসরকারী পর্যটন স্পটগুলোতে সে পুরোনো কায়দায় জরার্জিণ অবস্থায় থাকাতে এর সংস্কার ও নতুন কোন কিছু না থাকায় হতাশ পর্যটকরা।
পর্যটন ঘাট বোট ইজারাদার রমজান আলী বলেন, কাপ্তাই হ্রদের স্বচ্ছ পানি যেন ভ্রমণ পিপাসুদের মন কেড়ে নেবে। তাই কাপ্তাই হ্রদে নৌ বিহারের জন্য প্রস্তুত রয়েছে বোট গুলো। তবে পর্যটন স্পটগুলোতে যদি আরো নতুন বাড়তি কিছু করা যেতো তা হলে পর্যটকদের আগমন আরো বেশী হতো এবং পর্যটকরা আনন্দ উপভোগ করতো।
হোটেল স্কায়ার পার্ক এর স্বত্তাধিকারী নিয়াজ আহমেদ বলেন, বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে উপভোগ করতে পর্যটকরা ছুটে আসে পাহাড় ঘেরা রাঙ্গামাটিতে। তবে এখনো তেমন বুকিং না হলেও হোটেল মোটেলগুলোতেও বুকিং আশানুরূপ হচ্ছে। আর ঈদের পড়ে মানুষ বেড়াতে বেড় হবেন তাই আমরা আশাকরি শেষ মুর্হুতে পর্যটকদের আগমন পরিপূর্ণতা বাড়বে।
রাঙ্গামাটি পর্যটন কর্পোরেশন ম্যানেজার সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেলের রুমের বুকিং কিছুটা হয়েছে। তবে এটা সাময়িক। মূলত ঈদুল আজহার ছুটিতে মানুষ নিজ গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কারণে পর্যটক তুলনামূলক কম হয়েছে। কিছুদিন পর জেলায় আবারো পর্যটকের ব্যাপক সমাগম ঘটবে। আর রাঙ্গামাটির পর্যটকদের আনন্দদায়ক ও বিনোদনের জন্য রাঙ্গামাটি পর্যটন কর্পোরেশন কাজ করছে। তবে গত দুইবছর করোনার কারণে পর্যটন স্পটগুলোতে উন্নয়ন কর্মকান্ড করা হয়নি। তবে দ্রুততার সময়ে আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে যে পরিমাণ পর্যটকই আসুক না কেনো, তাদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুতির কথা বলছে রাঙ্গামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশ। রাঙ্গামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশের অফিসার ইনচার্জ জহিরুল আনোয়ার জানালেন, বেড়াতে আসা পর্যটকরা যেনো নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে পারে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকবে পুলিশ। সবার নিরাপদ ভ্রমন নিশ্চিতে কাজ করছি আমরা।
করোনাকালে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির লাগাম ধরতে এবং রাঙ্গামাটি পর্যটন শিল্পের বিকাশে রাঙ্গামাটি জেলায় পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন রাঙ্গামাটিতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা। এতে করে পর্যটকদের আগমন বাড়বে। আর যেসব সংকটের কারণে এবার পর্যটক কম তার সবই সাময়িক, দ্রতই এই সংকট কেটে যাবে এবং আবার মুখর হয়ে উঠবে পাহাড়ের পর্যটন বলে মনে করছেন তারা।