পাহাড়ে বৈষম্যহীন পর্যটন ব্যবস্থার গ্রহনে এখন সময়-বক্তাদের অভিমত

100

থানচি প্রতিনিধিঃ-বান্দরবানে থানচি উপজেলা সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল পরিবেশ ও নারীবান্ধব পর্যটন বিষয়ক শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠান শুভ উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা।
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা পরিষদের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খামলাই ম্রো বলেন, স্থানীয়দের সম্মানজনক অংশীদারীত অধিবাসীদের সংস্কৃতি ও পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও নারীবান্ধব পর্যটনের জন্য প্রয়োজন পর্যটন ব্যবস্থা উন্নয়নের স্থানীয় জাতিগোষ্ঠির ঐতিহ্যগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়োজিত কর্মী, কোম্পানি, ট্যুর গাইড, সংশ্লিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান মালিকদের জনগোষ্ঠির সংস্কৃতি, সামাজিক, পরিবেশের সচেতন, সংবেদনশীল আচারন, ঐতিহ্য পেশা সংরক্ষনের আয়ের বৈষম্য কমানো, ঐতিহ্যবাহী কাঠামোগুলোকে শক্তিশালী এবং পরিবেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করার সমাজের সকল স্তরের যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার অত্যন্ত জরুরী সময় পরিনত হয়েছে। সুতারাং পাহাড়ে পর্যটন বিকাশের বৈষম্যহীন যথাযথ পদক্ষেপ জরুরী প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বান্দরবান জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ্যাডভোকেট ও ডব্লিউ আরএন কেন্দ্রীয় সদস্য এড. মাধবী মারমা বলেন, পর্যটন গড়ার পূর্বেই স্থানীয় জনগোষ্ঠির সহিত আলোচনা, অনুমতি, সম্ভাব্য সামাজিক অর্থনৈতিক ঝুঁকি মোকাবেলা। প্রশাসন কর্তৃক পর্যটকদের মৌলিক আচারনবিধি, পাহাড়ে গ্রামে চলাচলে, ফলমূল, আহরন, পশুপাখি শিকার,ছবিতোলা, মূল্যবোধ,বিশ্বাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পর্যটন ভ্রমনকারীদের মধ্যে সচেতন তৈরী করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান চসাথোয়াই মারমা বলেন, থানচির মতো উপজেলা স্থানীয়দের অসচেতনতা কারনে এক সময় থানছি ছিল সেটি এখন থানচি নাম করন। ক্রাকউডংকে ডিম পাহাড়, ঙাফাঁখুমকে নাফাখুম না পরিবর্তন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা শুদ্ধাচারের জন্য সামাজিক উদ্যোগ নিয়েছেন সেটি বাস্তবায়নের আমাদেরকে করতে হবে। পূর্বে নাম ঐতিহ্যগত বর্তমান নাম আলোচিত সুতারাং নামকরন নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশিল সমাজ,জিও, এনজিও, সাংবাদিক, প্রগতিশীল মানুষের চিন্তাভাবনা তৈরীর করার জরুরী সময় হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী নাম করন শুদ্ধাচারের মধ্যে বিকশিত হওয়া সম্ভব বলে সমাজের সকল স্তরে আহবান জানান তিনি।
ডব্লিউ আর এন বান্দরবান জেলা সমন্বয়কারী চৈতী ত্রিপুরা স্বাগত বক্তব্যে বলেন, পাহাড়ে সমাজ পিতৃতান্ত্রিক নারীরা নানান ধরনের নিপীড়ন, বৈষম্য, শিকার। পর্যটনের প্রভাব নারীদের উপর অবশ্যম্ভাবী। পর্যটকদের অসবেদনশীলতা পাহাড়ে নারীদের গোসল করার জায়গা, ঝিড়ির ঝর্না থেকে পানি সংগ্রহ করার সময় সূচী পরিবর্তন করতে হচ্ছে। পর্যটনের ফলে নারী ও শিশু পাচার যৌন ব্যবসাসহ নারীর জন্য নিপীড়নমূলক পরিস্থিতির সৃস্টি হওয়া আমরা খুবই উদ্বিগ্ন বলে মনে করেন তিনি।
এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেনির পেশা উপস্থিত থেকে মতামতে বক্তব্যে বক্তারা বলেন,সরকার স্থানীয় জনগোষ্ঠিকে সম্পৃক্তকরন অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষনকে জাতীয় পর্যটন নিতি ২০১০ এর মূলনীতি হিসেবে গ্রহন করার। তাছাড়া নিতিমালা পার্বত্য চট্টগ্রামে সামাজিক উন্নয়নের, দেশীয় সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে সংরক্ষন করার। পর্যটনের উন্নয়ন ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠির জীবনধারা প্রতি সংবেদনশীল ও সম্মান প্রদর্শনসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতামুক্ত ও পর্যটন শিল্পের পুর্ন সুবিধাদি স্থানীয় জনগোষ্ঠিদের অংশীদারিত করার দাবী জানানো হয়।
বান্দরবান জেলা সদরে অবস্থিত তারুন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (টিডিও) সহযোগীতা ও অর্থায়নের বান্দরবান জেলা উজানি পাড়ায় রউইমেন রির্সোস নেটওয়ার্ক (ডব্লিউ আর এন) আয়োজনে শনিবার ২৫ জুন দুপুর দুইটা সময় উপজেলা রিড থানচি ট্রেড সেন্টারের তংমাহাং হোটেল কমফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা অন্যান্য মধ্যে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মংবোওয়াংচিং মারমা অনুপম, ডব্লিউ আর এন সদস্য এমেথিং মারমা, নারী ফোরামে সাবেক সভানেত্রী বকুলি মারমা, পর্যটন পদ প্রদর্শক সভাপতি ম্যানুওয়েল ত্রিপুরা ইমন, সাধারন সম্পাদক মামুনর রশিদ, বান্দরবান কলেজের ডিগ্রি ছাত্র উচমং মারমা, তিন্দু ইউপি নারী মেম্বার ইচ্ছামতি ত্রিপুরা, রেমাক্রী ইউপি মেম্বার জন ত্রিপুরা, টিমং পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সত্যমনি ত্রিপুরা, উদিয়মান নারী নেত্রী উসাংপ্রু মারমাসহ অনেকে বক্তব্য মাধ্যমে মতামত তুলে ধরেন। এর আগে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর শেখ হাসিনা সপ্নের পদ্দ সেতু শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারিত বাংলাদেশ টেলিভিশন পর্দায় সম্মান জানানো হয় এবং হাত তালি ও প্রশংসা জানিয়ে প্রধান মন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা হয়ে এবং দির্ঘায়ু কামনা করে প্রার্থনা করা হয়। সভায় হেডম্যান, কারবারী, জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মী, বিশ্ব বিদ্যালয়ের অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী, সাংবাদিকরা অংশ নেন।