পিতার বিরুদ্ধে হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগে দীঘিনালায় সংবাদ সম্মেলন করলো ৪ কন্যা

126

মো. সোহেল রানা, দীঘিনালাঃ-খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালায় জন্মদাতা পিতার ঘরে দীর্ঘদিন যাবৎ ঠাঁই না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৪মেয়ে।
জানা যায়, উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের চংড়াছড়ি এলাকায় সৎ মায়ের কুপরামর্শে পিতা কর্তৃক ৪ কন্যাকে নির্যাতন, হয়রানি, মামলা, বিভিন্ন হুমকি ও ঘর থেকে বের করে দেওয়ায় সু-বিচার ও প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
বুধবার(১১মে) সকাল ১১ টায় উপজেলার হোটেল ইউনিটি সম্মেলন হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের চংড়াছড়ি এলাকার মৃত মোকসেদ আলী হাওলাদার’র পুত্র ৪ কন্যার পিতা মো. সোহরাব হোসেন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ৪ কন্যা মোছা. মারুফা আক্তার (৩২), খাদিজা আক্তার (২৮), জেসমিন আক্তার (২৬) ও সুমাইয়া আক্তার (২১)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাঁরা বলেন, আমাদের আপন মা মৃত পরিতন নেছা গত ১৯ বছর আগে মারা যাবার এক মাস পরই আমাদের বাবা মোঃ সোহরাব হোসেন আমাদের আপন খালা মো. ফাতেমা খাতুনকে বিবাহ করে সংসার করে আসছেন। আমরা তাঁর প্রথম সংসারে চারজন মেয়ে রয়েছি। আমাদের বড় এক বোনের বিবাহ হলেও প্রথম সংসারে বিবাহ উপযুক্ত আরও তিনজন বোন রয়েছি। সৎ মায়ের কুপরামর্শে আমাদের বাবা সোহরাব হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ ভরণপোষণ, লেখাপাড়ার খরচ, দেখাশুনা ও খোঁজ খবরও নেন না। সব সময় মারধর করেন, বাসায় জায়গা দেন না, তাছাড়া মেজো বোন জেসমিন আক্তারকে মেরে তাঁর একটি হাত ভেঙে দিয়েছে বাবা যার চিকিৎসা খরচও দিচ্ছেন না। দীর্ঘদিন ধরেই এরকম অবিচার ও অমানবিক নির্যাতন করে আসছে আমাদের বাবা আমাদের উপর।
প্রায় চার বছর ধরে আমরা অবিবাহিত তিন বোন খাদিজা আক্তার, জেসমিন আক্তার ও সুমাইয়া আক্তার আমরা বড় বোনের জামাতা মো. ফজলুর করিমের বাসায় আশ্রয় গ্রহণ করে আছি। দুলাভাই এর বাসায় থেকে মারুফা আক্তার এসএসসি ,খাদিজা আক্তার রাষ্টবিজ্ঞানে মাস্টার্স, জেসমিন আক্তার ¯œাতক, সুমাইয়া আক্তার এইচএসসি পাশ করি। আমাদের তিন বোনের আশ্রয়, ভরণপোষণ ও লেখাপড়াসহ সকল দ্বায়িত্ব বহন করছে আমার বড় বোনের জামাতা ফজলুর করিম। যে কারনে আমাদের বাবা আমার বোনের জামাতার উপর ক্ষুব্ধ। গত দেড় বছর আগে বোনের জামাতার নামসহ আমাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে আদালতে আমাদের বাবা সোহরাব হোসেন। এ বিষয়ে সামাজিক ভাবে একাধিকবার সালিশ হলেও আমাদের বাবা কোনো সালিশি সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। কিছুদিন আগে চংড়াছড়ি আর্মি ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় খাস জমিতে আমাদের বড় বোন তাঁর জামাতাকে নিয়ে আমাদের জন্য কোনরকম থাকার একটি ঘর তোলার জন্য কাজ করতে গেলে আমাদের বাবা তাঁর দ্বিতীয় সংসারের ছেলেদের সাথে নিয়ে আমাদের বড় বোনের স্বামীকে দাঁড়ালো অস্ত্র দিয়ে মারধর করে। পরবর্তীতে বোনের জামাতা ফজলুর করিমকে চংড়াছড়ি আর্মি ক্যাম্পের সদস্যদের সহযোগিতায় দীঘিনালা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এব্যাপারে আমাদের বাবা সেদিনই দীঘিনালা থানায় বড় বোন ও তাঁর জামাতার নামে মিথ্যে বানোয়াট একটি অভিযোগও করেন। বোনের জামাতা ফজলুর করিমের মাথা, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাঁড়াল অস্ত্র ধারা আঘাত কর করা হয়। বড় বোন মারুফা’র স্বামী সংসার থাকলেও আমরা প্রাপ্ত বয়স্ক অবিবাহিত তিনটি বোন এখন নিরুপায়। বাবার অঢ়েল (কোটি টাকার) সম্পত্তি থাকলেও আমাদের কোনও ভরণপোষণ ও দেখাশুনা করছেন না এবং বাবা আমাদের সন্তান হিসেবে অস্বীকারও করেন। আমাদের বাবা আমাদের সৎ মায়ের কুপরামর্শে আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতন, হয়রানি, মামলার পাশাপাশি পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করছে। আমরা প্রাপ্ত বয়স্ক তিন বোন বর্তমানে নিরুপায়। আমাদের পিতা আমাদেরকে সন্তান হিসেবে স্বীকারও করেন না। আমরা আমাদের অধিকার চাই এবং এ বিষয়ে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন ব্যক্তিদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।