রাঙ্গামাটিতে কৃষকলীগের উদ্যোগে কৃষক হত্যা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও আলোচনা সভা

89

মো. সোহরাওয়ার্দী সাব্বির, রাঙ্গামাটিঃ-‘দেশ বাঁচাও, কৃষক বাঁচাও’ এই শ্লোগানে রাঙ্গামাটিতে পালিত হয়েছে কৃষক হত্যা দিবস।
এ উপলক্ষ্যে জেলা কৃষকলীগের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৫মার্চ) সকালে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
পরে জেলা কৃষকলীগের সভাপতি জাহিদ আক্তার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক উদয় শংকর চাকমার সঞ্চালনায়, সভাপতি জাহিদ আক্তারের সভাপতিত্বে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেলা কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি সদর, পৌর ও উপজেলা কৃষক লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি বলেন, কৃষি প্রধান দেশে যেখানে জমিতে ফসল ফলিয়ে দেশের মানুষকে অন্ন যোগানোর মত মহান ব্রত পালন করে সাধারণ কৃষক, সেই কৃষকের ন্যায্য দাবিতে কেন বুকের রক্ত ঝড়ে! সারের দাবিতে তৎকালিন বিএনপি-জামাত জোট সরকার ১৮ জন কৃষককে তাদের তথাকথিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে চিরনিদ্রায় শায়িত করে। শুধুমাত্র তাই নয় চাপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে ২০০৬ সালে বিদ্যুতের দাবিতে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করে এই ক্যান্টনমেন্ট থেকে সৃষ্ট তথাকথিত জাতীয়তাবাদী সরকার। এবার ২০ জন নিরীহ কৃষক পুলিশের গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হোন। স্বাধীন দেশে একজন কৃষক পরাধীনতার বেড়াজালে কেন আটকে থাকবে?”
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া কৃষক লীগ এই পরিকল্পিত প্রহসনের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ইতিহাস কখনো অত্যাচারীদের ক্ষমা করেনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এম.পি’র নির্দেশে দেশব্যাপী আজ কৃষক হত্যা দিবস পালন করে কৃষকদের ন্যায্য দাবি আদায়ে ও তাঁদের প্রতি সকল অন্যায়ের প্রতিবাদে একাত্মতা পোষণ করা হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে জাহিদ আক্তার বর্তমান সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কৃষক-রতœ জননেন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি কৃষক সমাজের জন্য সারের দাম সহনীয় পর্যায়ে রেখেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ কৃষিতে ঈর্ষণীয় সাফল্য এসেছে। কৃষকদেরকে কৃষি উপকরণ নামমাত্র মূল্যে দিচ্ছে সরকার। সার বীজ খুব সহজে কৃষকেরা পেয়ে যাচ্ছে। আজ দেশের কৃষক ভাইদেরকে সারের জন্যে আন্দোলন করতে হয় না।
পাহাড়ের আজ প্রতিটি আবাদি জমি চাষের জন্য কৃষকেরা সহযোগিতা ও পরামর্শ পাচ্ছে। পাহাড়ের অবিসংবাদিত নেতা দীপংকর তালুকদার এম.পি’র আন্তরিকতায় রাঙ্গামাটির দশ উপজেলাতেই কৃষক তাঁর ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে। কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য বিশেষায়িত হিমাগার নির্মাণের দাবি বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে। কৃষিপণ্য পরিবহন ও বিপনন সহজতর করতে কাজ করছে বর্তমান সরকার।
কৃষক লীগ কৃষকদের জন্য ছিলো, আছে এবং থাকবে এই আশাবাদ ব্যক্ত করে দলীয় কার্যালয়ে এই সভার সমাপ্তি করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালে মার্চ মাসে সারের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় সার কিনতে গিয়ে নির্মমভাবে পুলিশের গুলিতে ১৮ জন কৃষক নিহত হওয়ার প্রতিবাদে ১৫ মার্চ কৃষক হত্যা দিবস পালিত হয়।