বান্দরবানের বটতলী পাড়ায় নতুন ঘরে উঠে আনন্দিত অসহায় বৃদ্ধা মা

126

রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবানঃ-দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ। যার অর্থ একতাই বল। এমন প্রবাদ বাক্যটি বাস্তবে রূপ নিয়েছেন বান্দরবানে। এই যেন ভিন্ন ধরণে মানবতা সেবার উদ্যোগ।
সুত্রে জানা যায়, গেল বছরে ২৫ তারিখে সা অং মারমা নামে এক সমাজ সেবক বান্দরবানের গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন (গ্রাউস) প্রজেক্টের নিয়মিত কর্মী, ফিল্ডের কাজে আসলে তার নজরে পড়ে ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে বৃদ্ধা মায়ের কষ্টের কাঁঠা জীবন। এতে ১ তারিখে নিজ উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করলে কয়েকদিনের মধ্যে ভাইরাল সৃষ্টি হয়। তারপর বিভিন্ন মহল থেকে অর্থ আসতেই থাকে। এক সময়ে একটি নতুন টিনশেড বাড়ি নির্মাণ করে দেয় সা অং সহ কয়েকজন যুবক। ১৫ তারিখে বাড়ি নির্মান কাজ শুরু করলে এক সপ্তাহর ব্যবধানে বৃদ্ধা মাকে নতুন ঘর বুঝিয়ে দেন যুব সমাজের সদস্যরা। এতে খুশী ও আত্মহারা বুড়ি মা। গ্রামবাসীও উদ্যোক্তাদেরকে সাধুবাদ জানান।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারী) বান্দরবানের সদর উপজেলা ২নং কুহালং ইউনিয়নে ৭নং ওয়ার্ডের বটতলী পাড়া গ্রামে বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতি অনুসারে বৃদ্ধা মাকে নতুন ঘর হস্তান্তর করা হয়।
বটতলী বাঘমারা গ্রামবাসী উসানু মার্মা জ্যকশন বলেন, বহুদিন যাবৎ বৃদ্ধা মহিলার বাড়িটি ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে ছিল। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে বৃদ্ধা মায়ের করুণ অবস্থা দেখে উদ্যোগ নিতে শুরু করি। আজ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকভাবে বৃদ্ধা মার নিকট নতুন ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
গ্রামবাসী শৈমংসিং মারমা বলেন, অবেকদিন ধরে ভাঙ্গা ঘরে পড়েছিল। আজ যুব সমাজের উদ্যোগে বৃদ্ধা মাকে নতুন ঘর হস্তান্তর করেছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সাধুবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। গ্রামবাসী উম্যানু মারমা বলেন, নতুন ঘর পেয়েছে বৃদ্ধা মা। তাতে এলাকাবাসী আনন্দিত। আমরাও আনন্দিত।
প্রধান উদ্যোক্তা সা অং মারমা বলেন, অফিসের কাজে ফিল্ড ঘুরার সময় বৃদ্ধ মহিলার ঘরটি ভেঙ্গে যাওয়া অবস্থায় দেখতে পায়। বৃদ্ধ মহিলার করুণ এই অবস্থায় দেখে আমি উদ্যোগ নিয়েছি। পরে সামাজিক যোগাযোগে প্রকাশ করলে এগিয়ে আসে অনেকে। তাদের সাহায্য আজ বৃদ্ধ মহিলাটিকে নতুন ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য নতুন ঘর, কাপড়, চাউল, কম্বলসহ প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া হয়েছে। যারা আমার পাশে ছিলেন, সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আগামীতেও চেষ্টা করব যাতে কোন সন্তান হারা বৃদ্ধা মার কষ্টে জীবন না কাটে।
উপকারভোগী বৃদ্ধ স্যামা প্রু মারমা (৮০) বলেন, আমার রক্তে সম্পর্কে আপন বলতেই কেউ নাই। এই দু:খের ভরা জীবন দেখে কয়েকজন সমাজ সেবক আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। যারা আমাকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের সকলকেই কৃতজ্ঞতা ও আশির্বাদ করি।
বান্দরবান ২নং কুহালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সানু প্রু মারমা বলেন, বৃদ্ধ মহিলাটিকে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়েছে এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যথাযথভাবে সহযোগীতা করা হবে।