দুই প্রজাতির ছাগলের জাত থেকে “মেড ইন কাপ্তাই” নামে নতুন ছাগলের জাত উদ্ভাবন

89

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাইঃ-কাপ্তাই ছাগলের খামার করে সফল হয়েছে কাজী আকিদুর রহমান। সখের বসে ঘরের নিচে গড়ে তুলেছে ছাগলের খামার। তাঁর খামারে হরিয়ানা, তোতা ও বিটল প্রজাতির ছাগলের জাত রয়েছে। এছাড়াও তিনি হরিমানা ও তোতা জাতের শংকরায়ন করে নিজস্ব একটি নতুন জাত বানিয়েছেন। যার নাম দিয়েছেন “মেইড ইন কাপ্তাই”।
এ-ছাগলের বৈশিষ্ট হলো এরা ১১ মাসে ২ বার বাচ্চা দেয়। আবার ১৭ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এরা গর্ভধারণ করতে পারে। আর অন্য প্রজাতির ছাগলের জাতগুলো বছরে ১ বার গর্ভধারণ করে। তাছাড়া অন্য জাতের ছাগলগুলো ১৪ বা ১৫ মাসে ২ বার বাচ্চা দেয়।
খামারী কাজী আকিদুর রহমানের দু’জাতের ছাগলের সংমিশ্রণে বানানো নতুন জাতের ছাগল রয়েছে বর্তমান ৩২টি। আর আগের হরিয়ানা ও তোতা জাতের ছাগল রয়েছে ৪টি।
সে মুলত ২০০২ সাল থেকে এই ছাগল পালন শুরু করেছেন। দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি কাপ্তাই লকগেইটে তার বাসার নিচে ছাগলের খামার গড়ে তুলেছেন। তাঁর এই ছাগল লালন-পালনের মাধ্যমে প্রতি মাসে তিনি সব খরচ বাদ দিয়ে ৬০ হাজার টাকা লাভ করেন, যা বছর শেষে তাঁর লাভ হয় ৭ লাখ টাকার উপরে। তবে এই ছাগল পালনের জন্য এবং নতুন জাত উদ্ভাবন এর জন্য তিনি উপজেলা প্রাণী সম্পদের কারো কাছ থেকে সহযোগিতা না নিয়ে একাই করেছেন খামারটি।
গত বুধবার কাপ্তাই লগগেইটে তাঁর খামারে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি জানান, আমার কর্মের পাশাপাশি নিজেকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু কি করব তা বুঝে উঠতে পারছিনা। হঠাৎ একদিন আমার মাথায় আসল অল্প পুজিতে ছাগলের খামার করা যায়। আমি ২০০২সাল থেকে এ খামার করেছি। দুই প্রজাতির ছাগলের সংমিশ্রণে একটি নতুন জাত তৈরি করেছি যেটির নাম দিয়েছি মেইড ইন কাপ্তাই। আমার বাৎসরিক আয় ৭ লাখ টাকার উপরে। আমার এই খামার ভবিষ্যৎতে আরো বড় করার পরিকল্পনা রয়েছে। যদি সরকারি কোন জায়গা ব্যবস্থা হয়, তাহলে আরোও বড় পরিসরে ছাগলের খামার করতে পারব। এ-খামার থেকে তিনি গত ডিসেম্বর মাসে ১৪টি বাচ্চা পেয়েছেন এবং এই জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারীতে আরো ২০-২৫টি বাচ্চা পাবেন বলে আশা করেন।
কাজী আকিদুর রহমান কাপ্তাই উপজেলার একজন সফল ফুটবল খেলোয়ার হিসাবে সু-পরিচিত। তিনি চট্টগ্রাম ও ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে অংশ নিয়েছেন। এই খেলার সুবাধে তিনি সেনাবাহিনীর একটি বেঙ্গলের ফুটবল কোচিং করাতে যশোরে যান। সেইখান হতে হরিয়ানা ও তোতা-২ জাতের ছাগল এনে খামার শুরু করেন। এরপর তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়।
স্থানীয়রা বলেন, অল্প পুঁজি দিয়ে ছাগলের খামার শুরু করে এই আকিদুর রহমান এখন আদর্শিক খামারি। তার এমন পরিবর্তন এলাকার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার দেখায় অন্য যুবকরাও এই একাজে উদ্বুদ্ধ হবে। ফলে বেকারত্ব দূরীকরণে স্বচ্ছলতা ফিরবে সমাজে।
এই প্রসঙ্গে কাপ্তাই উপজেলা প্রাণী সম্পদ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এনামুল হক হাজারী জানান, আকিদুর রহমানসহ এইসব কাজে যাঁরা এগিয়ে আসে আমরা সবসময় তাদেন সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছি এবং করবো। তিনি যেন, প্রাণী সম্পদ দপ্তরে যোগাযোগ রাখেন এই বিষয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।