কাউখালী প্রতিনিধিঃ-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সারাদেশের ন্যায় পার্বত্য এলাকার শ্রমিকদের উন্নয়নে বর্তমান সরকার ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহন করেছে। জাতির জনক বলেছিলেন বাংলাদেশের কেউ না খেয়ে মরবে না। তিনি সবসময় শ্রমিকদের উন্নয়নে কাজ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন শ্রমিক এবং মালিকদের মধ্যে ভালো সর্ম্পক থাকলে দেশে উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে না। সরকার শ্রমিক এবং শিল্প কলকারখানার উন্নয়নে ব্যাপক কাযক্রম গ্রহন করেছে। শ্রমিকদের মজুরী বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশে শ্রম আইন প্রনয়ন করা হয়েছে। জাতির পিতা ১৯৭২ সালে শ্রমনীতি প্রণয়ন করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি শ্রম পরিদপ্তর এবং ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন পরিদপ্তরকে একত্রিত করে শ্রম পরিদপ্তর গঠন করেন। অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে তিনি পরিত্যক্ত কল-কারখানা জাতীয়করণের পাশাপাশি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারীর সময়েও আমরা দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। মানুষকে সরাসরি নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছি। তিনি বলেছেন বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে অনেক শিল্প কলকারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন আমরা সেগুলোকে আবার পুনরায় শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও বেতন বৈষম্য দুর করা হয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা যাতে দেশের অথনৈতিক উন্নয়নে অবদাান রাখতে পারে সেদিকে নারী বান্ধব অনেক প্রতিষ্টান গড়ে তোলা হয়েছে। মালিকদের যেমন শ্রমিকদের সুবিধা-অসুবিধা দেখতে হবে, শ্রমের ন্যায্য মূল্য এবং পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে তেমনি শ্রমিকদেরও দায়িত্ব থাকবে কারখানাটা সুন্দরভাবে যেন চলে এবং উৎপাদন বৃদ্ধি পায়,
তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, যে কারখানা আপনাদের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে, সেই কারখানার প্রতি আপনাদের যতœবান হতে হবে।
দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য কিছু কিছু শ্রমিক নেতা বা কোন কোন মহল উস্কানি দেয় এবং একটা অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে। এগুলোর ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। ২০০৯ সালে আমরা সরকারে গঠন করে ৪২টি শিল্প সেক্টরে কর্মরত শ্রমজীবী মানুষের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছি। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব শিল্প কারখানাসমূহে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি (স্কেল ভিত্তিক) ৪ হাজার ১৫০ টাকা হতে বাড়িয়ে ৮ হাজার ৩০০ টাকায় নির্ধারণ এবং তৈরি পোশাক শিল্প কারখানাসমূহে কর্মরত শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি (স্কেল ভিত্তিক) ১ হাজার ৬৬২ টাকা হতে পর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতির গতিকে বেগবান ও টেকসই করার মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বির্নিমাণ এবং বিশ্বে প্রতিযোগিতামূলক অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধকরণে ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড, ২০২০’ প্রবর্তন করা হয়েছে। সকল ক্ষেত্রে গ্রীন ফ্যাক্টরী নিমান করা হয় সেদিকে সরকার সকল ধরনের সহযোগীতা করে যাচ্ছে। পরিবেশ বান্ধব গ্রীন ফ্যাক্টরী করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
তিনি বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে শ্রম অধিদপ্তরাধীন “দেশের পাবত্য অঞ্চলের শ্রমিকদের কল্যান সুবিধাদি ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারন এবং জোড়দারকরনে একটি বহুবিধ সুবিধাসহ শ্রম কল্যান কমপ্লেক্সে নির্মান প্রকল্পের” আওতায় কাউখালীর ঘাগড়ায় শ্রম কল্যান কমপ্লেক্স এর নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্টানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণণালয় মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এসময় অন্যান্যর মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এসময় কাউখালীর ঘাগড়ায় অনুষ্টিত ভিডিও কনফারেন্সে রাঙ্গামাটির প্রান্তে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, খাদ্য মন্ত্রনালয় সম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি, রাঙ্গামাটি পাবত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো; মিজানুর রহমান, পাবত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য হাজী কামাল উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো; মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, কাউখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সামশুদোহা চৌধুরী, উপজেলা নিবার্হী অফিসার নাজমুন আরা সুলতানা, শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা; রাজীব চৌধুরী ও রোমানা আক্তার, আব্দুস সবুরসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি ও সাংবাদিকরা। জানা যায়, প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেনা কল্যাণ সংস্থা ভবনটির কাজ সম্পন্ন করে।