কাপ্তাইয়ে হেমন্ত বন্দনা ও পিঠা উৎসব “পালা পার্বণে নবান্ন”

134

ঝুলন দত্ত, কাপ্তাইঃ-সেদিন আকাশে ছিল মেঘ, ছিল বৃষ্টির হাওয়া- অসময়ে মুষলধারে এই বৃষ্টি দমাতে পারে নাই একটুকুও প্রাণের উচ্ছ্বাস। তাইতো এই বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে গত সোমবার বিকেলে কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের মিলনায়তনে জড়ো হয়েছিল শ’ পাঁচেক শিল্পি, সংস্কৃতিনুরাগী, আমন্ত্রিত অতিথি। সকলের বর্ণিল সাজে উপস্থিতি জানান দে, আমরা বাঙালী, হেমন্ত আমাদের প্রিয় ঋতু, পিঠা পায়েস আমাদের বাঙালী সংস্কৃতির একটি অনুষঙ্গ।
কাপ্তাই উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি, কাপ্তাইয়ের এই নান্দনিক আয়োজনে ছিল হরেক রকম পিঠার আয়োজন। ৬টি স্টলে পিঠা, কারুশিল্প প্রর্দশন সত্যিই সেইদিনের আয়োজনকে আরোও প্রানবন্ত করে রেখেছে। বিশেষ করে কাপ্তাই অনলাইন বেচা কেনা ফোরামের স্টল গুলো ছিলো চোখে পড়ার মতো। তাদের স্টলে পৌষ ছিল হেমন্ত থিম কেক।
এছাড়া রেড ভেলভেট জার কেক, চুই পিঠা, প্রিন্টেড পাটিসাপটা, হোমমেড কেক বিবিখানা পিঠা, দুধ চিতই, ঝাল পিঠা, কালোজাম, বিবিখানা পিঠা, তিলের পিঠা, খোলাজা পিঠা, গুড়া দুধের সন্দেশ, গুড়ের পায়েসসহ আরোও অনেক আইটেমে ভরপুর ছিল তাদের স্টলটি। নিমিষেই সব পিঠা বিক্রি হয়ে যায়। পাশের আরোও দুইটি স্টলে কারু ও হস্ত শিল্প নজর কাড়ে দর্শকদের। মঞ্চের অদূরে গরম গরম ভাপা পিঠা ও চিতল পিঠার আয়োজন ছিল অনুষ্ঠানের আরোও একটি আর্কষনীয় দিক।
সেইদিনের সেই হেমন্ত বন্দনায় প্রধান আর্কষণ ছিল কাপ্তাই উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় হেমন্ত ঋতুকে নিয়ে গান, কবিতা, নৃত্য, কোরিওগ্রাফ। প্রখ্যাত ঢোল বাদক টিভি শিল্পি শিবু দাশের একক ঢোল বাদনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শ’ দেড়েক শিল্পির অংশগ্রহণে যা রাত ৮ পর্যন্ত আগত দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন।
বাচিক শিল্পী রওশন শরীফ তানি ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক ঝুলন দত্তের সঞ্চালনায় কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মুনতাসির জাহান এর সভাপতিত্বে এসময় অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই নৌ বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ কমান্ডার এম নূরে আলম ছিদ্দিকী, সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ মঈনুল হোসেন চৌধুরী, কর্ণফুলি সরকারি কলেজ এর অধ্যক্ষ এ এইচ এম বেলাল চৌধুরী, বিশিষ্ট প্রাবন্ধীক ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরী, পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী, কাপ্তাই থানার ওসি মোঃ নাসির উদ্দীন, চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ প্রবীর খিয়াং, কাপ্তাই নৌ বাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ এর উপাধ্যক্ষ এম জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের মাসুদ, সহকারী তথ্য অফিসার মোঃ হারুন, ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক ফয়সাল আমীন কাদেরী, চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালে কমিউনিটি হেলথ প্রোগ্রাম এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার বিজয় মারমা, বড়ইছড়ি কাদেরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়সীম বড়ুয়া। স্বাগত বক্তব্য রাখেন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির যুগ্ম সম্পাদক মংসুইপ্রু মারমা।
ওস্তাদ রাজেশ সাহা ও জ্যাকলিন তনচংগ্যার সংগীত পরিচালনায় ও সংগীতা দত্ত এনির নৃত্য পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির এক ঝাঁক শিল্পীর কন্ঠে সমবেত সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন ছাড়াও অনুষ্ঠানে একক, দ্বৈত সংগীত, আবৃত্তি, কোরিওগ্রাফ ও যন্ত্র সংগীতে অংশগ্রহণ করেন উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি ইউএনও মুনতাসির জাহান, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই থানার ওসি মোঃ নাসির উদ্দীন, শিল্পী রাজেস সাহা, মংসুইপ্রু মারমা, মোঃ রফিক, বিপুল বড়ুয়া, রওশন শরীফ তানি, জ্যাকলিন তনচংগ্যা, মো শাহা আলম, মুক্তাদির আহমেদ শাহীন, বসুদেব মল্লিক, স্বরাজ সাহা, লিপি দাশ, কামাল উদ্দিন মানিক, শুদ্ধশ্রী রায় বর্ণ, ঝুলন দত্ত, অভিজিত দাশ কিষান, নাসির উদ্দীন মিনহাজ, অনিন্দ্য পাল, অর্নিবান দত্ত শুভ্র, নব বড়ুয়া।
মঞ্চ সজ্জা ও পিঠা পুলি ব্যবস্থাপনায়ঃ আনিছুর রহমান, মাহাবুব হাসান বাবু, নুর বেগম মিতা, লাকি তনচংগ্যা, সরোয়ার হোসেন, ফেরদৌস আক্তার, দীপক কুমার দে, এমরান হোসেন ও উৎসব দাশ। শব্দ নিয়ন্ত্রণ ও আলোর প্রক্ষেপনঃ এমরান হোসেন ও রুবেল।