পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক নয়-জনসংহতি সমিতি

147

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সম্পাদিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক নয়’ বলে অভিযোগে করেছেন জনসংহতি সমিতির নেতারা। নেতারা বলছেন, ‘চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ার ফলে পাহাড়ে হানাহানি বন্ধ হচ্ছে না। এতে করে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানুষ ভয়, আতঙ্ক আর উদ্বেগের মধ্যদিয়ে দিন কাটাচ্ছে পাহাড়ের মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাঙ্গামাটি শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) আয়োজিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থবিরোধী সকল কার্যক্রম প্রতিরোধ করুন; জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জুম্ম ছাত্র ও যুব সমাজ অধিকতর সামিল হউন’ এই শ্লোগানে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব অভিযোগ করেন নেতারা।
চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি নেতা ডা. গঙ্গা মানিক চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন, আদিবাসী ফোরামের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারন সম্পাদক কমরেড অশোক সাহা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রিয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক ম্রাউনু মারমা, কেন্দ্রিয় কমিটির পিসিপি সভাপতি সমুন মারমা প্রমুখ।
আরও অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য মেঞচিং মারমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ভবতোষ দেওয়ান, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুশল চৌধুরী, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সদস্য সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমন মারমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ম্রানু মারমা। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- জনসংহতি সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সদস্য এবং বরকল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শ্যাম রতন চাকমা।
এসময় জনসংহতি সমিতির নেতারা আরো বলেন, পার্বত্য চুক্তি একদিন না একদিন অবশ্যই পূর্ণ বাস্তবায়িত করতে হবে। আমাদের সেই লক্ষেই এগিয়ে যেতে হবে। আজ এই বিজয়ের মাসেও পার্বত্য চট্টগ্রামের পীড়িত মানুষের মধ্যে রাগ-ক্ষোভ-হতাশা বিরাজ করছে। জাতির অভ্যন্তরে বৈষম্য দিনে দিনে তিলে তিলে বড় হচ্ছে। এদেশের সকল জাতিগোষ্ঠীকে যথাযোগ্য মর্যাদায় সম্মান দিয়ে স্বীকৃতি দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। যারা রাষ্ট্র চালায় তারাই পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাগুলো সমাধানে এগিয়ে আসছে না।
নেতারা আরো বলেন, আমাদের পিছিয়ে থাকার আর কোন সুযোগ নেই। চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে জনসংহতি সমিতিকে শক্তিশালী করতে হবে। এখন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথাগত আইনকে বাতিল করার চক্রান্ত চলছে। আমরা সরকারের কাছে এখানকার প্রথাগত আইন বাতিল না করার অনুরোধ জানাচ্ছি। সভায় নেতারা কালক্ষেপন না করে শান্তিচুক্তি যেসব ধারা অবাস্তবায়িত হয়ে আছে তা অতিসত্ত্বর বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার আহবান জানান।