নানিয়ারচর প্রতিনিধিঃ-‘সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া বাংলাদেশের যেকোন বৌদ্ধ বিহারে উন্নয়ন সম্ভব নয়। সেজন্য যতটুকু সম্ভব বিহার উন্নয়ন পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকার সমস্যা চিহ্নিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এলাকার উন্নয়ন করার চেষ্টা করা হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) রাঙ্গামাটি নানিয়ারচর উপজেলার ঘিলাছড়ির জুরাছড়ি বেনুবন অরণ্য কুটিরে অনুষ্ঠিত প্রথম দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসবে তিনি একথা বলেছেন।
ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কঠিন চীবর দান উপলক্ষে শুক্রবার শুরু হয়ে শনিবার (১৩ নভেম্বর) দিনব্যাপী কর্মসূচিতে অনুষ্ঠিত হয় নানা দানীয় যজ্ঞ। গৌতম বুদ্ধের প্রধান সেবিকা মহাপুণ্যবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত কঠিন চীবরকে ঘিরে বুদ্ধপুজা, বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কঠিন চীবর দান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, সুত্রপাঠ, ধর্মীয় দেশনা, কল্পতরু প্রদক্ষিণ ও ফানুস বাতি উৎসর্গসহ নানাবিধ দান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দানোৎসবকে ঘিরে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো পুণ্যার্থীর ঢল নামে। বিশ্বের সকল প্রাণীর হিতসুখ ও মঙ্গল কামনায় এবং মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে পরিত্রাণের জন্য নিরবতা (ভাবনা) ও মঙ্গল কামনা প্রার্থনা করেন পুণ্যার্থীরা। হাজারো পুণ্যার্থীদের ভক্তি ও শ্রদ্ধায় মুখর হয়ে উঠে পুরো বিহার প্রাঙ্গণ।
দুপুরে কল্পতরু ও কঠিন চীবরকে পুরো বিহার এলাকা প্রদক্ষিণ করে আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। পরে
ভিক্ষু সংঘকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে উদ্বোধনী ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে শুরু হয় নানা ধর্মীয় দানীয় উৎসর্গপর্ব। নিশা চাকমার (মুনিক্কো) অনুষ্ঠান পরিচালনায় অনুষ্ঠানে পঞ্চশীল পাঠ করেন অমরেশ শেখর চাকমা ও রূনা চাকমা।
এসময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ইলিপন চাকমা, সাবেক উপমন্ত্রী মনিস্বপন দেওয়ান ও শ্বাসতী খীসা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জুরাছড়ি বেনুবন অরণ্য কুটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি রূপায়ন চাকমা। এসময় অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ঝর্ণা খীসাসহ বিহার পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
ধর্মীয় সভায় বনভান্তের অমৃতময় বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে পুন্যার্থীদের উদ্দেশে ধর্ম দেশনা দেন, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান ও বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির, কাটাছড়ি রাজবন ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির, রাজবন বিহারের সিনিয়র ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির ও তক্ষশীলা বনবিহারের সিনিয়র ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ মহামিত্র ভিক্ষুসহ অন্যান্য প্রমূখ ভিক্ষু।
নিখিল কুমার চাকমা আরো বলেন, ‘অফিসে আবেদন দিবে এবং তা দেখে উন্নয়ন করবো তা নয়। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে বিহার উন্নয়নে এগিয়ে আসা সকলের একান্ত দায়িত্ব।