বাঙ্গালহালিয়াতে ঐতিহ্যবাহী জরাজীর্ণ সনাতন ঋষি আশ্রমঃ অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী

99

হারাধন কর্মকার, রাজস্থলীঃ-রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার দীর্ঘ ৩০ বছর পূর্বে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালহালিয়া সনাতন ঋষি আশ্রমটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে আছে। আশ্রমটির বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে আগাছার জঙ্গল। মাঝখানে জায়গাটিতে আশ্রমটি প্রতিষ্ঠিত।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহারাজের বসত ঘরসহ আশ্রমে থাকা ছাত্র-ছাত্রীদের বসবাস ও দর্শনার্থীদের বসার জায়গাটি যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আশংখ্যা রয়েছে। জায়গার পেছনের দিকে সীমানা প্রাচীন ও নির্মাণ করা হয়নি। এই জরাজীর্ণ সনাতন ঋষি আশ্রমেই রয়েছে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান। ঐতিহ্যমন্ডিত এই আশ্রমের বেহাল দশায় দৈনিক দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আশা ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে উপনায়ক নামক একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসে ভক্তরা অনেকে ব্যাপারে ক্ষোভের কথা জানান।
বাঙ্গালহালিয়া সনাতন ঋষি আশ্রমে ভক্ত উপজেলা আ. লীগের সহ-সভাপতি বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, রাজস্থলী উপজেলায় কোন আশ্রম ছিলো না। ভক্তদের সহযোগিতায় ৩২০ কাকড়াছড়ি মৌজায় খাস জায়গা ক্রয় করে আশ্রম তৈরি হয়। শুরুতেই দুইচালা টিনের চালের একটি মহারাজের বসত ঘর এবং একটি মন্দির স্থাপন করা হয়েছে। আশ্রমটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর চলতি অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে একটি মন্দির উন্নয়ন কাজ শুরু হয় যা চলামান রয়েছে। তবে অতিথি শালা ও মহারাজের বসত ঘর এবং আশ্রয় থাকা প্রায় ২০-৩০ জন ত্রিপুরা ছাত্র-ছাত্রীরা জরাজীর্ণ ঘরে থেকে লেখাপড়া করছে।
বাঙ্গালহালিয়া সনাতন ঋষি আশ্রমে অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী সনাতন ঋষি মহারাজ বলেন, অনেকটা ভক্তদের সহযোগিতায় আশ্রমটি পরিচালিত হচ্ছে। গত দুই বছর আগে বর্তমান রাঙ্গামাটি আসনের সংসদ সদস্য জননেতা দীপংকর তালুকদার এমপি আশ্রমের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে এসে একটি ডিপ টিউবওয়েল দেন এবং আশ্রমের মন্দিরটি নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন করেন। মন্দিরের কাজ চলমান আছে বলে জানান। তবে দূর দূরান্ত থেকে দৈনিক ভক্তরা আসলে বসার মতো একটি স্থান দিতে পারছি। সেই দীর্ঘ বছর আগে নির্মিত জরাজীর্ণ বেড়ার ঘরে বসতে দিতে হয়। আশ্রমে নেই কোন শৌচাগার।
বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঞোমং মারমা বলেন, তিন বছরে আশ্রম চত্বরের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হচ্ছে। আশ্রমের মন্দির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। তবে আশ্রমে অতিথি শালা ও মহারাজের বসত ঘর ও আশ্রমে ছাত্র-ছাত্রীদের থাকার একটি ছাত্রাবাস নির্মাণ করা জরুরি এবং শৌচাগারের প্রযাপ্ত অভাব রয়েছে বলে জানান। তাই আশ্রমটির অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরী বলে তিনি ও মনে করেন।
রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ.লীগের সভাপতি উবাচ মারমা বলেন, রাজস্থলী উপজেলার মধ্যে বাঙ্গালহালিয়াতে সনাতন সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে অধিকাংশ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। আশ্রমটির উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।