সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, বিলাইছড়িঃ-বিলাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল ও চিকিৎসার সরঞ্জাম চরম সংকটে এবং স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও রোগীর অবিভাবক ও স্থানীয় জনগণ।
এইসব বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রশ্মি চাকমা সঙ্গে কথা হলে তিনি আরো জানান, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাধীন বিলাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা উন্নিত করে বিগত ১৬/০৯/২০২০ খ্রি. তারিখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, শুধু ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জন্য জনবল দরকার ১০৫ জন। তার মধ্যে মাঞ্জুরীপদ ৫৯। শূন্য পদ ৪৬ জন। আর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জন্য জনবল হওয়া উচিত ১৫৩ জন শূন্য পদ ৯৪ জন, প্রেষণে রয়েছেন ৫ জন।
তিনি দুঃখের সাথে জানান, শুধু ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে জনবল-ই নেই এই হাসপাতালে। এছাড়া সবচেয়ে বেশী দরকার ডাক্তার, নার্স ও ক্লিনার। করোনাকালে একদিকে টিকা দেওয়া অন্যদিকে রোগী সেবা দেওয়া যা কম জনবল নিয়ে সেবা দেওয়া খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের।
এছাড়াও হাসপাতালে নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি এবং ওষুধপত্র। তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য হলো- এ্যাম্বুলেন্স, ডেন্টাল, আইসিইউ ও বিদ্যুতের সুব্যবস্থা, চেক-আপ, এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম বা সনোগ্রাফি মেশিন।
অন্যদিকে রোগীর অবিভাবক ও স্থানীয় ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষেরা জানান, দূর্গম পাহাড়ি এলাকার মানুষের দূর্ভোগ সবচেয়ে বেশি।জীবন বাঁচাতে মানুষ হাসপাতালে যায়।
দূর্গম এলাকা হতে কোন রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছাতে সময় লাগে ৮-১০ ঘন্টা, কোন কোন সময় বেশিও লাগে। ভাড়াও বেশি দিতে হয়। প্রথমে কাঁধে করে হেঁটে এরপরে পরে ভেলা তারপরে নৌকা ও কান্ট্রি বোটে পৌঁছাতে হয়।
এভাবে কষ্ট করে রোগীকে কোনরকম উপজেলা হাসপাতালে পৌঁছালে সেখানে চিকিৎসা সুব্যবস্থা এবং জরুরি বিভাগ চালু না থাকার কারণে রেফার করে দেওয়া হয় জেলা হাসপাতালে কিংবা নিতে হয় শহরে অন্য কোন হাসপাতালে। যার ফলে জেলা সদরে যেতে ভাড়াও প্রায় ২৫০০-৩০০০ টাকা আর শহরে প্রায় ৫০০০ টাকা। তাই রোগীদের বাঁচানো খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। ডেলিভারি ও মুমূর্ষু রোগীর বেলাইতো কথাই নেই। তাই কোভিত রোগী মারা গেছে তিন জন এবং কোভিত থেকে ছেড়ে উঠা একজন। বাধ্য হয়ে ডেলিভারি রোগী বা নবজাত শিশু ও মা এরকম কয়েক জনকেও রেফার করা হয়েছে বলে জানা যায়।
এইসব বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা জানান, হাসপাতালটি নির্মান করা হলেও এখনো পূরণ করা হয়নি জনবল। চিকিৎসার জন্য যত জন ডাক্তার-নার্স দরকার তত জন ডাক্তার, নার্স নেই। সেবার মান বৃদ্ধি করার জন্য দরকার আরো ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য কর্মচারী। তাছাড়াও প্রয়োজন আরো প্রয়োজনীয় চিকিৎসার সরঞ্জাম ও ওষুধপত্র।
তাই তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানে সেবার কার্যক্রম বৃদ্ধি ও পরিচালনার জন্য জনবল সৃষ্টিসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধপত্র নিয়মিত সেবাদানে বিলাইছড়ি উপজেলাবাসীর পক্ষ হতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেন।