আগামীকাল থেকে খুলছে পাহাড়ের সকল পর্যটন কেন্দ্রঃ পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত

267

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-বৈশ্বিক মহামারি করোনা বিপর্যয়ের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল থেকে খুলছে পাহাড়ের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এতে পর্যটন স্পট সংশ্লিষ্টরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
পর্যটন কেন্দ্র খোলার সার্বিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন হোটেল মোটেল ব্যবসায়ীরা। তবে মাস্ক পরিধান ছাড়া পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করা যাবে না। পর্যটকদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
এর এতে করে এখানকার হোটেল-মটেল, রেস্তোরা, সরকারি-বেসরকারি পর্যটন স্পটগুলোর সাথে জড়িত মানুষদের মধ্যে ফিরতে শুরু করেছে চাঞ্চল্য। পর্যটকদের বরণে সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহন করেছে রাঙ্গামাটির হোটেল-মোটেলগুলো। পর্যটকদের আগমন ঘিরে নিরাপদ ভ্রমণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরাও।
যান্ত্রিক জীবনের একটু ক্লান্তি দুর করতে বিনোদনের খোঁজে মানুষ ছুটে আসেন পাহাড় হ্রদ ঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক লীলাভুমি রাঙ্গামাটিতে। কিন্তু টানা দীর্ঘদিন পর্যটক শূণ্য থাকায় মারাত্মক মন্দা দেখা দেয় পর্যটন ব্যবসায়। রাঙ্গামাটি চেম্বারের হিসাবে, জেলায় পর্যটনের পাঁচটি খাতে দিনে গড়ে অন্তত সোয়া দুই কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের ধারণা দেশের পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ায় দীর্ঘদিনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে।
রাঙ্গামাটিতে পর্যটন ঝুলন্ত ব্রিজ, পলওয়েল পার্ক, রাঙ্গামাটি শিশু পার্ক, হ্যাপি আইল্যান্ড, সুবলং ঝর্ণা, পেদা টিং টিং, ইকো ভিলেজ, বন বিহার, রাজবাড়ি, আরণ্যক, বড়গাঙসহ নানা বিনোদন স্পটগুলোতে সারা বছরই পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে।
কাপ্তাই লেকের বোট মালিক আলাউদ্দিন টুটুল জানান, দীর্ঘদিন পর্যটন ব্যবসা বন্ধ ছিলো। আমাদের বোটের চালকরা এতদিন বেকার ছিলো। তবে তাদের নিয়মিত বেতন দিতে হয়েছে। সরকার দেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার কারণে আমরা এই বেকার সময়ে বোটের সৌন্দয্য বৃদ্ধি রং ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে যাান্ত্রিক কাজ সেরে রেখেছি।
রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ম্যানেজার সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, সরকারি ঘোষণানুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাঙ্গামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স খুলার প্রস্তুতি নিয়েছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটকদের সেবা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছি। দীর্ঘদিন পর কর্মচারীরা মনের খুশিতে কাজ করছে। আমরা আশাবাদী আমাদের লক্ষ মাত্রা পূরণ করতে পারবো।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ১৯ আগষ্ট জেলার পর্যটন স্পটগুলো খুলে দেয়া হচ্ছে। পর্যটকরা অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘুরতে যাবেন। এটা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট পর্যটন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রতিদিনই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। আর পর্যটকদের নির্বিঘ্নে রাঙ্গামাটি ভ্রমণে পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাঙ্গামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘের ঝুলন্ত সেতুকে ঘিরেই। তাই পর্যটকেরা প্রথমেই ছুটে যান পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায়। বছরে প্রায় দুই লাখ দেশি ও বিদেশি পর্যটক সেতুটি দেখতে আসেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের উপচে ভিড় থাকে। এছাড়া শহরের পুলিশের ‘পলওয়েলপার্ক’, ডিসির ‘রাঙ্গামাটি পার্ক’ সেনাবাহিনীর ‘আরণ্যক’, সুভলং ঝর্ণা, সুখীনীলগঞ্জ ও রাজবন বিহার এলাকায় প্রতিনিয়ত ভিড় জমান বেড়াতে আসা পর্যটকরা। এছাড়া বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে আকর্ষণীয় ‘সাজেক ভ্যালি’ পর্যটকদের বেশী সমাগম হয়।