বান্দরবান ও রোয়াংছড়ি প্রতিনিধিঃ-ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের তালুকদার পাড়ার ৭০টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১৮ মে) রাত ১টার দিকে পাড়াটির মধ্যভাগের একটি ঘরের চুলার আগুন থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। মুর্হুতে আগুন পুরো পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে এতে পাড়ার ৭০টি বসতঘরসহ ৩টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সূত্রে জানা গেছে, তারাছা ইউনিয়নে ৩নং ওয়ার্ডে তালুকদার পাড়া বাসিন্দা থোয়াইহ্লাপ্রু মারমা বাড়ির চুলার থেকে আগুনের সূত্র পাত ঘটেছে বলে গ্রামবাসিরা ধারণা করা হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্তকারী উচিংনু মারমা, ক্যশৈথোয়াই মারমা, উম্রাচিং মারমা, ওয়াংম্রাচিং, মাসাংপ্রু মারমা অংশৈথুই মারমা বলেন, মাঝ রাতে পাড়াবাসিদের চিৎকারের শব্দ পেয়ে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে দেখি আগুনের লেলিহান চার দিকে দাউ দাউ করে ছড়িয়ে পড়ছে। আগুন নিভাতে চেষ্টা করলেও নিভানোর সম্ভব হয়নি। ঘন্টার খানিক মধ্যে ৭০টি বসত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
এদিকে পাড়াটি সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় অগ্নিকান্ডের পর সেখানে দমকল বাহিনীর সদস্যরা পৌঁছাতে পারেনি, পরে ভোর পাঁচটার দিকে আগুন স্বাভাবিকভাবে নিভে যায়। বর্তমানে পাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর অবস্থায় রয়েছে। অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই কোটি টাকা বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছে।
অগ্নিকান্ডের খবর শুনে রোয়াংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চহাইমং মারমা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হ্লাথোয়াইহ্রী মারমা, নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবদুল্যাহ আল জাবেদ, তারাছা ইউপি চেয়ারম্যান উথোয়াইচিং মারমা, পিআইও মো: ময়নুল ইসলাম, মংটিংওয়াইং মারমা, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা ও জেলা উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন।
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চহাইমং মারমা জানান, রাত ১টার দিকে পাড়াটির মধ্যভাগের একটি ঘরের চুলার আগুন থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়, মহূর্তে আগুন পুরো পাড়ায় ছড়িয়ে পড়ে এতে পাড়ার ৭০টি বসতঘরসহ ৩টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আর এতে প্রাথমিকভাবে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোয়াংছড়ি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন তালুকদার পাড়া অগ্নিকান্ডের খবর শুনে ফায়ার সার্ভিসে লোক গিয়ে নির্বাপন কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ৭০টি বসতঘর পুড়িয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। তদন্ত পরে বলা যাবে। ঘটনাস্থলে পরিদর্শনের শেষে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
এদিকে অগ্নিকান্ডের সংবাদে সকালে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নগদ অর্থ ও বিভিন্ন ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।