পানছড়িতে যুবলীগ ক্যাডার নাজির কর্তৃক সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

100

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ-খাগড়াছড়ি শহরে শাপলা চত্ত্বরে খাগড়াছড়ির সাংবাদিক এস. চাঙমা সত্যজিৎ ওপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার (৫ মে) সকাল খাগড়াছড়িতে কর্মরত সাংবাদিকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এবং খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারকে স্মারক লিপি দিয়েছে।
স্মারক লিপিতে বলা হয়েছে, অনতি বিলম্বে যুবলীগ ক্যাডার নাজিরকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবী তুলেছেন।
উক্ত মানববন্ধনে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি জিতেন বড়ুয়া, অরণ্যবার্তার সম্পাদক চৌধুরী আতাওর রহমান রানা, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরীসহ কর্মরত সাংবাদিকরা বক্তব্য রাখেন।
এসময় বক্তারা বলেন, আগামীতে কোন সাংবাদিক এই ধরনের হামলার স্বীকার হয়, তাহলে সংবাদ বর্জনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে তথ্য সংগ্রহকালে এক প্রবীণ সাংবাদিককে ইউপি চেয়ারম্যান নাজির ও তার ক্যাডার বাহিনী দারা হামলা ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খাগড়াছড়ির পানছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নাজির হোসেন তার ক্যাডার বাহীনির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পানছড়ি উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও দৈনিক কালবেলা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এস চাকমা সত্যজিৎ। প্রায় ৪ দশক সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত এই প্রবীণ সাংবাদিক খাগড়াছড়ির চারণ সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকালে পানছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদে গরীব দুঃস্থদের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সহায়তা প্রদানের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে এসময় সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন ও তার লালিত ক্যাডার বাহিনীর হাতে লাঞ্চিত হয়েছেন।
আক্রমনের শিকার সাংবাদিক এস চাকমা সত্যজিৎ জানান, সংবাদ সংগ্রহের উদ্যেশ্যে পানছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ যাই। অনুষ্ঠান শুরুর দেরি দেখে পরিষদ সংলগ্ন প্রেস ক্লাবের নির্ধারিত ভূমিতে অন্যান্য সহকর্মী দের সাথে গল্প করছিলাম। এমন সময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারন সম্পাদক নাজির হোসেন তার ক্যাডার বাহীনি নিয়ে সেখানে হাজির হয়। আমাকে উদ্যেশ্য করে বলে চাকমা সাংবাদিক এখানে কি করে। তিনি বলেন, আমি নাকি ইউনিয়ন পরিষদের ভূমি দখল করতে গিয়েছি। তার এমন মন্তব্যের বিষয়টি আমি ঠাট্টা মসকারী মনে করি। তাকে বলি চেয়ারম্যান আমরা যখন বানিয়েছি পরিষদ তো আমরাই দখল করবো। হঠাৎ সে আমার প্রতি উগ্র হয়ে সাম্প্রদায়িক ভাবে হেয় করে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন। কথা কাটাকটির এক পর্যায়ে তার ক্যাডার বাহিনীর আজহার হোসেন, ফারুক, আক্তারসহ কয়েকজন মিলে আমাকে কিল ঘুসি ও লাঠি সোটা দিয়ে মারতে থাকে। আমার সহকর্মীদের সহযোগীতায় সেখান থেকে উদ্ধার হই। থানায় অভিযোগ পত্র নিয়ে গেলে ওসি মো. দুলাল হোসেন মামলা না রেখে সমজোতার কথা বলে বিদায় করে দেন।
অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা নজির চেয়াম্যান এ বিষয়ে জানতে পানছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেনের মোবাইল ফোনে বারবার কল দিয়েও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নাই।
ওসি দুলাল হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা আওয়ামীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন জানায়, সন্ত্রাসী প্রকৃতির এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানীদাতা ইউপি চেয়ারম্যান নাজির হোসেন সব সময় ক্যাডার বহর নিয়ে চলে। তার বহরে অধিকাংশই বিভিন্ন মামলার আসামী। এর আগেও তার বিরুদ্ধে একাধিক সাংবাদিক হামলার অভিযোগ রয়েছে।