বৈসাবি ও পহেলা বৈশাখে ইউপিডিএফের শুভেচ্ছাঃ উৎসবের চেতনা সমুন্নত রাখুন, জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে আত্মনিয়োগ করুন

313

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ-গতবারের মতো এ বছরও বিশ্বব্যাপী ‘প্রাণঘাতি করোনা’র কবলে পতিত পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান ও বৃহৎ সামাজিক উৎসব বৈসাবি (বৈসুক-সাংগ্রাই-বিঝু-বিষু-বিহু) ঐতিহ্য প্রথা মাফিক পালন করতে না পারায় ম্রিয়মান। এর মাঝে কঠোর লকডাউন আরোপিত হয়েছে পহেলা বৈশাখ হতে। বন্ধু, আপনজন ও পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা-সাক্ষাত, সন্মিলন, জমায়েত ইত্যাদি অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ হয়েছে। সর্বত্র সামাজিক দূরত্ব ও এক প্রকার বন্দীদশা চলছে।
এ অসহনীয় পরিস্থিতির অবসান হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর সভাপতি প্রসিত খীসা মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যমে এক বার্তায় বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখে পার্বত্যবাসী, প্রবাসী জুম্মো ও দেশের জনগণের জীবনে নিরাপত্তা, সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তি কামনা করেছেন।
প্রদত্ত বার্তায় দুনিয়ায় ক্ষমতাধন উন্নত দেশের স্বাস্থ্য সচেতন ধনাঢ্য ব্যক্তিরাও করোনার মারণ থাবায় প্রতিদিনই অসহায় করুণ ভাবে ধরাশায়ী হচ্ছে মন্তব্য করে ইউপিডিএফ নেতা বলেন, “প্রাণঘাতী করোনা” দোর্দন্ড ক্ষমতাধর-দুর্বল ক্ষমতাহীন, বিত্তশালী-বিত্তহীন, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, তিলোত্তমা নগরী-অজপাড়া গাঁ, ধনী-দরিদ্র-সবাইকে এক কাতারে ফেলে দিয়েছে। ক্ষমতা, অর্থ-বিত্ত ও বিদ্যা নিয়ে বড়াই করে মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে।
স্বাভাবিক সময়ে বৈসাবি উৎসবকে কখনও কখনও পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বাইরে অবস্থানরত একশ্রেণীর লোক নিজেদের কৃত্রিম জৌলুস প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতার উপলক্ষ বানানোর অপচেষ্টা এবং অপসংস্কৃতি ও বিকৃতির বিষবাষ্প ছড়িয়ে সমাজে বিভেদ-বিদ্বেষ ও অনৈক্য সৃষ্টির অপপ্রয়াসও চালিয়েছে, যা বৈসাবি উৎসবের মূল চেতনার পরিপন্থী বলে তিনি প্রদত্ত বার্তায় মন্তব্য করেন।
ইউপিডিএফ নেতা দীর্ঘ বার্তায় পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের জাতীয় অস্তিত্ব সংকটাপন্ন এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী ধ্বংসাত্মক পথ পরিহারের জন্য সরকারের গুটি হিসেবে ব্যবহৃত পথভ্রষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পুরাতন বছরের সকল দুঃখ-গ্লানি ও ব্যর্থতা জীর্ণ পাতার মতো ছুঁড়ে ফেলে নব উদ্যমে পথ চলার শক্তি অর্জিত হবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে ইউপিডিএফ নেতা সবাইকে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার্থে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানান এবং আরও বলেন, ‘বৈসাবি-পহেলা বৈশাখ শুধু বিনোদনের উৎসব নয়, এটি সমাজে জনগণের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য ও সংহতি সৃদৃঢ় করার উপলক্ষও’।
উল্লেখ্য, বৈসাবি হচ্ছে তিন দিনের উৎসব। প্রথম দিন নদীতে ফুল দিয়ে বাড়িঘর পরিচ্ছন্ন ও সাজিয়ে উৎসব শুরু হয়। পরের দিন মূল উৎসব অতিথি আপ্যায়ন খাওয়া-দাওয়া চলে। নববর্ষের দিন শিকার কিংবা অবকাশ যাপনের রীতি রয়েছে।