বাঘাইছড়িতে তীব্র পানির সংকটে ভুগছে গ্রামবাসী, জনজীবন অতিষ্ট

244

বাঘাইছড়ি প্রতিনিধিঃ-রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার পাহাড়ী অধ্যুষিত দূর্গম বেশ কিছু গ্রামে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে শতাধিক পরিবারের জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। একটু খাবার পানির আশায় এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম ঘুরেও মিলছে না এক কলসি বিশুদ্ধ পানি। ফলে জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাধ্য হয়েই খাল ও ঝিরি-ঝর্নার পানি খেতে হচ্ছে। প্রকৃতিক এসব ঝিরি-ঝর্ণা শুকিয়ে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় মিলছেনা পর্যাপ্ত পানিও।
উপজেলার বাঘাইছড়ি ইউনিয়নের জীবতলী, ছন খোলা আদাম, রাবার বাগান, কচুছড়ি ও শান্তিপুর এবং সাজেক ইউনিয়নের উল্ড লংকর, রুইলুই, কংলাক, নিউ থাং থাং, শিয়ালদাই ও বেটলিং এলাকার মানুষ গুলো পানির তীব্র এই সংকটে ভোগছে।
সংশ্লিষ্টরা দুষিত ঝিরি-ঝর্নার পানি পান ও ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই সহ স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশংখা করছে। কিছু গ্রামে সরকারি ভাবে রিংওয়েল বসানো হলেও দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে তলদেশে মাটি ভরাট ও পানির লেয়ার কমে এক প্রকার অকেজো হয়ে পড়েছে। পৌরসভার বটতলী, টিএন্ডটি কলোনী ও অন্যান্য স্থানেও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট বিরাজমান।
স্থানীয়দের দাবী, এসব এলাকায় সরকারি সহায়তায় দ্রুত গভীর নলকূপ বসানো প্রয়োজন। নইলে বিশুদ্ধ পানির সংকটে এসব এলাকায় মানুষের বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা জানান, প্রতি বছরের শুস্ক মৌসূমে আমাদের এই সমস্যা তীব্র তর হয়ে উঠে। এই সময় বৃষ্টির পানি ধরে আমরা সংরক্ষন করি। কিন্তু এবার এখনো বৃষ্টি শুরু হয়নি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে গভীর নলকূপ স্থাপনের পাশাপাশি পানির টাংকি বসিয়ে পানি সরবরাহ করা ছাড়া বিকল্প ব্যবস্থা দেখছিনা। বাঘাইছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান অনিল চাকমা বলেন, পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় স্থাপিত রিংওয়েল গুলোতেও বর্তমানে পানি পাওয়া যাচ্ছেনা। এসব এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানীয় সংকট মোকাবেলা করতে হবে।
বাঘাইছড়ি পৌরসভার মেয়র জাফর আলী খান বলেন, পৌরবাসী বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে রয়েছে। পৌর এলাকার কিছু স্থানে রিংওয়েল দ্বারা পানির সংকট নিরসন করা গেলেও বটতলী, টি এন্ড টি কলোনী, মডেল টাউন, পদ্ধ পাড়া, মোস্তফা কলোনী, বৈদ্য কলোনী ও গুচ্ছ গ্রাম এলাকায় গভীর নলকূপ ও টাংকি স্থাপন করে পানি সরবরাহ করতে হবে। নইলে এই সমস্যার সমাধান অসম্ভব। তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখে ব্যবস্হা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগের ভাঃপ্রাঃ প্রকৌশলী আবদুল রাজ্জাক জানান, মানুষের নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ আমাদের মূল কাজ, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে এই সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। যেহেতু পাহাড়ী এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপনে অনেক খরচ ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। দূর্গম এলাকা হওয়ায় সব জায়গায় যাওয়াও যায়না। তবু পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় খাবার পানি সরবরাহ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, বিশুদ্ধ পানির সংকটে থাকা গ্রাম গুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দূরীকরনে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চলছে।