বাঘাইছড়িতে একটি সেতুর অভাবে দূর্ভোগে হাজারো মানুষ, নড়বড়ে সাঁকোতে প্রতিদিন পারাপার

260

দিলীপ কুমার দাশও জগৎ দাশ, বাঘাইছড়িঃ-রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়ন ও সাজেক ইউনিয়নের সংযোগ সড়কে বাঘাইহাট বাজারের পাশ্ববর্তী হাজাছড়ায় একটি ব্রীজ নির্মানের মাধ্যমে জনদূর্ভোগ নিরসনে সরকারী পদক্ষেপের দাবী জানাচ্ছে বঙ্গলতলী এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, বঙ্গলতলী, হাগলাছড়া, উওর হাগলাছড়া, দক্ষিন হাগলাছড়া, দো-ছড়ি হাগলাছড়া, রাজমন ছড়া, ডাঙ্গাছড়া, তিন্দুছড়ি, গোলকমাছড়া, হাজাছড়া, দিপু পাড়া, বুয়াছড়ি এই ১২টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র পথ এই হাজাছড়া রাস্তা। তার মাঝেই নদী। গাছের সাঁকোতেই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয় স্থানীয়রা।
অন্যদিকে, এই ব্রীজ বাস্তবায়িত হলে ৫ হাজারের অধিক মানুষের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধিসহ ১২টি গ্রামের মানুষ, দিন মজুর, শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও স্কুল-কলেজের সকল শিক্ষার্থীদের দুঃখ লাঘব হবে। আর এই যাতযাত সড়কটিতে পায়ে হেঁটে চলাফেরা করতে হয়। নেই গাড়ি চলার কোন রাস্তা। স্থানীয়দের নিজস্ব উদ্যোগে নদী পারাপারের জন্য প্রতিষ্টিত গাছের সাঁকোটিও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে দূর্ঘটনা। প্রতিদিন স্কুল পড়ুয়া ছোট শিশুদের চলতে হয় এই সাঁকো দিয়ে।
এব্যাপারে বঙ্গলতলী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নেখেল চাকমা জানান, আমাদের চলার পথ এটি। নেই কোন রাস্তা, বর্ষায় কাঁদাতে ভরপুর, তার মাঝেই গাছের তৈরি সাঁকোতে পারাপার, আমাদের নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য আনতে আসা-যাওয়া করার একমাত্র পথ এটি। আর আমাদের সন্তানেরা অনেক কষ্ট করে স্কুল কলেজে যাওয়া আসা করে। বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাঘাইহাট উচ্চ বিদ্যালয়সহ কেজি স্কুলগুলোতে ছোট বাচ্চারা যাওয়া আসা করে এই ঝুঁকিপূর্ণ গাছের সাঁকো দিয়ে। সরকার পাহাড়ের উন্নয়ন করছে, আমাদের এই নদীর উপর একটি সেতুর ব্যবস্থা হলে আমাদের ৫ হাজারের অধিক মানুষের দুর্ভোগ কমবে।
উক্ত ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৌলিনা চাকমা জানান, আমরা নারীরা অনেক কষ্ট এবং ঝুঁকি নিয়ে যাওয়া আসা করি। নদীর পানি বেড়ে গেলে ভয়টা তখন আরো বেড়ে যায়, অনেকে সাঁতার জানেনা, কখন কে যে পানিতে পরে যায় ভয়ে থাকে।
বাঘাইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র পিপল চাকমা বলেন, আমরা খুব কষ্ট করে পায়ে হেঁটে বিদ্যালয়ে যাই। এখানে একটি ব্রীজ নির্মাণ করা হলে কষ্ট কমে যেতো। বাঘাইহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী কাকলী চাকমা বলেন, আমরা খুব কষ্ট পাই বর্ষাকালে। চারদিকে পানি, তার উপর দীর্ঘ অনেক বড় গাছের সাঁকো। ভয়ে ভয়ে এই সাঁকো পাড় হতে হয়। ৫ম শ্রেণীর আনেশা চাকমা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের সেতু করে দিলে আমরা খুব ভাল করে যাতায়াত করতে পারবো। আমাদের অনেক কষ্ট কমে যেতো। স্কুল খোলা থাকলে আমাদের ভয়ে ভয়ে এই সাঁকো পাড় হতে হয়।
বঙ্গতলী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ধনবী চাকমা বলেন, আমাদের এলাকায় একটি সেতু হলে এই দুই ইউনিয়নের ১২টি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগ কমবে। সরকারী একটি রাস্তা এবং সেতু করে দিলে আমরা একটু ভালোভাবে যাতায়াত করতে পারবো। বঙ্গলতলী ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞানজীব চাকমা জানান, উক্ত স্থানে একটি ব্রীজ নির্মানের জন্য আমার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে থাকা সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ। তবু বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে স্থানীয় এলাকাবাসীদের। এতে কচি-কাচা শিশু-কিশোরদের যাতায়াতে আমরা সবসময় চিন্তায় থাকি এবং হতাশায় ভুগী। তাই জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে বঙ্গলতলী এলাকার হাজাছড়া রাস্তায় একটি সেতু নির্মান করা খুবই জুরুরী।