রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পুলিশ সুপার অফিসের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

176

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পুলিশের মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৪ জানুয়ারি) পরিষদের সভা কক্ষে (এনেক্স ভবন) রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষে চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী এবং রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পুলিশের পক্ষে পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে মেয়ে শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্প এর জেলা কর্মকর্তা সুখেশ্বর চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসআইডি-ইউএনডিপির জেন্ডার এন্ড কমুনিটি কোহেসন এর চীফ ঝুমা দেওয়ান। তিনি বলেন, গ্লোবাল এফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে মেয়ে শিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো নারী এবং মেয়ে শিশুদের নিরাপদে বেড়ে উঠার সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা। এজন্যে এ প্রকল্পের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি জেলার ১০০টি স্কুলে মেয়ে শিশু ও নারীর ক্ষমতায়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইতোপূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশের সঙ্গে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং ইউএনডিপির কাজের অভিজ্ঞতা আছে। এ প্রকল্পে ক. নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ে থানা ভিত্তিক পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণ, খ. জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিষেবাদি বিষয়ক বার্তা প্রচার, গ. ভিক্টিম সাপোর্ট সেন্টারের পরিষেবাদি বিষয়ক বার্তা প্রচার এবং ঘ. জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ বিষয়ক বার্তা ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রচারের কার্যাদি সংযুক্ত আছে। সর্বমোট ৫৫,০০,০০০ (পঞ্চান্ন লক্ষ) টাকা ব্যয়ে পুলিশের সাহায্যে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের বলেন, ইউএনডিপির ন্যায় পুলিশও জনগণের কল্যাণে কাজ করে। দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নারী এবং মেয়ে শিশুদের কল্যাণে ইউএনডিপি যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এ ধরনের প্রশংসনীয় কাজের শরীক হতে পেরে আমরা গর্বিত। জনগণ যাতে স্বচ্ছন্দ্যে স্বাভাবিক জীপন যাপন করতে পারে এবিষয়ে পুলিশ সদা সতর্ক। তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে পুলিশ সম্মুখ যোদ্ধা হিসাবে কাজ করেছে। সেসময় ডাক্তারদের পরে পুলিশ জনগণের যেকোন প্রয়োজনে কাজ করেছে। আপনারা জানেন সম্মুখ যোদ্ধা হিসাবে কাজ করতে গিয়ে আমাদের প্রচুর পুলিশ ভাই মারা গেছে। এত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও পুলিশ জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। মেয়েশিশু এবং নারী সম্প্রদায় যাতে স্বচ্ছন্দ্যে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে এজন্য পুলিশ সবসময় সজাগ এবং সতর্ক থাকবে। তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদ জনগণের প্রতিষ্ঠান। পুলিশ বিভাগও জনগণের কল্যাণে কাজ করে। এ দুটি প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করলে ভবিষ্যতে যেকোন কাজে সফলকাম হবে।
চেয়ারম্যান অংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, পরিষদ এবং পুলিশ বিভাগ যৌথভাবে ইউএনডিপির অর্থায়নে নারী এবং মেয়েশিশুদের ক্ষমতায়নে যে কাজ হাতে নিয়েছে তা টাকার মূল্যে খুব বেশি বড় না হলেও উদ্দেশ্যটি নিঃসন্দেহে মহৎ এবং গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ জনগণের সেবায় নিয়োজিত। পরিষদও একইভাবে জনগণের সেবায় নিয়োজিত। দুই প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এককভাবে পুলিশের দ্বারা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে অভিভাবকসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে। অসচেতনতার কারণে সহিংসতা বেশি হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পুলিশ এবং পরিষদ নিবিড়ভাবে একসঙ্গে কাজ করলে এ প্রকল্প কার্যক্রম সফল হবে। এ বিষয়টি সফল হলে ভবিষ্যতেও আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারবো। পুলিশ বিভাগের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় থাকবে।
এসময় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ ছুফি উল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তাপস রঞ্জন ঘোষ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাঈন উদ্দিন চৌধুরী, পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুনেন্দু ত্রিপুরা, এসআইডি-ইউএনডিপির জেন্ডার এন্ড কমুনিটি কোহেসন এর চীফ ঝুমা দেওয়ান, ডিষ্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর অনুপম চাকমা, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে মেয়েশিশু ও নারীর ক্ষমতায়ন প্রকল্প এর জেলা কর্মকর্তা সুখেশ^র চাকমাসহ ইউএনডিপি এবং প্রকল্পের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।