মানবজীবনে পুণ্যলাভ করা যায় দানের মাধ্যমে-চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা

576

রাহুল বড়ুয়া ছোটন, বান্দরবানঃ-পঞ্চশীল প্রার্থনা, অষ্টপরিস্কার দান, সংঘদান, চীবর উৎর্সগসহ নানা ধর্মীয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বান্দরবানে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা উদযাপন করছে কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান।
শুক্রবার (৬ নভেম্বর) সকালে বান্দরবান সদরের পারাহিতা সংঘরাজিতা বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গনে এই দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারের শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু এই দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে ধর্মদেশনা প্রদান করেন বান্দরবানের রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় জেতবন বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ সংঘনায়ক ভদন্ত উ: উইচারিন্দা মহাথেরো। এসময় উদ্বোধনী দেশনা প্রদান করেন, পারাহিতা সংঘরাজিতা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উ: পাইন্দিতা মহাথের ও প্রধান সদ্ধর্ম দেশক বাংলাদেশ সরকারের পরিচালিত চট্টগ্রাম বন্দর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ বাগ্রীশ্বর ড. দীপঙ্কর থের এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন বান্দরবান অনাথ আশ্রমের পরিচালক ভদন্ত টিক্খাইন্দ্রিয় থের।
ধর্মীয় এই অনুষ্ঠানে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান থোয়াইচ প্রু মাষ্টার, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্যসাপ্রু মারমা, পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির সহধর্মিনী মেহ্লা প্রু সহ পারাহিতা সংঘরাজিতা বৌদ্ধ বিহারের দায়ক-দায়িকা, উপাসক-উপাসিকাবৃন্দসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা অংশ নেয়।
ধর্ম সভায় বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বলেন, মানবজীবনে পুণ্যলাভ করা যায় দানের মাধ্যমে। দান করলে পরে তার অধিক ধন-সম্পদ লাভ করা যায়। গৃহী জীবনে যেমন পঞ্চশীলের কোনো বিকল্প নেই, ঠিক তেমনি জীবনে দানই হচ্ছে অন্যতম। যার কারণে ভগবান বুদ্ধের সময়কাল থেকে দানের শ্রেষ্ঠ দান হিসেবে বিবেচিত কঠিন চীবর দান। আর সেই দানের মাধ্যমে বুদ্ধের অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষের মাঝে এবং পুণ্যে ও জ্ঞানের মাধ্যমে সুখ-শান্তিসহ সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক সবার মাঝে।
প্রসঙ্গত, ২৪ ঘন্টার মধ্যে টাটকা চীবর (কাপড়) তৈরি করার পর তা ভিক্ষুদের দানের মাধ্যমে কায়িক, বাচনিক ও মানসিক পূণ্য সঞ্চয় হয় বলেই বৌদ্ধ শাস্ত্রে এই দানকে ‘শ্রেষ্ঠ দান ‘ কিংবা কঠিন চিবর দান বলে, আর এই কঠিন চীবর দানের মধ্য দিয়ে সুখ শান্তি লাভের আশায় বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা বিভিন্ন বিহারে বিহারে জড়ো হয়ে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রদান করছে।