রাঙ্গামাটিতে নাটাবের উদ্যোগে যক্ষ্মা রোগ নির্মূলে ইমামদের সাথে মতবিনিময় সভা

369

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামটিঃ-পার্বত্য জেলা ও প্রত্যন্ত এলাকায় করোনা ও যক্ষ্মা রোগ দূর করতে সম্মিলিত ভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ করোনা ও যক্ষ্মা রোগ দুটোই সংক্রমন রোগ। তাই মসজিদে ইমামরা যদি যক্ষ্মা রোগ ও মাস্ক পড়ার ব্যাপারে মাইকের মাধ্যমে মসজিদ থেকে হলে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পেতো। এতে করে যক্ষ্মা ও করোনা রোগ থেকে কিছুটা হলেও মানুষ সংক্রমিত থেকে মুক্ত থাকতো। তাই যক্ষ্মা রোগ করোনা ভাইরাস নির্মূল করতে সম্মেলিত ভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
রবিবার (২৩ আগষ্ট) সকালে রাঙ্গামাটি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি নাটাব রাঙ্গামাটি জেলা শাখার উদ্যোগে যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণে ইমামদের ভূমিকা শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি নাটাব রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি ও দৈনিক গিরিদর্পণ সম্পাদক এ কে এম মকছুদ আহমেদ এর সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নিতিশ চাকমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি নাটাব রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহ জাহান মজুমদার, বক্ষব্যধী ক্লিনিকের ভারপ্রাপ্ত কনসালটেন্ট ডা. সুশোভন দেওয়ান।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন, নাটাবের সদস্য মোসলেম উদ্দিন, ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, নাটাবের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার মোহাম্মদ হেলাল।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, যক্ষ্মা রোগীর কফ, হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে জীবানু বের হয়ে বাতাসে মিশে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তা সুস্থ ব্যক্তির ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং সুস্থ্য ব্যক্তিকে আক্রান্ত করে। তিন সপ্তাহের বেশি কাশি যক্ষ্মার প্রধান লক্ষণ। বর্তমানে প্রত্যেক জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলায় সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, নাটাব যক্ষ্মা কর্মসূচির উপর কাজ করছে। নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যক্ষ্মার ঔষধ বিনামুল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাজেই তিন সপ্তাহের বেশি কাশি থাকলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে যক্ষ্মা রোগ সনাক্তের জন্য নিকট স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
বক্তারা আরো বলেন, যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসা সর্ম্পকে সচেতন করে তোলার ব্যাপারে নাটাব যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে তোলার ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সভা, সমাবেশ, সেমিনার, র‌্যালি এবং রোগীদের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ। এর ধারাবাহিকতায় শিক্ষক, আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা, ইমাম, কার্বারী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ সমাজের বিভিন্ন পেশাজীবীদের মধ্যে জনসচেনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
এসময় বক্তারা বলেন, একজন এম.ডি.আর যক্ষা রোগী নতুন ১০০ জন যক্ষা রোগীকে আক্রান্ত করে। অতএব শুধু মাত্র টাকা দিয়ে চিকিৎসা করলেই সে যক্ষা রোগী ভাল হবে এমন কোন কথা নেই; সঠিক মাত্রায় ঔষুধ সেবন, পরিমান মত নিয়মিত ঔষধ সেবন করতে হবে। সমাজে যদি যক্ষ্মা রোগের ব্যাপারে সচেতনতা না থাকে তাহলে দিনে দিনে যক্ষা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকবে, সবারই উচিত নতুন নতুন যক্ষ্মা রোগী খুঁজে বের করে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবায় নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো। তা হলেই আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ ও যক্ষ্মামুক্ত করা সম্ভব। তাই সবাই মিলে দেশকে ভালোবাসি, সরকারী কাজে এগিয়ে আসি, তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে। আর সচেতন নাগরিকরা যদি যক্ষ্মা রোগ ও করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে তা হলে দেশে যক্ষ্মা ও করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারবে।