রোয়াংছড়িতে পেয়ারা চাষে বাম্পার ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকেরা হতাশ

750

রোয়াংছড়ি প্রতিনিধিঃ-বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে পেয়ারা চাষের বাম্পার ফলন হলেও প্রান্তিক কৃষকের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে। সার, কীটনাশকসহ নিজের শ্রমের মজুরীর মূল্যেও পাবে না বলে হতাশায় দিন গুনছেন পেয়ারা চাষীরা।
সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যের জন্য পেয়ারা অনেক সাধারণ একটি পুষ্টি উপাদান ও গুণাবলী থাকে। এর উচ্চমাত্রার ভিটামিন-এ ও ‘স্থি ত্বক, চুল ও চোখের পুষ্টি জোগায়। পেয়ারা একটি ভিটামিন-সি আর ময়েশ্চার সমৃদ্ধ ফল। একজন প্রান্তিক কৃষকের ৫ একর জায়গাতে কলা, কমলা, মাল্টা, থাই টু ও কাঞ্চনা নামে দুই প্রজাতি পেয়ারা সহ বিভিন্ন ফলজ বাগানে মিশ্র ফলের বাগান করেন প্রান্তি কৃষক অংশৈমং মারমা। কৃষকের নিজ নামীয় পাঁচ একর ৩য় শ্রেণি জায়গাতে পেয়ারা গাছের ছোট থেকে পরিচর্যা করে আসেছেন। ফলে দুই-তিন বছরে মধ্যে ফল ধরতে শুরু করে। চলতি বছরে বৈরী আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় প্রচুর পরিমাণে পেয়ারা ফল ধরছে।
ইতোমধ্যে বাগানে পেয়ারা পাঁকতে শুরু করছে। কৃষকের বাগানে পাঁকার ফলকে পেরে দৈনিক যতটুকু পারেন স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে যাচ্ছে। সে পেয়ারা ফল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করলেও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দিতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৮ থেকে ১০ টাকা করে স্বস্তা দামে। সময় মতো ফল বাজারজাত করতে না পারায় বাগানের গাছ থেকে ফলগুলো ব্যাপক পরিমাণে ঝড়ে পড়েছে মাটিতে। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি ও ভাল না। যার কারণে বেপারিরাও আসেনা ফলে পেয়ারা চায়ের বাম্পার ফলন হলেও দামে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকের মনে ঘন কোঁয়াশা ও মেঘের ছায়া মুখম-লের হতাশা হয়ে পড়েছে।
কৃষক অংশৈমং মারমা বলেন, আমার নিজ নামীয় ৫ একর তৃতীয় শ্রেণি জায়গাতে উদ্যোগ নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনায় সৃজন করছে মিশ্রফলের বাগান। বাগানে আছে কলা, কমলা, মাল্টা, থাই টু পেয়ারা ও কাঞ্চনা পেয়ার নামে দুই প্রজাতি পেয়ারা সহ বিভিন্ন প্রজাতি ফলদ গাছ। কিন্তু পেয়ারা গাছটি একটু বেশি আছে বাগানে। পেয়ারা গাছের সময় মতো ফল ধরতে শুরু করছে। এ বছরে বৈরী আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় প্রচুর পরিমাণে ফল ধরছে। প্রত্যেকটি পেয়ারা গাছের মধ্যে কম হলেও অন্তত ৮০ থেকে ১০০টি করে ফল ধরছে। বাগানের ফল ঠিক মতো বিক্রি করতে পারলে কমপক্ষে ৯০ থেকে ১লক্ষ টাকা পাওয়ার নিশ্চিত ছিলেন। এখন ফলের দাম ন্যায্য মূল্যের না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছি আমি। কৃষক অংশৈমং মারমা নিরাশ হয়ে তিনি দু:খের সাথে বিষন্ন মনের উঠকন্ঠায় বলেন, এবছরে পেয়ারা ফল বিক্রি করতে না পারলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামীতে একটি গাছও রাখব না। বাগানে সব পেয়ারা গাছগুলো কেটে ফেলা হবে।
এ বিষয়ে পেয়ারা পাইকারী ব্যবসায়ী মো: আলমগীর ও মো: জসিম উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে আলাপচারিতায় বলেন, পেয়ার মৌসুমে আড়দে প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫টাকা করে বিক্রি করা যায়। অমৌসুমে বা আন সিজেন হলে কৃষকের কাছ থেকে প্রতি কেজি ৩৫ হতে ৪০ টাকা দিয়ে ক্রয় করলেও ৫০ হতে ৬০টাকা বিক্রি করা যাবে। তবে এখন পেয়ারা মৌসুম হওয়ায় কৃষকের কাছ থেকে প্রতি কেজি ১০ হতে ১২টাকা দিয়ে ক্রয় করা যাবে। এরকমই পেলে প্রতি সপ্তাহের ৪০ কেজি করে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পেয়ারা ব্যবসায়ী দ্বয়।
এব্যাপারে রোয়াংছড়ি উপজেলা সদর ব্লকের দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নুসিং মারমা বলেন, আমরা সব সময় বাগানে পরিদর্শনে মধ্যদিয়ে কৃষকে পরামর্শ দিয়েছে। যাতে কৃষকের লাভজনক হতে পারে। সময় মতো পরিচর্যা করে কীটনাশক স্প্রে করতে। এর সাথে আন সিজেনে থাই পেয়ারা উৎপাদন করতে পারলে খুব লাভজনক ফসল হিসেবে দাম ও বৃদ্ধি পাওয়া যাবে। আর ব্যাগিং পদ্ধতিতে পেয়ারা চাষের পরিচর্যা করলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে না। থাই পেয়ারা উৎপাদনের বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।