নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর বলেন, জাতির পিতার জন্ম শতা বার্ষিকীতে পার্বত্য তিন জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করা হচ্ছে। তার মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় ৬টি বঙ্গবন্ধু স্মার্ট ভিলেজ নির্মাণ, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রে ১০০ ফুট লম্বা ও ৭১ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি নির্মাণ কাজ হচ্ছে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের জন্য বড়ো অর্জন। আগামীতের জাতির পিতার স্মৃতিকে ধরে রাখতে আরো ব্যাপক কাজ করা হবে।
রবিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১১টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের পরামর্শক কমিটির রাঙ্গামাটির প্রধান কার্যালয় কর্ণফুলী সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন,পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি।
সভার আলোচ্য বিষয় ছিল বিগত ২৭/০৮/২০১৯ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিত পরামর্শক কমিটির সভার কার্যবিবরণী পাঠ ও অনুমোদন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের জন্য উন্নয়ন সহায়তা কোড নং-২২১০০১১০০ এর আওতায় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অর্ন্তভূক্তির জন্য নতুন স্কিম/প্রকল্প বাছাই এবং বিবিধ আলোচনা। সভাপতি পরামর্শক কমিটির সভায় উপস্থিত সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল আলম নিজামী (অতিরিক্ত সচিব) পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি এর মাতা শ্রীমতি নন্দা ত্রিপুরা বিদেহী আত্মার পরমার্থিক সদগতি ও মোক্ষলাভ কামনাসহ শোক প্রস্তাব করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এনডিসি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূর প্রসারি চিন্তা প্রসূত একটি প্রতিষ্ঠান। মুজিববর্ষ উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বেশ কয়েকটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় ৬টি বঙ্গবন্ধু স্মার্ট ভিলেজ নির্মাণ, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রে ১০০ ফুট লম্বা ও ৭১ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি নির্মাণ অন্যতম। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় অ্যাডভেঞ্চার উৎসব ২০২০, দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী ও করোনা প্রাদুর্ভাবের ক্ষতিগ্রস্থ বোর্ডের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগী ৬ হাজার পরিবারকে সবজি বীজ ও কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ এবং তিন পার্বত্য জেলায় ৪ হাজার ৩০০টি পাড়াকেন্দ্র ও ৪টি আবাসিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে ১ লক্ষ ৪০ হাজার বৃক্ষরোপন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি আরো বলেন, কোভিড ১৯ করোনার কারণে সারা পৃথিবী এখন স্থবির অবস্থায় আছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই ভাল অবস্থায় রয়েছে। এ অবস্থাকে ধরে রাখতে সকলকে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহবান জানান।
পরামর্শক কমিটি সভা সঞ্চালনা করেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য পরিকল্পনা ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী (উপ-সচিব)। এসময় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তিন পার্বত্য জেলা থেকে জেলা ভিত্তিক প্রাপ্ত প্রকল্প/স্কিমের আবেদন প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। জেলা ভিত্তিক প্রাপ্ত আবেদন জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় বাছাইকৃত প্রকল্প/স্কিমসমূহ ২০২০-২০২১ অর্থবছরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বাস্তবায়ন করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল আলম নিজামী (অতিঃ সচিব), সদস্য সচিব ও সদস্য প্রশাসন আশীষ কুমার বড়ুয়া (যুগ্ম সচিব), সদস্য-পরিকল্পনা ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী (উপ-সচিব), সদস্য-বাস্তবায়ন মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ (উপ-সচিব), খাগড়াছড়ির মং সার্কেল চীফ সাচিংপ্রু চৌধুরী, রাঙ্গামাটির চাকমা সার্কেল চীফ এর প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ চাকমা, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুজ্জামান মহসীন রোমান, মোঃ মোস্তফা জামাল বান্দরবান লামা উপজেলা চেয়ারম্যান, ক্যজাই মারমা চেয়ারম্যান কলমপতি ইউনিয়ন পরিষদ, কাউখালী উপজেলা, ক্যঅংপ্রু মারমা চেয়ারম্যান ১নং রাজবিলা ইউনিয়ন পরিষদ বান্দরবান, মেমং মারমা চেয়ারম্যান ১নং গুইমারা ইউনিয়ন পরিষদ খাগড়াছড়ি, হ্লাথোয়াইহ্রী র্মামা হেডম্যান ৩১৬ নং বেতছড়া মৌজা রোয়াংছড়ি বান্দরবান, প্রিয় নন্দ চাকমা চেয়ারম্যান সরোয়াতলী ইউনিয়ন পরিষদ, বাঘাইছড়ি রাঙ্গামাটি, সুরেশ মোহন ত্রিপুরা অর্পনা চৌধুরী পাড়া, মহিলা কলেজ রোড খাগড়াছড়ি সদর এবং অমল কান্তি দাশ রাণী ভবন, নিউগুলশান ৬নং ওয়ার্ড পৌরসভা বান্দরবানসহ বোর্ডের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড জনসংযোগ কর্মকর্তা (অঃ দাঃ) কাইংওয়াই ম্রো স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলেন, সভায় উপস্থিত খাগড়াছড়ির মং সার্কেল চীফ সাচিংপ্রু চৌধুরীসহ পরামর্শক কমিটির সদস্যবৃন্দ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের জনমানুষের কল্যাণকর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প/স্কিমের দৃশ্যমান গুণগত কাজের প্রশংসা করেন এবং এ ধারা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।