করোনা কমিয়ে দিয়েছে বিয়ের খরচঃ প্রভাব পড়েছে পাহাড়েও

179

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙ্গামাটিঃ-সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও গত তিন মাসেরও বেশী সময় ধরে রয়েছে করোনার প্রভাব। আর সব জেলা ও উপজেলায় বন্ধ রয়েছে বিয়ে, জন্মদিন, মেজবানসহ সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান। বেকার সময় পার করছেন কমিউনিটি সেন্টারে কমর্রত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে এর মধ্যে অনেকেই ঘরোয়া ভাবেই বিয়ে সম্পন্ন করছেন। কোন প্রকারের অনুষ্ঠান ছাড়াই সীমিত পরিসরে ছেলে-মেয়ে ও আত্মীয়-স্বজনরা এসব বিয়ের আয়োজন সেরে ফেলছেন। ফলে বিয়ের খরচও কমে এসেছে ৮০-৯০ শতাংশে।
যেখানে আগে উভয়পক্ষের সব মিলিয়ে আট থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হতো এখন সেখানে সবকিছু মিলে মাত্র ৫০ হাজার টাকা থেকে প্রায় ১ লাখ টাকায় বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে। খুব স্বল্প পরিসরে এসব বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে। সেখানে অনেকেই মন্তব্য করেন, কম খরচে বিয়ের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন ‘স্বল্প আয়ের’ যুবক। আবার যাদের টাকা আছে তারা অনেকেই করোনার দোহায় দিচ্ছেন। আর বলছেন করোনা কমে গেলে বড় পরিসরে সামাজিক ভাবে করা হবে।
জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে তিন পার্বত্য জেলায় চুপি সারে বিয়ে করে ফেলেছেন অনেকেই। কারণ কমবেশি আমরা সবাই জানি, করোনা দ্রুত যাচ্ছে না। তাই করোনার মধ্যেই সেরে ফেলেছেন বিয়ের কাজটি। যেখানে অন্য সময়ে (স্বাভাবিক) বিয়েতে চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ করতে হতো। এখন সেখানে মাত্র ৫০ হাজার টাকার মত খরচে বিয়ে করে ফেলেছেন।
বিয়ের আগেই ছেলের পক্ষ থেকে ৫শত থেকে ৮শ’র মতো লোক খাওয়াতে হতো। আবার মেয়ে পক্ষেরও কাবিনের একটা চাপ থাকে। যা উভয়পক্ষের উপর এক ধরনের বোঝা। কিন্তু করোনার কারণে এই বোঝা অনেকাংশে কমে গেছে। আর এই সুযোগটাই বেছে নিচ্ছে নব দম্পতিদের আত্মীয় স্বজনরা।
কারণ করোনা ভাইরাসের কারণে সবাই এখন কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। এর মধ্যে এখন দেখা যাচ্ছে, ছোট্ট পরিসরে বিয়ের আয়োজন হচ্ছে। আকদ্ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হচ্ছে। আকদ্ শেষ করে তার বাবা-মা ও বড় ভাই গিয়ে মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে আসছেন বাসায়। আর বড় কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে না।
এই ব্যাপারে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, করোনা বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের মানুষকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন করেছে। এর মধ্যে আমাদের শিক্ষা দিচ্ছে কিভাবে অপচয় ছাড়া বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করা যায়। করোনার আগে আমরা দেখেছি, একটি বিয়ে উপলক্ষে তিন-চার দিন পর্যন্ত অনুষ্ঠানিকতা চলতো। এখন এসব ছাড়াই বিয়ে হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। আবার যারা বিয়ে করছেন তাদের যে অনুষ্ঠান করার সামর্থ্য নেই তা কিন্তু না। পরিস্থিতির কারণে তারা বাধ্য হচ্ছেন। যেমন প্রতি বছর রমজানে ইফতার পার্টির নামেও আমরা প্রচুর অপচয় করি। এ বছর সেটিও বন্ধ ছিলো। আর করোনা দেখিয়ে দিয়েছে, কিভাবে হাজার হাজার লোকের খাবারের আয়োজন না করেও বিয়ে সম্পন্ন হয়। শিখিয়েছে লাখ লাখ টাকা ব্যয় ছাড়া বিয়ে সম্ভব। করোনা পরবর্তী সময়ে আমাদের এই সংস্কৃতি অনুসরণ করা উচিত বলেও মনে করে অভিজ্ঞ মহল।