ব্যস্ততার মাঝেও পরিবার-পরিজন নিয়ে সাংবাদিকদের মিলনমেলার একটি দিন

550

মনসুর আহম্মেদ,রাঙ্গামাটি-  সারাবছরের ব্যস্ততম দিনগুলোর মধ্যে একটি দিন ! পরিবার পরিজন নিয়ে একটু আলাপ আলোচনা, একটু অনুভূতি প্রকাশ, সকলের মধ্যে আরো একটু সম্পর্কের উন্নতি,  সর্বোপরি সব ব্যস্ততাকে বাদ দিয়ে একান্তে একটি দিন কাটানো !!

এ ধরনের উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিবছরের মতো রাঙ্গামাটিতে কর্মরত সাংবাদিকদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে রাঙ্গামাটির আসমাবস্তিস্থ নতুন পর্যপন ডিভাইন লেক আইল্যান্ড নামে নতুনভাবে কাপ্তাই লেকের পাশে গড়ে উঠা পর্যটন স্পটে এ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

মিলনমেলার শুরুটা হয় শহরের উন্নয়নবোর্ড ঘাট থেকে লঞ্চের মাধ্যমে সাংবাদিক পরিবারের সকল সদস্যদের যাত্রার মাধ্যমে। সকাল ৯টায় শুরু হয়ে সকাল সাড়ে ১০টার মধ্য ডিভাইন স্পটে গিয়ে শুরু হয় মিলনমেলার আনুষ্ঠানিকতা।

রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাব ছাড়া জেলার ৬টি সাংবাদিক সংগঠন রাঙ্গামাটি রির্পোর্টার্স ইউনিটি, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরাম, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ইউনিয়ন, রাঙ্গামাটি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, রাঙ্গামাটি জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক ও রাঙ্গামাটি সাংবাদিক সমিতি উদ্যোগেই এ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবকে সাংবাদিকদের মিলনমেলার আমন্ত্রণ জানানো হলেও প্রেস ক্লাব থেকে শুধুমাত্র সাংবাদিক এসএম শামসুল আলম ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি।
মিলনমেলার শুরুতে সাংবাদিকদের পরিবারের সদস্য শিশু কিশোরদের দিয়ে নানা ধরনের খেলাধূলার আয়োজন করা হয়, পাশাপাশি নারী-পুরুষদের জন্য ও নেয়া হয় বিভিন্ন আয়োজন।

সাংবাদিকদের মিলনমেলা অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ মামুন, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবীর ও রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান মহসিন রোমানসহ রাঙ্গামাটির বিভিন্ন স্তরের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

সাংবাদিকদের মিলনমেলায় যোগ জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ বলেন,রাঙ্গামাটিতে কর্মরত ৬টি সংগঠনের নেতৃত্বে আজকের এ মিলনমেলা অত্যন্ত প্রশংসনীয়, তবে সব সাংবাদিক সংঘবদ্ধ থেকে একটি ব্যানারে আসলেই ভালো।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সবসময়ই ব্যস্ত থাকেন, যখনই ঘটনা তখনই তাদের ছুটে যেতে হয় সংবাদের খোঁেজ। শত ব্যস্ততার মাঝে ও বছরের একটি দিন সকল সাংবাদিকসহ পরিবারের সকলকে নিয়ে এ ধরনের আয়োজনে আমি মুগ্ধ। এ ধরনের আয়োজ অব্যাহত রাখার আহবান জানান জেলা প্রশাসক।

রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবীর বলেন, সাংবাদিকদের মিলনমেলায় এসে আমি বিমোহিত। তাদের মাধ্যমে এসে পর্যটন শহর রাঙ্গামাটির নতুন একটি দর্শনীয় স্থানের সাথে পরিচিত হলাম, এ নতুন স্পটটি অনকে সুন্দর। এভাবে সকলে এগিয়ে আসলে পর্যটন শহর রাঙ্গামাটি অনেকদূর এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আমরা যে যে আবস্থানে থাকিনা কেন !!

এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে সকলের মাঝে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ট হয়। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মিলনমেলায় এসে সকলের সাথে যে ভাব বিনিময় করতে পারলাম তা আমার আজীবন মনে থাকবে। বক্তব্য দেয়ার আগে পুলিশ সুপার একটি গান পরিবেশন করেন।

অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান মহসিন রোমান বলেন, আমি পার্বত্য এলাকারই সন্তান। আজকে সাংবাদিকদের মিলনমেলায় এসে আমি আনন্দিত। সাংবাদিকদের যে কোন প্রয়োজনে পাশে থাকার অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

রাঙ্গামাটি জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সাধারন সম্পাদক ফাতেমা জান্নাত মুমুর সঞ্চালনায় ও রাঙ্গামাটি রির্পোর্র্টাস ইউনিটির সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনসভায় আরো উপস্থিত ছিলেন রাঙ্গামাটি রির্পোর্টাস ইউনিটির সাধারন সম্পাদক ফজলুর রহমান রাজন, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নন্দন দেবনাথ, সাধারন সম্পাদক মিল্টন বাহাদুর, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ সোলায়মান, সাধারন সম্পাদক হিমেল চাকমা, রাঙ্গামাটি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় ধর, সাধারন সম্পাদক মোঃ হান্নান, রাঙ্গামাটি জার্নালিস্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি শান্তিময় চাকমা, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, সাধারন সম্পাদক মিশু দেসহ রাঙ্গামাটিতে কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনার পাশাপাশি রাঙ্গামাটির স্পর্শ ব্যান্ডের শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকদের মিলনমেলা আরো আনন্দমূখর হয়ে উঠে।
তাদের পাশাপাশি সংগীত পরিবেশন করেন রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সুশীল প্রসাদ চাকমা, রাঙ্গামাটি সাংবাদিক ফোরামের সাধারন সম্পাদক ও জিটিভি প্রতিনিধি মিল্টন বাহাদুর, চ্যানেল আই প্রতিনিধি সাংবাদিক মনসুর আহম্মেদ মান্না, ফ্রি ল্যান্সার সাংবাদিক লিটন শীলসহ সাংবাদিক পরিবারের বিভিন্ন সদস্যরা। সংগীতের ফাঁকে ফাকে চলে র‌্যাফেল ড্রসহ বিভিন্ন ইভেন্টে জয়ী প্রতিযোগিদের পুরস্কার বিতরণ।

সারাবছরের ব্যস্ততম দিনের মাঝে এ ধরনের আয়োজনে সাংবাদিকসহ পরিবারের সকলেই ফিরে আসে অন্যরকম এক আনন্দ নিয়ে। এ মিলনমেলা অব্যাহত থাকুক, সকলের মাঝে গড়ে উঠুক ভাতৃত্বের বন্ধন রাঙ্গামাটিতে কর্মরত সাংবাদিক নেতাদের এটাই প্রত্যাশা।