বাগানে গরু প্রবেশ করায় দুই কিশোরীকে মেরে রক্তাক্ত করল প্রতিবেশী

221

লামাঃ-পার্শ্ববর্তী বাগানের সীমানায় গরু প্রবেশ করার কারণে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুই অসহায় কিশোরীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করেছে প্রতিবেশী কয়েকজন। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বগাইছড়ি এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গ্ররুতর আহত অনিতা দত্ত (১৫) ও নমিতা দত্ত (১৪) বগাইছড়ি এলাকার শুকুরমারা ঝিরির আশিষ দত্ত ও আশা দত্তের মেয়ে এবং দুইজনেই ফাঁসিয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী।
মারধরের শিকার হয়ে গুরুতর আহত দুই স্কুল ছাত্রীর মা আশা দত্ত বলেন, আমি এবং আমার স্বামী আশিষ দত্ত বগাইছড়ি এলাকার এরশাদুর রহমানের বাড়িতে কাজ করি এবং তার বাগান পাহারা দেই। বাড়িতে দুই মেয়ে একা ছিল। সন্ধ্যা হলে বাড়ির গরু আনতে আমার ছোট মেয়ে নমিতা দত্ত পাহাড়ে যায়। গিয়ে দেখে গরু পার্শ্ববর্তী ঘিলাতলীর শফি আলমের বাগান প্রকাশ চশমা বাগানে প্রবেশ করেছে। সেখানে গরু আনতে গেলে শফি আলমের বাগানের কেয়ারটেকার রহিমা বেগম (৪৫) তার বোন আমেনা বেগম (৩৫) ও আমেনা বেগমের দুই ছেলে তাদের প্রচন্ড মারধর করে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে আমার বড় মেয়ে অনিতা দত্ত সেখানে গেলে তাকে আরো বেশী মারধর করে। গাছের লাঠি দিয়ে এমনভাবে মারে দুইজনেই ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। দুইজনের মাথা ফেটে যায় ও সারা শরীর ফুলে গেছে। আশপাশের লোকজন দেখতে পেয়ে তাদের উদ্ধার করে কমিউনিটি সেন্টারের ফার্মেসিতে নিয়ে যায়। সেখানে গ্রাম্য চিকিৎসক তাদের অবস্থা আশংকাজনক দেখে লামা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসতে বলে। আমরা শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় দুই মেয়েকে লামা হাসপাতালে ভর্তি করি। এই বিষয়ে শনিবার সকালে লামা থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করি। আমরা খুবই গরীব মানুষ, বিচার পাবো তো ?
আহতের বাবা আশিষ দত্ত বলেন, হাসপাতালের ডাক্তাররা কিছু ঔধষ লিখে দিয়েছে। সেগুলো কিনার মত টাকা আমার কাছে নেই। আমরা খুবই গরীব মানুষ। এরশাদ কিছু টাকা দিয়েছিল। তা দিয়ে কোন মতে চলছে চিকিৎসা।
এবিষয়ে রহিমা বেগমের ফোনে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেলে কথা না বলে ফোনটি কেটে দেয়। পরবর্তীতে আর ফোন রিসিভ করেনি।
এরশাদুর রহমান বলেন, রহিমা বেগম ডাকাত প্রকৃতির মহিলা। তাকে এলাকার সবাই ভয় পায়। তার বাড়িতে সবসময় মহেশখালী এলাকা হতে অচেনা লোকজন আসা যাওয়া করে। এলাকার চুরি ও ডাকাতি সহ নানা ঘটনার সাথে তারা জড়িত বলে আমাদের ধারনা।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোহাম্মদ হোসেন মামুন বলেন, রহিমা বেগম কারো বিচার মানে না। তারা উচ্ছৃংখল প্রকৃতির।
লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাসুদ সিকদার বলেন, রাতেই বিষয়টি জানতে পেয়ে অফিসার ইনচার্জ এর নির্দেশে প্রথমে রোগীদের হাসপাতালে দেখতে যায় এবং পরে ঘটনাস্থলে যাই। ক্ষতিগ্রস্থরা শনিবার সকালে থানায় অভিযোগ করেছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।