বমু বিলছড়ি হেব্রন মিশনে ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষিত, আটক-১

209

লামাঃ-লামা পৌরসভার সংলগ্ন চকরিয়া উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের হেব্রন মিশনে এক ত্রিপুরা কিশোরী ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারী) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টায় হেব্রন মিশনের মহিলা হোস্টেলের টিউবওয়েল পাশে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় হেব্রন মিশনের ম্যানাজার সুভাষ ত্রিপুরা বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে।
চকরিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ভিকটিমের পক্ষে মিশনের ম্যানাজার সুভাষ ত্রিপুরা আটক শিমুল বড়ুয়াকে আসামী করে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছে। চকরিয়া থানা মামলা নং- ০১, তারিখ- ১ ফেব্রুয়ারী ২০২০ইং।
এই বিষয়ে হেব্রন মিশনের মহিলা হোস্টেল সুপার গ্রেনার ত্রিপুরা বলেন, শুক্রবার দিনে আমাদের মিশন মাঠে দিনব্যাপী একটি অনুষ্ঠান ছিল, তাই অনেক লোকজন ছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভিকটিম একা টিউবওয়েল এর পাশে গেলে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ভিকটিম লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও হেব্রন মিশনের হোস্টেলে থাকে। এসময় ঘটনাস্থলে লামা থানার পুলিশ ছিল। ধর্ষণের ঘটনার পর পরই লামা থানার পুলিশ মেয়ের স্বীকারোক্তি মতে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং আমরা ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য লামা হাসপাতালে নিয়ে আসি।
লামা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মো. রবিন জানান, ভিকটিমের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে পরীক্ষার জন্য বান্দরবান জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। হাসপাতালের ভিতর বিভাগের দায়িত্বরত নার্স রেশমি দাশ বলেন, ভিকটিমের শরীরে ধর্ষণের আলামত লক্ষ্য করা গেছে। তবে মেয়েটির প্রিয়ড চলছে, বিষয়টি পরিষ্কার নয়। ডাক্তারি পরীক্ষার পরে আসল বিষয় জানা যাবে।
ভিকটিম জানায়, সে টিউবওয়েলে পানি খেতে যায়। তার সাথে আরমান ত্রিপুরা ছিল। আরমানকে আহত করে শিমুল বড়ুয়া তাকে ধর্ষণ করেছে। আরমান ত্রিপুরা পার্শ্ববর্তী আলীকদম উপজেলার কুরুকপাতা ইউনিয়নের অভিরাম মেম্বার এর ছেলে।
আটক শিমুল বড়–য়া মালুমঘাট খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে কর্মচারী বলে দাবী করে বলে, সে বমু বিলছড়ি হেব্রন মিশনের হোস্টেলের খাওয়ার চাল নিয়ে এসেছিল। সে আরো বলে, আমি সিগারেট খেতে মিশনের পূর্ব পাশে গেলে সেখানে আরমান ত্রিপুরা নামে একজনকে মেয়েটির সাথে কুকর্ম করতে দেখি এবং মেয়েটির গায়ের কাপড় এক পাশে পড়ে থাকতে দেখি। সেখানে আরমানের সাথে আরো একজন ত্রিপুরা ছেলে ছিল। আমি মেয়েটির কাপড়চোপড় হাতে নিলে তারা প্রথমে আমার কাছে ঘটনা ধামাচাপা দিতে অনুরোধ করে। কিন্তু এরমধ্যে সেখানে পুলিশ হাজির হলে তারা উল্টো আমাকে ধর্ষক বলে ফাঁসিয়ে দেয়। ধর্ষক অন্য কেউ।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, ঘটনাস্থল চকরিয়া উপজেলায় পড়েছে। একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমরা এখানে এসেছিলাম। অনুষ্ঠান প্যান্ডেলের পিছনে শোরগোল শুনে এগিয়ে যায়। জনতার হামলা থেকে বাঁচাতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিমুল বড়ুয়া (২৫) নামে একজনকে আমরা আটক করে থানা নিয়ে আসি। তবে ভিকটিম দাবী করে সে তাকে ধর্ষণ করেছে। মিশু বড়ুয়া চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাট এলাকার আইয়ুব খানের ছেলে। আটক ব্যক্তি ও ঘটনার প্রত্যেক্ষদর্শী আরমান ত্রিপুরাকে চকরিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
হেব্রন মিশনের পরিচালক সুভাষ ত্রিপুরা বলেন, ঘটনাটি চরম আপত্তিকর ও ভীতিকর। মহিলা হোস্টেলে এমন ঘটনা আমাদের আতংকিত করেছে। আমাদের অন্যান্য শিশুরা ভয় পাচ্ছে। প্রকৃত দোষীর শাস্তি কামনা করছি। আমরা আইনীভাবে লড়বো।