কাজী মোশাররফ হোসেন, কাপ্তাইঃ-চন্দ্রঘোনা লিচুবাগানে প্রকাশ্যে একটি তেলের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল দোকানে ঢুকে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা নিয়ে গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৭টা ১৫ মিনিটের সময়। এই ঘটনায় লিচুবাগানের ব্যবসায়ী মহলে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে লিচুবাগানে কাপ্তাই সড়কের একেবারে পাশে ‘হাসান কোম্পানী’র তেলের দোকান অবস্থিত। এই সড়কে এবং ঘটনা স্থলের পাশে ভোর ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত লোক জনের চলাচল থাকে। এই অবস্থায় সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে দোকানে ডাকাতি হয়। দোকানে রক্ষিত সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে ডাকাত দলে ৮ সদস্য ছিলেন। তাদের কয়েকন জনের মুখে মাক্স (ধুলাবালি থেকে নাক মুখ রক্ষা করার জন্য মুখ্যে ব্যবহৃত) ছিল। ডাকাত দলের ২ সদস্য সড়কের দুই পাশে অবস্থান করছিল। তিনজন দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। বাকি তিন জনের দুই জন কলাপসিবল গেটের তালা ভাঙ্গার কাজে ব্যস্থ ছিল। অপর একজন তালা ভাঙ্গার কাজে ব্যস্থ থাকা দুই জনকে আড়াল করে দাঁড়িয়ে ছিল। ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্য এমনভাব দেখাচ্ছিল যেন তারা খুব স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। এবং তাদের দেখে কারো মনে কোন সন্দেহ হবারও সুযোগ ছিলনা। সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে তালা ভেঙ্গে দুই জন দোকানে ঢুকে ক্যাশ বাক্স থেকে টানা নিয়ে স্বাভাবিক গতিতে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।
সকাল ৮টার সময় দেকানের মালিক মোঃ হাসান তেলের দোকানে এসে দোকানের সামনের সার্টারের নিচের দিকের তালা ভাঙ্গা দেখতে পান। পরে তিনি দোকানে ঢুকে টাকা খোয়া যাবার বিষয়টি বুঝতে পারেন। মোঃ হাসান সওদাগর জানান আগের দিন দোকানে প্রায় ২ লাখ টাকার তেল বিক্রি হয়েছিল। রাতে বাড়ি যাবার সময় তিনি সব টাকা সাথে নিয়ে যান। খুচরা প্রায় ২০ হাজার টাকারমত দোকানের ক্যাশ বাক্সে ছিল। ঐ টাকা গুলোই খোয়া গেছে। এই ঘটনাকে তিনি প্রাকাশ্যে ডাকাতি বলে অবহিত করেন। বিষয়টি তিনি তাৎক্ষনিক লিচুবাগান ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ হারুন সওদাগরকে জানান। হারুন সওদাগর হাছান কোম্পানীর তেলের দোকান পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে সমিতির পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হবে বলে জানা গেছে। তবে এই সংবাদ লেখা পর্যন্ত হাসান সওদাগরের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ জানানো হয়নি।
এর আগেও এই তেলের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে হাসান সওদাগর জানান। প্রায় এক বছর আগে তাঁর দোকানে প্রায় এক সাথে ৫ জন লোক ঢুকে। সেই সময় তিনি একা দোকানে ছিলেন। আগত লোকদের কেউ দ্রুত বোতলে তেল দিতে বলেন। কেউ গ্যাসের চুলা দেখতে চান। কেউ সিলিন্ডার গ্যাসের চুলার দাম এবং বোতল দেখার কাজে তাকে ব্যস্ত রাখেন। এরই এক ফাঁকে একজন ক্যাশ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে পকেটে ভরে দ্রুত অটো রিক্সায় উঠে চট্টগ্রামের দিকে যাবার চেষ্টা করেন। অবশ্য তাৎক্ষনিক বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি দ্রুত দৌড়ে গিয়ে অটো রিক্সা থেকে টাকাসহ একজনকে আটকাতে সক্ষম হন।
হাসান কোম্পানীর পাশে অবস্থিত মোটর সাইকেল মেকানিক নেপাল দাশ জানান, শুক্রবার যেস্থানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। এই ঘটনারপর তিনিসহ সব দোকানী আতঙ্কে রয়েছেন বলেও নেপাল জানান। লিচুবাগান এলাকায় তিন শতাধিক ব্যাবসায়ী রয়েছেন। এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য তিনি ব্যবসায়ী সমিতিসহ পুলিশ প্রশাসনের কাছে আহবান জানান।