রাখাইন সম্প্রদায়ের ১২০টি পরিবার, ৩টি শ্মশান ও ৩টি বৌদ্ধ বিহার উচ্ছেদ হওয়ার আতংক

340

রাঙ্গামাটিঃ-কক্সবাজারে উপকুল সুরক্ষায় সুপার ডাইক নির্মাণের জন্য কক্সবাজার সদর উপজেলার ৬নং চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের বসবাসরত অসহায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি রাখাইন সম্প্রদায়ের বসত-ঘর, বৌদ্ধ মন্দির ও শ্মশান পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বেআইনীভাবে অধিগ্রহন করে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া স্থগিতের দাবীতে রাঙ্গামাটিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে রাখাইন সম্প্রদায়।
সোমবার (২০ জানুয়ারী) সকালে রাঙ্গামাটিতে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়ের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রাখাইন সম্প্রদায়ে উচিংছা রাখাইনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্যে রাখেন, রাঙ্গামাটি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এ কে এম মকছুদ আহম্মেদ, বাংলাদেশ রাখাইন স্টুডেন্ট এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মংচোয়াং অভি, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি রাঙ্গামাটি জেলার সভাপতি টুকু তালুকদার, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী ও উইভ এর নির্বাহী পরিচালক নাই উ প্রু মারমা প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার টেকসই উন্নয়ন ও উপকূল সুরক্ষার জন্য ১০০ শত বছরের “ডেলটা প্ল্যান” এর আওতাধীন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলীয় এলাকায় “সুপার ডাইক” নির্মাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের এই মহৎ উদ্যোগকে আমরা সম্মানের সাথে স্বাগত জানাই। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ও সুপার ডাইক নির্মান করা হলে কক্সবাজার জেলার চৌফলদন্ডীতে ৪০০ বছর ধরে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়ের ১২০টি পরিবার, ৩টি শ্মশান ও ৩টি বৌদ্ধ বিহার উচ্ছেদ হয়ে যাবে।
বক্তারা আরো বলেন, উক্ত সুরক্ষিত এক বিশাল জনগোষ্ঠী বা শান্তিপ্রিয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, গরিব, অসহায় রাখাইন সম্প্রদায়গণ ৬নং চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন হইতে বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বৌদ্ধ মন্দির ও শ্মশান সমূহও বিলুপ্ত হওয়ার পথে। যা মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসাবে সামিল হবে। কারণ আইন ও সংবিধান মানুষের সুরক্ষার জন্যই ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই উক্ত প্রকল্পের জন্য উচ্ছেদ প্রক্রিয়া স্থগিত করে সুরক্ষিত বেড়িবাঁধে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন সরকারি পরিত্যক্ত ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কক্সবাজার এর নিজস্ব মালিকানাধীন জমি সংরক্ষণ করে বিকল্প হিসেবে সুপার ডাইক নির্মাণ করা হলে আমরা রাখাইন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিলুপ্ত থেকে রক্ষা পেতে পারি। তাই সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবী জানাচ্ছি যে রাখাইন সম্প্রদায়ের যে স্থানে বেড়িবাঁধ ও সুপার ডাইক নির্মান করা হবে, সেখানে নির্মান না করে বিকল্প পরিকল্পনা গ্রহন করা হোক।